তবে কি ফাঁসাতে গিয়ে ফেঁসে যাচ্ছেন মাদক কর্মকর্তা!
দিনটি ছিল ২০২২ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি। খিলক্ষেত এলাকায় স্বপ্না নামে এক নারীর বাসায় অভিযান চালায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের বিভাগীয় পরিদর্শক রোকেয়া আক্তার, সহকারী উপপরিদর্শক মোহাম্মদ জিয়াউর রহমান ও রুবেল হোসেন, সিপাহী শরিফুল ইসলামসহ তিনজন পুলিশ ফোর্সের সমন্বয়ে গঠিত একটি দল। তাদের দাবি, ওই নারীর দেহ ও শয়নকক্ষ তল্লাশি করে এক হাজার পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়েছে।
ঘটনাস্থলে জব্দ তালিকা প্রস্তুত করে সাক্ষীদের স্বাক্ষরও নেওয়া হয়। এই ঘটনায় স্বপ্নার বিরুদ্ধে মামলা করেন মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের গুলশান সার্কেলের উপপরিদর্শক শেখ মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন। পরে, গিয়ে সেই মামলার তদন্তভার পড়ে অধিদপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক আহসানুর রহমানের ওপর। তিনি সাক্ষীদের জবানবন্দি নেন। তবে, জবানবন্দিতে ঘটনার কিছুই জানেন না বলে লিখিতভাবে জানান সাক্ষীরা। পরে, মামলা থেকে স্বপ্নাকে অব্যাহতি দেওয়ার সুপারিশ করেন এই কর্মকর্তা।
স্বপ্নার বিরুদ্ধে করা মামলার অভিযোগ থেকে এসব তথ্য জানা যায়। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী স্বপ্না আক্তারকে মামলা থেকে অব্যাহতি দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে মিথ্যা অভিযোগে মামলা করায় অধিদপ্তরের গুলশান সার্কেলের উপপরিদর্শক শেখ মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেনের বিরুদ্ধে মামলা করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
অধিদপ্তরকে আগামী সাত কর্মদিবসের মধ্যে মামলা করে আদালতকে অবগত করার নির্দেশ দিয়েছেন। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর উত্তরের প্রসিকিউটর নজরুল ইসলাম আজ সোমবার (৯ অক্টোবর) আদালতের তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, ‘গতকাল রোববার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোশাররফ হোসেনের আদালত এ আদেশ দেন।’
নজরুল ইসলাম আরও বলেন, ‘স্বপ্না আক্তারকে মামলার দায় থেকে অব্যাহতির সুপারিশ করা তদন্ত কর্মকর্তা অধিদপ্তরের আহসানুর রহমানকে মামলাটি দায়েরের নির্দেশ দিয়ে সিআইডিকে মামলাটি তদন্তের নির্দেশ দেন আদালত।’
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের অধিদপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক আহসানুর রহমানের প্রতিবেদন বলছে, ২০২২ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যা ৭টা থেকে রাত সাড়ে ৮টার মধ্যে পাঁচজন অধিদপ্তরের স্টাফ ও দুজন পুলিশ ফোর্স নিয়ে অভিযান পরিচালিত হয়নি। কথিত ঘটনাস্থল ভুল, রোকেয়া আক্তারের মাধ্যমে মহিলা আসামি স্বপ্না আক্তারের দেহ ও তার কক্ষ তল্লাশি হয়নি। এমনকি, দলটিতে কোনো মহিলা সদস্য ছিল না। কথিত অভিযানের সময়ে স্বপ্না পার্শ্ববর্তী বাসায় টিউশনি করাচ্ছিলেন। কথিত জব্দ তালিকার সাক্ষীদের সামনে ইয়াবা গণনা বা ওজন করা হয়নি। ঘটনাস্থলে সম্পূর্ণরূপে জব্দ তালিকা প্রস্তুত করা হয়নি।