বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘আওয়ামী লীগ এমন একটা দল, যারা সব সময় জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করে, এরা প্রতারক দল, এদের জনগণের সঙ্গে কোনো সম্পর্ক নেই। নির্বাচনের তিন মাস পরে আওয়ামী লীগে ভোট দেওয়া লোকগুলোই বলে—আগে জানলে তোর ভাঙা নৌকায় উঠতাম না।’

আজ বৃহস্পতিবার (১৯ অক্টোবর) দুপুরে ঢাকা রিপোর্টাস ইউনিটিতে এক আলোচনায় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন বিএনপি মহাসচিব। ‘গণতন্ত্র রক্ষা ও একদফা দাবি আদায়ে মরহুম সাইফুদ্দিন আহমেদ মনির ভূমিকা’ শীর্ষক এ আলোচনা সভার আয়োজন করে জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আওয়ামী লীগ এমনভাবে কথা বলে, দেশটা যেন তাদের পৈত্রিক সম্পত্তি। তারা ভাবেন, এটা আমার, তুমি আবার এর মধ্যে নাক গলাও কেন!’

গতকাল বুধবার আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এক সমাবেশে বলেন, ‘আগামী নির্বাচনকালীন সরকারের প্রধান হিসেবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা থাকবেন, তিনি আবার নির্বাচিত হয়ে প্রধানমন্ত্রী হবেন।’ এ মন্তব্য প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘যদি জানেন আপনারা জয়ী হয়ে শেখ হাসিনাই প্রধানমন্ত্রী হবেন, তবে ভোট করার দরকার কী?’

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আওয়ামী লীগের সঙ্গে জনগণের কোনো সম্পর্ক নেই। এরা নির্বাচনের আগে সুন্দর সুন্দর কথা বলে, এমনভাবে আকৃষ্ট করে, এরপর তারা ভোট দেয়। নির্বাচনের তিন মাস পর তাদের সেই চিরাচরিত চরিত্র ফুটে ওঠে।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আওয়ামী লীগ বলে, তত্ত্বাবধায়ক সরকার নাকি আজিমপুর কবরস্থানে পাঠিয়ে কবর দেওয়া হয়েছে। যদি কবরই দেবেন, তাহলে এই তত্ত্বাবধায়ক সরকারের নিয়ে এত মানুষকে হত্যা করলেন কেন?’

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘বাংলাদেশের যে রাজনৈতিক সংস্কৃতি, তা দুর্ভাগ্যজনকভাবে একদলীয় প্রতিষ্ঠা হয়েছে। একটি রাজনৈতিক দল আরেকটি রাজনৈতিক দলকে বিশ্বাস করে না। আজ ৫২ বছর পরও ভাবতে হয়, নির্বাচনের নিরপেক্ষতা নিয়ে, অথচ আমাদের আশপাশের দেশগুলোতে নির্বাচনি সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।’

সরকারকে হুঁশিয়ারি দিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এখনও সময় আছে, সেফ এক্সিট নেন, পদত্যাগ করে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের হাতে ক্ষমতা দেন। নতুবা জনগণের আন্দোলনে আপনাদের করুণ পরিণতি ভোগ করতে হবে।’

এনপিপির চেয়ারম্যান ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদের সভাপতিত্বে সভায় আরও বক্তব্য দেন জাগপা সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা খন্দকার লুৎফর রহমান, সাধারণ সম্পাদক এস এম শাহাদত হোসেন, এনপিপির মহাসচিব মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তফা, এডিপি চেয়ারম্যান ক্বারী আবু তাহের, বিকল্প ধারার নূরুল ইসলাম বেপারী, ন্যাপ ভাসানীর চেয়ারম্যান এস এম শাওন সাদেকি, মাইনরিটি জনতা পার্টির চেয়ারম্যান সুকৃতি মণ্ডল।