তফসিল ঘোষণার পর ঘুম হারাম হয়ে যাবে : সিইসি
প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেছেন, নির্বাচন জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্য হতে হবে। গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের হওয়ার অর্থ নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হয়েছে। নির্বাচন আয়োজন করা কঠিন কর্মযজ্ঞ। খুব সহজ নয়। চাইলাম হয়ে গেল, এরকম নয়। তফসিল ঘোষণার পর অনেকটা ঘুমই হারাম হয়ে যাবে।
আজ শনিবার (১৪ অক্টোবর) সকালে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচনি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে নির্বাচন ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন সিইসি।
অনুষ্ঠানে দেশের চারটি বিভাগ থেকে অংশ নেন বিভাগীয় কমিশনার, পুলিশ কমিশনার, পুলিশের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি), পুলিশ সুপার (এসপি) ও নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের আঞ্চলিক ও জেলা নির্বাচন কর্মকর্তারা।
কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, ‘সিইসি হিসেবে অনুরোধ থাকবে, অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে নির্বাচনটা ফেয়ার (স্বচ্ছ) হয়েছে, এটা জনগণকে দেখতে হবে। জনগণকে দেখতে হবে, ভোটাররা নির্বিঘ্নে ভোটকেন্দ্রে গিয়ে ভোট দিতে পেরেছেন। এটুকু যদি আমরা জনগণকে দেখাতে পারি, তাহলে কে নির্বাচনে এলো, কে এলো না—জনগণ যদি আসেন, ভোটাররা যদি আসেন, তারা যদি ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন, তাহলে নির্বাচনে একটা বড় সফলতা আসবে।’
অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়া অতিথিদের উদ্দেশে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) বলেন, ‘আপনাদের যে গুরুত্ব প্রশাসনে বা সরকারে এবং পুলিশ ও নির্বাহী প্রশাসনের যে ভূমিকা ও গুরুত্ব, এটা অপরিসীম। যখন আমরা সরকার বলি, সরকার বলতে আমরা এসপি ও ডিসিকেই বুঝি, ছোটবেলা থেকেই, শৈশব থেকেই। ছোট্ট যে সরকারটা পড়ে আছে—কেবিনেট (মন্ত্রিসভা), ওটার সঙ্গে আমাদের জনগণের সংশ্রব ওভাবে হয় না। কাজেই আপনাদের চিত্তে ধারণ করতে হবে, আপনারা সরকারকে ধারণ করছেন। আপনারা সরকারি কর্মকর্তা, প্রজাতন্ত্রের কর্মকর্তা। এটাও মস্তিস্কে ধারণ করতে হবে, এত গুরুত্বপূর্ণ পদে অধিষ্ঠিত হওয়া আমি কেবল ভাগ্যের কথা বলব না, আপনাদের গুণের ব্যাপার। আপনারা কোয়ালিফাই করে এই দায়িত্ব পেয়েছেন। এটা অহংকার করার বিষয় নয়। সন্তুষ্টি প্রকাশ করার বিষয়। কারণ, ইউ হ্যাভ টু বি ইকুয়াল টু দ্য রেসপন্সিবিলিটি...।’
কাজী হাবিবুল আউয়াল আরও বলেন, ‘নির্বাচন খুব ঘনিয়ে এসেছে। এতে সন্দেহ নেই। নির্বাচন আয়োজন করা কঠিন কর্মযজ্ঞ। খুব সহজ নয়। চাইলাম হয়ে গেল, এরকম নয়। আপনারা যারা জেলা প্রশাসক (ডিসি), পুলিশ সুপার (এসপি) এবং আপনাদের সহকর্মীদের উদয়াস্ত পরিশ্রম করতে হবে। তফসিল ঘোষণার পর অনেকটা ঘুমই হারাম হয়ে যাবে। আমাদেরও। যেহেতু এই দায়িত্ব আপনাদের ও আমাদের ওপর অর্পিত হয়েছে, কাজেই দায়িত্বটা নিষ্ঠার সঙ্গে পালন করতে হবে।’
সিইসি বলেন, ‘প্রায় ১২শ নির্বাচন আমরা করেছি। সেখানে প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর যে সহযোগিতা পেয়েছি, এতে সত্যিই কৃতজ্ঞ। দৃঢ় প্রত্যাশা থাকবে, আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আপনারা রাষ্ট্রের, সরকারের কর্মচারী হিসেবে দলীয় চিন্তা-ভাবনার ঊর্ধ্বে থেকে পক্ষপাতহীন দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালন করে জনগণের আস্থা অর্জনে সক্ষম হবেন। কোনো অনিয়ম, সহিংসতা হবে না। শান্তিপূর্ণ নির্বাচন হবে, এই প্রত্যাশা ব্যক্ত করছি।’