সংবাদ সংগ্রহে গিয়ে হামলার শিকার এনটিভির প্রতিনিধিসহ ছয় গণমাধ্যমকর্মী
কুষ্টিয়ার পদ্মা নদীতে অবৈধভাবে বালু তোলার সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে হামলার শিকার হয়েছেন এনটিভির প্রতিনিধি সাবিনা ইয়াসমিন শ্যামলী ও ক্যামেরাপারসন আসিফুজ্জামানসহ ছয় গণমাধ্যমকর্মী। তাদের কাছ থেকে ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে ক্যামেরা ও মুঠোফোন। দেওয়া হয়েছে হত্যার হুমকি। এতেই শেষ নয়, চালানো হয়েছে অপহরণের চেষ্টা। না পেরে করা হয় স্পিডবোট ডোবানোর চেষ্টাও। পরে সেখান থেকে কোনো মতে পাড়ে পৌঁছান তারা, অভিযোগ করেন কুষ্টিয়া মডেল থানায়।
কুষ্টিয়ার সদর উপজেলার হাটশ হরিপুর ইউনিয়নে পদ্মা নদীতে ‘আদালতের নির্দেশনা অমান্য করে’ চলছিল বালু উত্তোলন। আজ শুক্রবার (২০ অক্টোবর) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে সেই সংবাদ সংগ্রহের জন্য স্পিডবোটে করে সেখানে যান ছয় সাংবাদিক।
হামলার শিকার অন্যদের মধ্যে ছিলেন–বাংলাভিশনের কুষ্টিয়া প্রতিনিধি হাসান আলী, চ্যানেল টোয়েন্টি ফোরের বিশেষ প্রতিনিধি শরীফ বিশ্বাস, নিউজ টুয়েন্টি ফোরের স্টাফ রিপোর্টার জাহিদুজ্জামান।
ভুক্তভোগীদের ওপর হামলার ফুটেজ এনটিভির দপ্তরে সংরক্ষিত আছে। হামলার শিকার জাহিদুজ্জামান থানায় লিখিত অভিযোগে বলেন, উচ্চ আদালতের নির্দেশনা উপেক্ষা করে কুষ্টিয়ার পদ্মা নদী থেকে অবৈধভাবে তোলা হচ্ছে, এমন সংবাদ সংগ্রহ করতে যান তারা। সেখানে অসংখ্য ড্রেজার দিয়ে বালু তোলা হচ্ছিল। এর ভিডিও ধারণ করেন তারা। এ সময় চেয়ারম্যান আব্দুল হান্নান মন্ডলের নির্দেশে শামীম, টিক্কা ও সজিবসহ মোট ছয়জন তাদের ওপর হামলা চালায়। কেন ভিডিও ধারণ করছে তা জিজ্ঞাসা করে গালিগালাজ করতে থাকে তারা। এ সময় বেশ কয়েকবার তাদের স্পিডবোট দিয়ে ভুক্তভোগীদের বহনকারী নৌযানটিতে ধাক্কা দেয়। জোর করে ছিনিয়ে নেয় ভিডিও ধারণ করা একটি ক্যামেরা ও মোবাইল ফোন। পরে, কোনোমতে নৌকা নিয়ে ফিরে আসতে পারেন গণমাধ্যমকর্মীরা।
এ বিষয়ে কুষ্টিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সৈয়দ আশিকুর রহমান বলেন, ‘অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
ঘটনার বিষয়ে চেয়ারম্যান আব্দুল হান্নান মন্ডলের সঙ্গে মুঠোফোনে বারবার চেষ্টার পরও যোগাযোগ সম্ভব হয়নি। খুদে বার্তা পাঠানো হলেও তিনি এর জবাব দেননি।
এদিকে, গণমাধ্যমকর্মীদের ওপর হামলার নিন্দা জানিয়েছে কুষ্টিয়া প্রেসক্লাব। এর প্রতিবাদে আগামীকাল শনিবার (২১ অক্টোবর) বেলা ১১টায় মানববন্ধন কর্মসূচির ডাক দিয়েছে তারা।