ভোটের অধিকার সম্পর্কে মানুষ এখন অনেক সচেতন : প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, তার সরকার ভোটাধিকারের বিষয়ে সম্ভাব্য সব উপায়ে মানুষকে সচেতন করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ডিসিতে ভয়েস অব আমেরিকাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি এ কথা বলেন। সাক্ষাৎকারটি আজ শনিবার (৩০ সেপ্টেম্বর) সম্প্রচারিত হয়।
সাক্ষাৎকারে ভয়েস অব আমেরিকার সাংবাদিক শতরূপা বড়ুয়ার এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমার এটাই প্রশ্ন যে, হঠাৎ কথা নাই, বার্তা নাই, তারা (যুক্তরাষ্ট্র) আমাদের ওপর ভিসা স্যাংশন দিতে চাচ্ছে কী কারণে? আর মানবাধিকারের কথা যদি বলে বা ভোটের অধিকারের কথা যদি বলে, আমরা আওয়ামী লীগ, আমরাই তো এ দেশের মানুষের, আমার বাংলাদেশের মানুষের ভোট দেওয়ার অধিকার নিয়ে সংগ্রাম করেছি। আমাদের কত মানুষ রক্ত দিয়েছে এই ভোটের অধিকার আদায় করার জন্য। অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচন যাতে হয়, তার জন্য যত রকমের সংস্কার দরকার, সেটা আমরাই তো করেছি। আজকে ছবিসহ ভোটার তালিকা, স্বচ্ছ ব্যালট বাক্স, মানুষকে ভোটের অধিকার সম্পর্কে সচেতন করা। কারণ ‘আমার ভোট আমি দেব, যাকে খুশি তাকে দেব’ এই স্লোগান তো আমার দেওয়া। আমি এভাবে মানুষকে উদ্বুদ্ধ করেছি। কারণ আমাদের দেশে বেশির ভাগ সময় মিলিটারি ডিক্টেটররা দেশ শাসন করেছে। মানুষের আর ভোট দেওয়া লাগেনি। তারা ভোটের বাক্স ভরে নিয়ে জাস্ট রেজাল্ট ঘোষণা দিয়েছে। এরই প্রতিবাদে আমাদের আন্দোলন, সংগ্রাম করে আজকে আমরা নির্বাচন সুষ্ঠু পরিবেশে নিয়ে আসতে পেরেছি। এখন মানুষ তার ভোটের অধিকার সম্পর্কে অনেক সচেতন।’
সাক্ষাৎকারে সরকারপ্রধান ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর যতগুলো নির্বাচন হয়েছে, জাতীয় কিংবা স্থানীয় সরকার নির্বাচন, প্রত্যেকটা সুষ্ঠুভাবে হয়েছে বলে দাবি করেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এসব নির্বাচনে মানুষ তাদের ভোট দিয়েছে স্বতঃস্ফূর্তভাবে। এই নির্বাচনগুলো নিয়ে অনেকেই প্রশ্ন তোলার চেষ্টা করেছে, কিন্তু বাস্তবতা হলো বাংলাদেশের মানুষ তার ভোটের অধিকার নিয়ে সবসময় সচেতন। কেউ ভোট চুরি করলে তাদের ক্ষমতায় থাকতে দেয় না আমার দেশের মানুষ।’
বিভিন্ন উদাহরণ তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ভোট চুরি করেছিলেন, তিনি কিন্তু দেড় মাসও টিকতে পারেননি। ওই বছরের ৩০ মার্চ জনগণের রুদ্র রোষে পড়ে পদত্যাগে বাধ্য হন তিনি। আবার ২০০৬ সালে এক কোটি ২৩ লাখ ভুয়া ভোটার দিয়ে ভোটার তালিকা করেছিলেন। সেই ভোটার তালিকা দিয়ে নির্বাচন করে তিনি যখন সরকার গঠনের ঘোষণা দিলেন, এরপর জরুরি অবস্থা জারি করা হলো। সেই নির্বাচন বাতিল হয়ে গেল। কাজেই আমাদের দেশের মানুষ কিন্তু এখন ভোট সম্পর্কে যথেষ্ট সচেতন। কাজেই একটা নির্বাচন অবস্থা সুষ্ঠু হবে, এটা তো আমাদেরই দাবি ছিল। আন্দোলন করে আমরা সেটাই প্রতিষ্ঠিত করেছি। আমাদের দেশের মানুষের যে অধিকার, তাদের ভোটের অধিকার, ভাতের অধিকার, তাদের বেঁচে থাকার অধিকার, তাদের শিক্ষা-দীক্ষার অধিকারসহ সব মৌলিক অধিকার আমরা নিশ্চিত করেছি।’
৩৫ মিনিটের সাক্ষাৎকারে প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশে অবাধ, নিরপেক্ষ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন নিশ্চিতে জাতীয় নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে করতে বিরোধী দলগুলোর দাবিকে নাকচ করে দেন। তিনি বলেন, এ ব্যবস্থায় ফেরত যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই।