শ্বশুরের বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগে সংবাদ সম্মেলন
গোপালগঞ্জে শ্বশুরের বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগে জামাতাসহ কয়েকজন ভুক্তভোগী সংবাদ সম্মেলন করেছেন। আজ শুক্রবার (১৩ অক্টোবর) দুপুরে জেলা রিপোর্টার্স ফোরামের হলরুমে এ সংবাদ সম্মেলন করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে জামাতা মো. রুবেল শেখ বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যায়নকালে সদর উপজেলার দেবাসুরের মনসুর মোল্লার ছেলে রিপন মোল্লা ওরফে লিটন ও তাঁর স্ত্রী কলি বেগমের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক গড়ে ওঠে। সেই সুবাদে ২০২২ সালের ১০ জুন তাঁদের এক মাত্র মেয়ে অনন্যা আফরিনের সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়। বিয়ের চার মাস পর তিনি জানতে পারেন তাঁর স্ত্রীর আগে বিয়ে হয়েছিল। সেই স্বামীর (মোরশেদ শেখ) কাছ থেকে একটি ব্ল্যাংক চেক চুরি করে নিয়ে এনআইঅ্যাক্টে আদালতে মামলা দিয়ে ১৫ লাখ টাকা হাতিয়ে নেন। ২০১৯ সালে ৭ এপ্রিল সদর উপজেলার উলপুর গ্রামের জিন্নাত আলী শেখের ছেলে মোরশেদ শেখের সঙ্গে তাঁর প্রথম বিয়ে হয়।’
লিখিত বক্তব্যে মো. রুবেল শেখ আরও বলেন, ‘একই ভাবে আমার কাছ থেকেও তার মেয়ে অনন্যা আফরিনকে দিয়ে আমার চেক বই থেকে স্বাক্ষর করা চেক চুরি করিয়ে নিয়ে গত ২৪ সেপ্টেম্বর ১৫ লাখ টাকা লিখে এনআইঅ্যাক্টে মামলা করেন।’
সংবাদ সম্মেলনে এ ছাড়াও ভুক্তভোগী বিরেন বিশ্বাস ও তানিয়া বেগমসহ অনেকে তাদের কাছ থেকে রিপন মোল্লা ওরফে লিটনের মেয়ের নামে করা ‘অনন্যা সার্বিক উন্নয়ন প্রকল্প’ নামে একটি মাল্টিপারপাসের ঋণ দেওয়ার কথা বলে ফাঁকা চেক ও স্ট্যাম্প নিয়ে একই কায়দায় টাকা হাতিয়ে নেওয়ার জন্য মামলা করেছেন বলে জানান।
সদর থানা পুলিশ গত ২ মে রাত ৮টার দিকে শহরের বিসিক এলাকায় অভিযান চালিয়ে এক হাজার টাকার ছয়টি, ৫০০ টাকার আটটি এবং দুইশ টাকার ছয়টি জাল নোটসহ রিপন মোল্লাকে গ্রেপ্তার করে। এ ঘটনায় রিপন মোল্লার বিরুদ্ধে সদর থানায় একটি মামলা করা হয়। এ মামলায় রিপন মোল্লা দীর্ঘদিন জেলা হাজতে থাকেন। এর আগে ২০২২ সালের ২৫ অক্টোবর গোপালগঞ্জ স্বর্ণপট্টির সাধন বাকচীর স্বর্ণের দোকান থেকে স্ত্রী কলি বেগম ও মেয়ে অনন্যা আফরিনকে নিয়ে রিপন মোল্লা কয়েক ভরি স্বর্ণালংকার কেনার কথা বলে বাসায় দেখাতে মেয়ে ও স্ত্রীকে দিয়ে পাঠান এবং তিনি দোকানে বসে থাকেন। কিন্তু কিছু সময় পর প্রসাব করার কথা বলে কৌশলে দোকান থেকে পালিয়ে যান। পরে সেই স্বর্ণালংকার ফেরত না দেওয়ায় দোকানের মালিক সাধন বাকচী বাদী হয়ে তাঁদের তিনজনের বিরুদ্ধে একটি মামলা করেন।
রিপন মোল্লার বিরুদ্ধে বিভিন্ন ঘটনায় একাধিক মামলা চলমান রয়েছে বলে সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করা হয়।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত রিপন মোল্লা বলেন, ‘আমার মেয়ে জামাই মো. রুবেল শেখ বাড়ী করার জন্য এবং চাকরির কথা বলে ১৫ লাখ টাকা নিয়েছিল। সে আমার মেয়েকে তার কাছে রাখে না, তাই আমি জামাইকে দেওয়া টাকার জন্য মামলা করেছি। আর অন্যদের সঙ্গে যে ঝামেলা ছিল তা মিটিয়ে ফেলেছি।’
বিভিন্ন মামলা প্রসঙ্গে জানতে চাইলে রিপন মোল্লা জানান, ওই সব মামলায় তিনি এখন জামিনে রয়েছেন।
তবে, জামাই রুবেল শেখ তার কাছ থেকে টাকা নেওয়ার কথা অস্বীকার করে বলেন, ‘আমার শ্বশুর ও শাশুড়ি বিভিন্ন মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করে চলেছেন। শ্বশুরকে জেল থেকে জামিনে বের করার জন্য শাশুড়ি আমার কাছ থেকে ৮৫ হাজার টাকা ধার নেন। পুনরায় টাকা চাইলে আমি দিতে অস্বীকার করি। তখন মেয়েকে দিয়ে আমার বাসা থেকে চেক চুরি করিয়ে নিয়ে আমার নামে করেছেন।