সরকারের সামনে বিপদ আসন্ন, ধ্বংস অনিবার্য : কর্নেল অলি
লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) প্রেসিডেন্ট ড. কর্নেল (অব.) অলি আহমদ বলেছেন, এই সরকারের সামনে বিপদ আসন্ন এবং ধ্বংস অনিবার্য, কিছুতেই শেষ রক্ষা হবে না। আজ সোমবার (১৬ অক্টোবর) রাজধানীর পূর্ব পান্থপথের এলডিপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এলডিপির অঙ্গ সংগঠন গণতান্ত্রিক যুবদল আয়োজিত যুব সমাবেশে প্রধান অতিথির তিনি বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
কর্নেল (অব.) অলি বলেন, ‘আপনাদের উদ্দেশ্যে বলতে চাই, বর্তমান সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় খেলাপি ঋণ বেড়ে এখন এক লাখ ৫৬ হাজার কোটি টাকা হয়েছে। অথচ, প্রকৃত খেলাপী ঋণ চার লাখ ৫০ হাজার কোটি টাকা। প্রকৃত তথ্য ধামাচাপা দিয়ে যাচ্ছে। এই অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য প্রয়োজন বিশ্ব ব্যাংকের ঋণ। বিশ্ব ব্যাংক এই বিশেষ ঋণের জন্য সুদ দাবি করেছে পাঁচ শতাংশ। অন্যদিকে, সেপ্টেম্বরে রেমিট্যান্স এসেছে বিগত ৪১ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন, আগস্ট মাসের তুলনায় সেপ্টেম্বরে রপ্তানি আয় কমেছে ৯ দশমিক ৮৩ শতাংশ। ১৫ আগস্ট পর্যন্ত বকেয়া ছিল ৫০ মিলিয়ন ডলার। দেড় মাসে ছয় গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে।’
অলি বলেন, ‘জ্বালানি তেল কেনার ডলার নেই। হালনাগাদ জ্বালানি তেল বাবদ দেনা ৬৭০ মিলিয়ন ডলার। বৈদেশিক ঋণ ১০০ বিলিয়ন ডলারের ঊর্ধ্বে। অর্থনৈতিকভাবে আমরা একটি জলন্ত অগ্নিকুণ্ডের ওপর দাঁড়িয়ে আছি। দ্রুত ধ্বংসের দিকে এগোচ্ছে।’ তিনি বলেন, ‘নিত্যপণ্যের ক্রমাগত মূল্য বৃদ্ধি মানুষকে অসহায়ত্বের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। বেকার সমস্যা দিনদিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। যুবসমাজ হতাশ। দেশ মেধাশুন্য হয়ে পড়ছে। সমাজে মধ্যবৃত্তের বিলুপ্তি ঘটছে। এখন আছে শুধু ধনী আর দরিদ্র। গ্রামেগঞ্জে লোডশেডিং ১২ থেকে ১৪ ঘণ্টা মানুষ অতিষ্ঠ ও অসহায়।’
এলডিপি প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘নিষিদ্ধ হওয়া সত্বেও পলিথিন কীভাবে উৎপাদন হচ্ছে? নিশ্চয় এর সঙ্গে সরকারের দুর্নীতিবাজরা জড়িত। এ ব্যাপারে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কী কোনো দায়িত্ব নেই। তাদের কাজ কি শুধু বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে গায়েবি ও মিথ্যা মামলা রুজু করা, মারপিট করা?’ তিনি আরও বলেন, ‘অবৈধ অস্ত্র দৃশ্যমান, আওয়ামী সন্ত্রাসীরা অহরহ পুলিশের সামনে অস্ত্র ব্যবহার করছে। পুলিশ নিরব দর্শকের ভূমিকায়। মনে রাখবেন, আমাদের সরাইকে কুকর্মের ফল ভোগ করতে হবে, জবাবদিহি করতে হবে। এখনও সময় আছে—সাধু সাবধান। ধ্বংস অনিবার্য, দেশ বাঁচান, মানুষকে শান্তিতে থাকতে দিন।’
অলি বলেন, ‘ইদানিং দেখছি, হতদরিদ্রদের প্রশিক্ষণের টাকাও ভাগবাটোয়ারা হচ্ছে। এর সঙ্গে একজন মন্ত্রীর এপিএসও জড়িত। কথা হলো, মন্ত্রী এর দায়িত্ব কীভাবে এড়াতে পারেন? নতুনভাবে এলপিজি গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধি গরিবরা কীভাবে বাঁচবে?’
গণতান্ত্রিক যুবদলের সভাপতি আমান সোবহানের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য দেন এলডিপির প্রেসিডিয়াম সদস্য প্রেসিডিয়াম সদস্য নূরুল আলম তালুকদার, ড. নেয়ামূল বশির, ড. আওরঙ্গজেব বেলাল, অ্যাডভোকেট এস এম মোরশেদ, অধ্যক্ষ সাকলায়েন প্রমুখ।