বিনামূল্যে জরায়ুমুখে ক্যানসারের টিকাদান শুরু ১৮ অক্টোবর
জরায়ুমুখে ক্যানসার প্রতিরোধে টিকাদান কর্মসূচি শুরু করতে যাচ্ছে সরকার। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, ইউনিসেফ ও দ্যা ভ্যাকসিন অ্যালায়েন্স—গ্যাভির সহায়তায় আগামী ১৫ অক্টোবর ঢাকা বিভাগে শুরু হবে এই টিকাদান। পর্যায়ক্রমে তিন ধাপে বাংলাদেশের মোট আটটি বিভাগে বাস্তবায়ন করা হবে কার্যক্রম। টিকা গ্রহণে উপযুক্ত নারী নির্ধারিত ওয়েবসাইটে নিবন্ধনের মাধ্যমে টিকা নিতে পারবে। পঞ্চম থেকে নবম শ্রেণিতে পড়ুয়া ছাত্রী এবং স্কুলে পড়ে না এমন ১০ থেকে ১৪ বছর বয়সী শিশুরাও নিতে পারবে এই টিকা।
আজ বৃহস্পতিবার (১২ অক্টোবর) ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) ডা. ফজলে শামসুল কবির এই তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি আরও জানিয়েছেন জরায়ুমুখে ক্যানসার প্রতিরোধের ওপর গুরুত্বারোপ করে টিকাদান কর্মসূচিতে (ইপিআই) এইচপিভি টিকা সংযোজন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার, যা বাস্তবায়নে প্রথম ধাপে ঢাকা বিভাগের সব জেলা, উপজেলা, সিটি করপোরেশন এবং পৌরসভায় শুরু হতে চলেছে ‘এইচপিভি টিকাদান ২০২৩ ক্যাম্পেইন’।
ডা. ফজলে শামসুল কবির বলেন, ‘বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও), ইউনিসেফ ও দ্যা ভ্যাকসিন অ্যালায়েন্স গ্যাভির সহায়তায় ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন মেয়েদের জরায়ুমুখ ক্যানসার প্রতিরোধে এইচপিভি টিকাদান কর্মসূচি শুরু করছে।’
ডা. ফজলে শামসুল কবির আরও বলেন, ‘বাংলাদেশ সরকার জরায়ুমুখ ক্যানসারের অন্যতম কারণ হিউম্যান প্যাপিলোমাভাইরাসের (এইচপিভি) প্রতিষেধক টিকাদান কর্মসূচি শুরু করেছে, যা একটি যুগান্তকারী উদ্যোগ। এই কর্মসূচির লক্ষ্য হলো—দেশের লাখ লাখ মেয়েকে জরায়ুমুখ ক্যানসার থেকে রক্ষার মাধ্যমে তাদের স্বাস্থ্য ও ভবিষ্যৎ সুরক্ষিত করা। প্রতি বছর হাজার হাজার নারীর জীবন কেড়ে নেয় এই জরায়ুমুখ ক্যানসার।’
সিটি করপোরেশন সূত্রে জানা গেছে, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, ইউনিসেফ ও দ্যা ভ্যাকসিন অ্যালায়েন্স—গ্যাভির সহায়তায় এই টিকাদান কার্যক্রম ১৫ অক্টোবর প্রথমে ঢাকা বিভাগে শুরু হবে। পরে পর্যায়ক্রমে তিন ধাপে বাংলাদেশের মোট আটটি বিভাগে বাস্তবায়ন করা হবে। এই কর্মসূচির আওতায় পঞ্চম থেকে নবম শ্রেণিতে পড়ুয়া ছাত্রী এবং স্কুলে পড়ে না এমন ১০ থেকে ১৪ বছর বয়সী শিশুসহ ঢাকা বিভাগে এক কোটিরও বেশি এবং ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে এক লাখ ৮৯ হাজার ৪৫১ জন মেয়েকে বিনামূল্যে এই এইচপিভি টিকা প্রদান করা হবে।
প্রথম পর্যায়ে, মোট ১৮ দিন এই টিকাদান কর্মসূচি চলবে। তার মধ্যে প্রথম ১০ দিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ও স্থায়ী কেন্দ্রগুলোতে টিকাদান কার্যক্রম চলবে। পরবর্তী আট দিন নিয়মিত ইপিআই টিকাদান কেন্দ্রে ও স্থায়ী কেন্দ্রের মাধ্যমে টিকা দেওয়া হবে। টিকা গ্রহণে উপযুক্ত মেয়েরা Vaxepi অ্যাপ অথবা www.vaxepi.gov.bd ওয়েবসাইটে নিবন্ধনের মাধ্যমে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে প্রায় ১২০০ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এবং ৬৮০টি মনোনীত টিকাদান কেন্দ্রে এইচপিভি টিকা নিতে পারবে। ২০২৪ সালের মধ্যে পর্যায়ক্রমে দেশের অন্য বিভাগের মেয়েদের এই টিকা দেওয়া হবে।