খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার অবনতির আশঙ্কা মেডিকেল বোর্ডের
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার অবনতির আশঙ্কা করছে মেডিকেল বোর্ড। কেবিনে রেখেই সাবেক প্রধানমন্ত্রীর চিকিৎসা চলছে। কেবিনেই জরুরি সব সাপোর্ট প্রস্তুত রাখা হয়েছে। যখন যা প্রয়োজন তাৎক্ষণিকভাবে তা সরবরাহ করা হচ্ছে।
খালেদা জিয়ার মেডিকেল বোর্ডের একজন সদস্য আজ বুধবার (১১ অক্টোবর) রাতে এসব তথ্য জানিয়েছেন।
মেডিকেল বোর্ডের ওই সদস্য আরও বলেন, ‘গতকাল মঙ্গলবার অল্প সময়ের জন্য খালেদা জিয়াকে সিসিইউতে নেওয়া হয়। স্বাস্থ্যের কিছু পরীক্ষা শেষে আবার কেবিনে নিয়ে আসা হয়। এখন অবস্থা স্থিতিশীল আছে। তবে, বোর্ড তার শারীরিক অবস্থা নিয়ে উদ্বিগ্ন। কারণ, যেকোনো সময় পরিস্থিতি ফের অবনতি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।’
এক প্রশ্নের জবাবে এই চিকিৎসক আরও বলেন, ‘বিএনপি চেয়ারপারসন আমাদের সঙ্গে কথা বলেন। চিকিৎসা দিতে সহযোগিতা করেন। তবে, শারীরিক দুর্বলতা থাকায় অনেক ওষুধ খেতে চান না। আর উনাকে সবসময় স্যালাইন ও ইনজেকশনের ওপর থাকতে হচ্ছে। দুদিন আগে রক্তের হিমোগ্লোবিনও কিছুটা উন্নতি হলেও ফের কিছুটা কমছে। ইনসুলিন দিয়ে ডায়েবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করা হচ্ছে।’
মেডিকেল বোর্ডের এই সদস্য জানান, নানা অ্যান্টিবায়োটিকের মাধ্যমে লিভারের সমস্যা কিছুটা নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা চলছে। তবে, লিভার প্রতিস্থাপন ছাড়া স্থায়ী কোনো সমাধান নেই। স্বাস্থ্যের বিভিন্ন রিপোর্ট দেখে বোর্ড বৈঠক করে চিকিৎসায় পরিবর্তন আনে প্রতিনিয়ত। কিছু রিপোর্ট একাধিক হাসপাতালে টেস্ট করা হচ্ছে। বোর্ড সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছে।
লিভারের পাশাপাশি তার কিডনি জটিলতা ও ডায়াবেটিসের মাত্রাও বাড়ছে। কিডনির ক্রিয়েটিনিন মাঝে মধ্যে বর্ডার লাইনের কাছাকাছি চলে যাচ্ছে। ফলে, একটিকে কমাতে গেলে আরেকটিতে সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে। বোর্ড জরুরি ভিত্তিতে তার লিভার প্রতিস্থাপনে জোর দিচ্ছেন, যা বাংলাদেশে সম্ভব নয়। এসবের বিস্তারিত মেডিকেল বোর্ড সংবাদ সম্মেলনে তুলে ধরেছেন।
বিএনপি চেয়ারপারসনের শয্যা পাশে এখনও রয়েছেন তার ছোট পুত্রবধূ শর্মিলা রহমান সিঁথি। তিনি গুলশানের বাসা থেকে শাশুড়ির জন্য খাবার রান্না করে নিয়ে যান। ৭৯ বছর বয়সী খালেদা জিয়া কিডনি, ফুসফুস, হৃদরোগ, লিভার জটিলতায় ভুগছেন।
গত ৯ আগস্ট রাতে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য খালেদা জিয়াকে এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এভারকেয়ার হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে ১৯ সদস্যের একটি মেডিকেল বোর্ড তাকে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রেখে চিকিৎসা দিচ্ছে।