অস্ত্রোপচার শেষে কেবিনে খালেদা জিয়া
রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার শরীরে অস্ত্রোপচার করেছেন যুক্তরাষ্ট্র থেকে আসা জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক। আজ বৃহস্পতিবার (২৬ অক্টোবর) সন্ধ্যা ৬টা থেকে দেড় ঘণ্টাব্যাপী সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীর অস্ত্রোপচার করেন তারা। অস্ত্রোপচার শেষে তাকে কেবিনে নেওয়া হয়।
মেডিকেল বোর্ডের এক চিকিৎসক জানিয়েছেন, খালেদা জিয়ার লিভার সিরোসিস জটিলতার কারণে পেটে পানি জমা ও রক্তক্ষরণ বন্ধে ট্রান্সজুগলার ইন্ট্রাহেপাটিক পোরটোসিস্টেমিক সান্ট (টিপস) পদ্ধতি শুরুর জন্য আগেই সিদ্ধান্ত নিয়েছিল মেডিকেল বোর্ড। কিন্তু, বাংলাদেশের চিকিৎসকরা এই ‘টিপস’ পদ্ধতিতে কোনো রোগীকে আগে চিকিৎসা দেননি। তাই পরিবারের পক্ষ থেকে যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্বখ্যাত বিশ্ববিদ্যালয় জনস হপকিন্সের তিন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক আনা হয়। তারা গতকাল সন্ধ্যা ৬টায় টিপস পদ্ধতিতে চিকিৎসা শুরুর জন্য ম্যাডামকে অপারেশন থিয়েটারে (ওটি) নিয়ে যান। সাড়ে ৭টায় অস্ত্রোপচার শেষ হয়। অস্ত্রোপচার শেষে ফের তাকে কেবিনে নেওয়া হয়।
এদিকে বুধবার রাতে ঢাকায় পৌঁছান জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ডা. হামিদ আহমেদ আব্দুর রব, ডা. জেমস পিটার অ্যাডাম হ্যামিলটন ও ডা. ক্রিসটোস স্যাভাস জর্জিয়াডেস। তাদের মধ্যে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত প্রফেসর হামিদ রব জনস হপকিন্সের কিডনি ট্রান্সপ্লান্ট প্রোগ্রামের পরিচালক ও মেডিসিন বিশেষজ্ঞ। আর সহযোগী অধ্যাপক জেমস পিটার হ্যামিলটন একই বিশ্ববিদ্যালয়ের হেপাটোলোজি বিভাগের পরিচালক ও মেডিসিন বিশেষজ্ঞ। ডা. ক্রিসটোস স্যাভাস জর্জিয়াডেস ইন্টারভেনশনাল অনকোলজি বিভাগের পরিচালক ও রেডিওলোজি অ্যান্ড রেডিওলোজিক্যাল বিশেষজ্ঞ।
গতকাল রাতেই দুজন চিকিৎসক খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা পর্যবেক্ষণে এভারকেয়ার হাসপাতালে যান এবং মেডিকেল বোর্ডের চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলেন। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে ফের তিন চিকিৎসক এভারকেয়ার হাসপাতালে যান। আরেকদফা মেডিকেল বোর্ডের চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলে ‘টিপস’ প্রক্রিয়া শুরুর সিদ্ধান্ত নেন।
গত ৯ আগস্ট থেকে এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন বেগম খালেদা জিয়া। সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী লিভার সিরোসিস, অস্টিও আর্থ্রাইটিস, রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, কিডনি, হৃদযন্ত্রে জটিলতা, ফুসফুস, চোখ ও দাঁতের নানা সমস্যায় ভুগছেন। এ ছাড়া তার মেরুদণ্ড, ঘাড়, হাত ও হাঁটুতে বাতের সমস্যাসহ আরও কিছু শারীরিক জটিলতা রয়েছে। ওই হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে ১৯ সদস্যের একটি মেডিকেল বোর্ড তাকে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রেখে চিকিৎসা দিচ্ছেন।