১০ জেলার মানুষকে রাত ৮টার মধ্যে আশ্রয়কেন্দ্রে স্থানান্তরের নির্দেশ
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান বলেছেন, ‘ঘূর্ণিঝড় হামুন আগামীকাল বুধবার (২৫ অক্টোবর) সকাল থেকে দুপুর নাগাদ বরিশাল-চট্টগ্রাম উপকূল অতিক্রম করতে পারে। তবে শেষ মুহূর্তে এটি গতি বাড়ালে আগেই অতিক্রম শুরু করতে পারে। সে কারণে আজ মঙ্গলবার রাত ৮টার মধ্যে ঝুঁকিপূর্ণ ১০ জেলার মানুষকে আশ্রয়কেন্দ্রে নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’
আজ মঙ্গলবার সচিবালয়ে ঘূর্ণিঝড় ‘হামুন’ মোকাবিলায় ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচির (সিপিপি) বাস্তবায়ন বোর্ডের জরুরি সভা শেষে প্রেস ব্রিফিংয়ে প্রতিমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
ঝুঁকিপূর্ণ জেলাগুলো হলো—পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বরগুনা, চট্টগ্রাম, ফেনী, নোয়াখালী ও লক্ষ্মীপুর। প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘এই ১০ জেলার ১৫ লাখ মানুষকে আশ্রয়কেন্দ্রে আনা হবে।’
এনামুর রহমান বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড়টি বরিশাল ও চট্টগ্রামের দিকে এগিয়ে আসছে। এর বাতাসের গতিবেগ ঘণ্টায় ৮৯ কিলোমিটার থেকে ১১৭ কিলোমিটার পর্যন্ত রেকর্ড করা হয়েছে। এ অবস্থায় আবহাওয়া অধিদপ্তর ৭ নম্বর বিপদ সংকেত দিয়েছে।’
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড়ের গতিবেগ ও চরিত্রটা বিশ্লেষণ করে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, এটি আজকে আজ রাত ১০টা থেকে আগামীকাল বুধবার সকাল ১০টার মধ্যে উপকূল অতিক্রম করতে পারে। এজন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে আজ মঙ্গলবার রাত ৮টার মধ্যে যেন সব ঝুঁকিপূর্ণ জেলার মানুষকে আশ্রয়কেন্দ্রে আনা হয়। আশ্রয়কেন্দ্রগুলো আমরা প্রস্তুত করেছি।’
এনামুর রহমান বলেন, ‘এসওডি (দুর্যোগবিষয়ক স্থায়ী আদেশাবলী) অনুযায়ী, ৭ নম্বর বিপদ সংকেত দিলে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার মানুষকে আশ্রয়কেন্দ্রে নেওয়ার সিদ্ধান্ত দেওয়া হয়। সেই অনুযায়ী মাঠ প্রশাসন ও আমাদের স্বেচ্ছাসেবকরা দুর্গত লোকদের আশ্রয়কেন্দ্রে নেওয়া শুরু করবে।’
আশ্রয়কেন্দ্রেগুলোতে অর্থ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে জানিয়ে ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘প্রত্যেক জেলায় ২০ লাখ টাকা, ৫০ টন চাল বরাদ্দ দিয়েছি। শিশু ও গো খাদ্যের জন্য এক কোটি টাকা করে মোট দুই কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছি।’
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আজ মঙ্গলবারের সরকারি ছুটি বাতিল করা হয়েছে জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী এনামুর রহমান বলেন, ‘মন্ত্রণালয়, অধিদপ্তর ও মাঠ পর্যায়ে উপকূলীয় জেলাগুলোতে আমাদের কর্মকর্তারা কাজ করছেন।’
‘হামুনের’ গতিপথ গত বছরের ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের মতো জানিয়ে ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, ‘এজন্য আমরা অতিরিক্ত সতর্কতা অবলম্বন করছি। গবাদি পশুকেও আমরা সরিয়ে আনার নির্দেশনা দিয়েছি। মেডিকেল টিমও প্রস্তুত রয়েছে। এটি বরিশাল থেকে চট্টগ্রামের মধ্য দিয়ে এটি অতিক্রম করবে। এর কেন্দ্র বা চোখ বরগুনা, লক্ষ্মীপুর, নোয়াখালী, ফেনী ও চট্টগ্রামের মধ্য দিয়ে যাবে।’
‘হামুন’ মোকাবিলাকে চ্যালেঞ্জ মনে করছেন না জানিয়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘অন্যান্য ঘূর্ণিঝড়ের মতো এটিও আমরা মোকাবিলা করতে পারব।’
এ সময় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. কামরুল হাসানসহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, বিভাগ ও সংস্থার কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।