আ.লীগ আবারও ক্ষমতায় এলে গণতন্ত্র চিরতরে বিলীন হয়ে যাবে : মির্জা ফখরুল
আওয়ামী লীগ আবারও ক্ষমতায় আসলে গণতন্ত্র ও ভোটাধিকার চিরতরে বিলীন হয়ে যাবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। দেশের দ্রব্যমূল্যের পরিস্থিতি তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘এরা একটি অত্যাচারী সরকার। এই সরকারের হাতে মানুষের নিরাপত্তা নেই, গণতন্ত্র নিরাপদ নয়, বিশেষ করে মহিলাদের নিরাপত্তা নেই, শিশুদের নিরাপত্তা নেই।’
আজ শুক্রবার (২৯ সেপ্টেম্বর) বিকেলে এক মহিলা সমাবেশে এসব কথা বলেন মির্জা ফখরুল। একইসঙ্গে তিনি প্রত্যাশা করেন, দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে বিদেশে চিকিৎসার অনুমতি দেবে সরকার। পরিবারের পক্ষ থেকে খালেদা জিয়াকে বিদেশে পাঠানোর আবেদন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাছে প্রদান করেছে উল্লেখ করে তিনি এই আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের উদ্যোগে সরকারের পদত্যাগ, নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকার প্রতিষ্ঠা ও বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি ও বিদেশে উন্নত চিকিৎসার দাবিতে এই ‘মহিলা সমাবেশ’ হয়।
বাংলাদেশের সংসদীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় বেগম খালেদা জিয়ার অবদানের কথা তুলে ধরে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমাদের দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া সারাজীবন গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম করেছেন, লড়াই করেছেন। তাকে মিথ্যা মামলায় সাজা দিয়ে কারাগারে আটক রেখে, গৃহবন্দি রেখে, অসুস্থ অবস্থায় মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিচ্ছে।’ বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘একটি মাত্র কারণ যে, তারা (সরকার) জানে, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া তিনি বাইরে থাকেন তাহলে জনগণের যে স্রোত তা তারা বন্ধ করতে পারবে না এবং তাদের ক্ষমতায় থাকা কঠিন হয়ে যাবে।’
দেশের দ্রব্যমূল্যের পরিস্থিতি তুলে ধরে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘এরা একটি অত্যাচারী সরকার। এই সরকারের হাতে মানুষের নিরাপত্তা নেই, গণতন্ত্র নিরাপদ নয়, বিশেষ করে মহিলাদের নিরাপত্তা নেই, শিশুদের নিরাপত্তা নেই।’
মির্জা ফখরুল অভিযোগ করে বলেন, ‘এই আওয়ামী লীগ ও তাদের নেত্রী শেখ হাসিনা এতো বেশি অহংকারী হয়ে উঠেছেন, এতো বেশি প্রতিহিংসাপরায়ণ হয়েছেন যে, দেশের মানুষের অবস্থা চিন্তা করছেন না। সেই কারণে আজকে এককভাবে সমগ্র দেশের সব রাজনৈতিক দলগুলো বলছে যে, আমরা একটা নিরপেক্ষ নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন চাই। তখন সেটা তিনি উড়িয়ে দিয়ে বলেন আবারও সেই পুরনো কথা-সংবিধানের অধীনে নির্বাচন হবে। এই সংবিধানের অধীনে নির্বাচন হতে পারে না। কারণ, আপনারা ক্ষমতায় থাকলে কোনোদিনই নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হতে পারবে না। আমার মা-বোনেরা ভোট দিতে পারে না। গত দুটি নির্বাচনে ভোট দিতে পারেননি তারা, তাদেরকে ভোট কেন্দ্র থেকে বিতাড়িত করা হয়েছে।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এই সরকার যদি আবার ক্ষমতায় আসে তাহলে নারীসহ কোনো মানুষেরই কোনো নিরাপত্তা থাকবে না, আমরা আমাদের স্বাধীনতাকে হারাব, আমাদের সার্বভৌমত্বকে হারাব, আমাদের গণতন্ত্র চিরতরে চলে যাবে, আমাদের কোনো অধিকার আর থাকবে না।’
বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘তাই আসুন আগামী দিনগুলোতে আমরা নারী-পুরুষের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় ঐক্য গড়ে তুলি, সেই ঐক্যের মধ্য দিয়ে আমরা সরকারকে বাধ্য করব পদত্যাগ করতে, সংসদ বিলুপ্ত করতে এবং নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নতুন নির্বাচন কমিশনের তত্ত্বাবধানে নতুন নির্বাচন দিতে। সেখানেই এই রাজনৈতিক সমাধানে একমাত্র পথ।’
মহিলা দলের সভানেত্রী আফরোজা আব্বাসের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক সুলতানা আহমেদের সঞ্চালনায় সমাবেশে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আফরোজা খানম রীতা, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, মহিলা দলের নাজমুন নাহার বেবী, নেওয়াজ হালিমা আরলি, ইয়াসমীন আরা হক, হেলেন জেরিন খান, নিলোফার চৌধুরী মনি, শাম্মী আখতার, অর্পনা রায় দাশ, শাহানা আখতার শানু, নায়েবা ইউসুফ, রুমা আখতারসহ বিভিন্ন বিভাগ ও জেলা থেকে আসা নেতৃ্বৃন্দ বক্তব্য রাখেন। সমাবেশে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আবদুল মঈন খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আব্দুস সালাম প্রমুখ নেতৃ্বৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।