টেকসই বিপণনের আহ্বানে ঢাবিতে বাংলাদেশ মার্কেটিং ডে উদযাপন
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) ষষ্ঠবারের মত চলছে বাংলাদেশ মার্কেটিং ডে। আজ শুক্রবার (১৩ অক্টোবর) বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র শিক্ষক কেন্দ্রে মার্কেটার্স ইনস্টিটিউট বাংলাদেশ (এমআইবি)-এর উদ্যোগে দুই দিনের সম্মেলনের সমাপনী পর্বে অংশ নেন শিক্ষক, মার্কেটিং পেশাজীবি এবং ছাত্ররা। এদিন সকালে একটি আলোচনা সভার মাধ্যমে এর উদ্বোধন করা হয়।
সভায় পরিবর্তিত বিশ্ব অর্থনীতির সঙ্গে খাপ খাইয়ে ব্যবসায় প্রবৃদ্ধি অর্জনে টেকসই বিপণনে জোর দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়। সভায় এমআইবিয়ের সভাপতি অধ্যাপক মীজানুর রহমানের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান।
পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ‘ব্যবসায় প্রবৃদ্ধি অর্জনে টেকসই বিপণনের বিকল্প নেই। সেক্ষেত্রে প্রয়োজন দক্ষ মানবসম্পদ উন্নয়ন। ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ উন্নত দেশে পরিণত হবে। ইতিমধ্যে বাংলাদেশ চতুর্থ শিল্প বিপ্লবে প্রবেশ করেছে। সেক্ষেত্রে দক্ষ মানবসম্পদ গঠন করতে এমআইবি সুচিন্তিত ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। এটা অবশ্যই প্রশংসার দাবি রাখে।’
এম এ মান্নান তাঁর বক্তব্যে দেশের মার্কেটিংয়ে সম্পৃক্ত সবাইকে বাজার সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা রাখা, সাস্টেনেবল ডেভেলপমেন্ট গোল, মিলেনিয়াম ডেভেলপমেন্ট গোল, দেশের সার্বিক উন্নয়ন ও দেশের স্বনির্ভরতাকে গুরুত্ব দেওয়ার আহ্বান জানান।
এমআইবিয়ের সভাপতি অধ্যাপক মীজানুর রহমান বলেন, ‘প্রযুক্তির দ্রুত পরিবর্তন, বিশ্বায়ন ও অধিকতর সামাজিক দায়বদ্ধতার কারণে টেকসই বাজারজাতকরণ ভবিষ্যতে আরও বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে। বাজারে প্রতিযোগিতা আরও তীব্রতর হবে। তারপরও মুনাফাই অধিক গুরুত্বপূর্ণ থাকবে। সামাজিক দায়বদ্ধতার বিষয়গুলো অবহেলা করলে বৈষম্য এবং পরিবেশ দূষণ কমানো যাবে না। একটি ভালো বিশ্বের জন্য আমাদের সামাজিক দায়বদ্ধত্বাসম্পন্ন বাজেতকরণের দিকে মনোযোগী হতে হবে। সেটাই হবে টেকসই বাজারজাতকরণ।’
মীজানুর রহমান আরও বলেন, ‘আমাদের প্রতিপাদ্য হচ্ছে সাস্টেনেবল মার্কেটিং। এজন্য প্রযুক্তির কথা আপনা-আপনিই চলে আসে। আমাদের অন্যতম একটা গুরুত্বপূর্ণ কাজ হবে নতুন প্রযুক্তির সঙ্গে পরিচিত হওয়া। প্রযুক্তিকে ভয় পাওয়া যাবেনা। এই ভেবে যে, কীভাবে কি করব। বরং নিজেকেই প্রযুক্তি হয়ে যেতে হবে। প্রযুক্তি হওয়া ছাড়া উপায় নেই। তবে কিছু কাজ মানুষকেই সৃজনশীল হয়ে করতে হবে। যেমন, ডিমান্ড ম্যানেজমেন্ট। এটা প্রযুক্তি দ্বারা সম্ভব নয়। আরেকটি বিষয়, যেটা প্রযুক্তি করতে পারবেনা। সেটা হলো ডিফারেন্স ইস্যু। এটা মানুষকেই ধরতে হবে। সর্বশেষ মানুষের জন্য প্রয়োজন হবে রিলেশনশিপ ম্যানেজমেন্ট। তাহলে মার্কেটিং টেকসই করবে। নতুবা সম্ভব নয়।’
এমআইবিয়ের সাধারণ সম্পাদক শরীফুল ইসলাম দুলু স্বাগত বক্তব্যে বলেন, ‘মার্কেটিং পেশাজীবীদের পেশাগত দক্ষতা বাড়ানোর মাধ্যমে ভোক্তাদের সর্বাধিক সন্তুষ্টি প্রদানের লক্ষ্যে মার্কেটার্স ইনস্টিটিউট বাংলাদেশ ২০১৮ সাল থেকে দিবসটি উদযাপন করে আসছে।’
এশিয়ান মার্কেটিং ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক আশরাফ উদ্দিন তাজ বলেন, ‘বাংলাদেশে মার্কেটিংয়ের সেলস সেক্টরে ট্যালেন্ট পাইপলাইন উন্নত করতে হবে। এই বিষয়ে আমাদের লিডারশিপ জিনিসটার প্রতি গুরুত্ব দেওয়া উচিত। যদি আমরা ডিজিটাল মার্কেটিং স্কিল ডেভেলপমেন্ট করতে না পারি তাহলে আমরা সাসটেইন করতে পারবো না। আমরা কারিকুলামে পুঁথিগত বিদ্যা দিতে পারছি কি-না, করপোরেট গ্রহণ করছে কি-না এবং নিজেদের তৈরি করে কনফিডেন্স তৈরি করতে পারছি কি-না সেটা খেয়াল রাখতে হবে। বিজনেসে টেকনোলজি এবং ডাটা সায়েন্সকেও গুরুত্ব দিতে হবে।’
কেক কাটা, র্যালি, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানসহ নানাবিধ বর্ণাঢ্য কর্মসূচির মধ্য দিয়ে দিনব্যাপী অনুষ্ঠানটি উদযাপিত হচ্ছে। অনুষ্ঠানের অংশ হিসেবে গত ১২ অক্টোবর বিশ্ববিদ্যালয় ও করপোরেট হাউজে আয়োজিত হয় প্রি-মার্কেটিং ডে। পুরো আয়োজনের পাবলিক রিলেশন্সের দায়িত্বে ছিল ব্যাকপেইজ পি আর।