জামায়াতের মিছিল-সমাবেশ নিষেধাজ্ঞায় আবেদন শুনানি ৬ নভেম্বর
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন নিয়ে মামলার চূড়ান্ত নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত দলটির মিছিল-সমাবেশসহ সব ধরনের রাজনৈতিক কর্মসূচি পালনের ওপর নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আবেদনের শুনানির জন্য আগামী ৬ নভেম্বর দিন ধার্য করেছেন আপিল বিভাগ।
জামায়াতে ইসলামির ভারপ্রাপ্ত আমির অধ্যাপক মুজিবর রহমানসহ বর্তমান নেতৃত্বে থাকা আট নেতাকে পক্ষভুক্ত করেছেন আপিল বিভাগ। একইভাবে আদালতে মামলা বিচারাধীন থাকা অবস্থায় সমাবেশ করে রেজিস্ট্রেশন দাবি করায় আদালত অবমাননার অভিযোগের আবেদনের শুনানিও একই দিন ধার্য করেছেন আদালত।
প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বে পাঁচ বিচারপতির আপিল বেঞ্চ আজ বৃহস্পতিবার (১৯ অক্টোবর) এ আদেশ দেন।
আদালতে আবেদনকারী পক্ষে শুনানি করেন—জ্যেষ্ঠ আইনজীবী তানিয়া আমীর জামায়াতে ইসলামীর পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট অন-রেকর্ড জয়নাল আবেদীন তুহিন।
শুনানির শুরুতে জামায়াতের পক্ষে অ্যাডভোকেট অন রেকর্ড জয়নাল আবেদিন আট সপ্তাহ সময় আবেদন করেন। তিনি বলেন, সিনিয়র আইনজীবী এ জে মোহাম্মদ আলীর প্রস্তুতির জন্য সময় প্রয়োজন।
জবাবে আইনজীবী তানিয়া আমীর আদালতে বলেন, গত জুলাই মাসে আবেদনটি শুনানির জন্য কার্যতালিকায় আসে। এরপর চার মাস চলে গেছে। তারা বারবার সময় চাইছে।
একপর্যায়ে অ্যাডভোকেট অন রেকর্ড জয়নাল আবেদীন তুহিনকে উদ্দেশ করে আদালত বলেন, সময় নিয়ে কোর্টে আসেন না কেন? এখানে সময় নেবেন আর অন্য কোর্টে মামলা করবেন, তা হতে পারে না। আমরা সবই স্ক্রিনে দেখতে পাই। শেষবারের মতো সময় দিচ্ছি।
দুটি আবেদনের কথা উল্লেখ করে পরে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী তানিয়া আমীর সাংবাদিকদের বলেন, একটি নিষেধাজ্ঞা চেয়ে, অপরটির আদালত অবমাননার। শুরুতে জামায়াতের পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এ জে মোহাম্মদ আলীর জন্য আট সপ্তাহের সময় চেয়ে আবেদন করেন একজন আইনজীবী।
জবাবে আদালত বললেন, তিনি (এ জে মোহাম্মদ আলী) কি আদালতে আছেন? ডিজিটাল যুগে আদালতের সামনে স্ক্রিন আছে, সব জানা যায়।
পরে জামায়াতের বর্তমান নেতাদের বিবাদী করে যে আবেদনটি করা হয়েছিল তা উপস্থাপন করা হলে আদালত তা মঞ্জুর করেন।
প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘কেন বারবার সময় নিচ্ছেন? সময় নিয়ে কোর্টে আসেন না কেন? এখানে সময় নেবেন আর অন্য কোর্টে মামলা করবেন—তা হতে পারে না। আমরা সবই সিসি ক্যামেরায় দেখতে পাই।’
এ সময় ব্যারিস্টার তানিয়া আমীর সময় আবেদনের বিরোধিতা করে বলেন, ‘তারা আদালত থেকে সময় নিয়ে যায়, আর তলে তলে মিটিং-মিছিল চালিয়ে যাচ্ছে। একটি বৈধ দলের মতো সব কর্মসূচি পালন করছে। গত ১৫ অক্টোবরেও মিছিল সমাবেশ করেছে।’
তখন আপিল বিভাগ বলেন, অপেক্ষা করুন, আমরা সব বিষয় দেখব। আদালতের হাত অনেক লম্বা। ‘এ সময় আপিল বিভাগ জামায়াতের আইনজীবীকে উদ্দেশ্য করে বলেন, আর সময় দেওয়া হবে না।’
পরে আদালত শুনানির জন্য আগামি ৬ নভেম্বর দিন ধার্য করেন আপিল বিভাগ। এ ছাড়া আদালতে মামলা বিচারাধীন থাকা অবস্থায় সমাবেশ করে রেজিস্ট্রেশন দাবি করায় আদালত অবমাননার অভিযোগের আবেদনের শুনানিও একইদিন ধার্য করা হয়।
এর আগে গত ২৬ জুন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন নিয়ে চলা মামলার চূড়ান্ত নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত দলটির মিছিল-সমাবেশসহ সব ধরনের রাজনৈতিক কর্মসূচি পালনের ওপর নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আপিল বিভাগে আবেদন করা হয়। আপিল বিভাগের চেম্বার আদালতে মাওলানা সৈয়দ রেজাউল হক চাঁদপুরীর পক্ষে এ আবেদন করেন ব্যারিস্টার তানিয়া আমীর।
এ ছাড়া আদালতে মামলা বিচারাধীন থাকা অবস্থায় সমাবেশ করে রেজিস্ট্রেশন দাবি করায় আদালত অবমাননার অভিযোগ এনে পৃথক আরেকটি আবেদন করেন মাওলানা রেজাউল হক চাঁদপুরী। এটিও দাখিল করেন ব্যারিস্টার তানিয়া আমীর।