গোপালগঞ্জে দুই পক্ষের সংঘর্ষে সাবেক সেনাসদস্য নিহত, আহত ২০
গোপালগঞ্জে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে আনসার চৌধুরী (৫৫) নামে এক অবসরপ্রাপ্ত সেনাসদস্য নিহত হয়েছেন। আনসার চৌধুরীকে প্রতিপক্ষরা কুপিয়ে ও পিটিয়ে হত্যা করে। এ সময় এক পথচারীসহ উভয়পক্ষের অন্তত ২০ জন আহত হয়। হতাহতের খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন গোপালগঞ্জের পুলিশ সুপার আলবেলী আফিফা।
আজ সোমবার (৩০ অক্টোবর) সকালে জেলার কাশিয়ানী উপজেলার নিজামকান্দি বাজারে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। নিহত আনসার চৌধুরী গোপালগঞ্জ জেলার কাশিয়ানী উপজেলার নিজামকান্দি গ্রামের মৃত আলাউদ্দিন চৌধুরীর ছেলে।
কাশিয়ানী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ ফিরোজ আলম জানান, দীর্ঘদিন ধরে হাজী ও মাস্টার গ্রুপের মধ্যে দ্বন্দ্ব চলে আসছিল। সম্প্রতি নিহত আনসার চৌধুরী, বিপ্লব মোল্লাসহ চার-পাঁচ জন হাজী গ্রুপ থেকে দলছুট হয়ে মাস্টার গ্রুপে যোগ দেয়। এ নিয়ে দুই গ্রুপের মধ্যে নতুন করে দ্বন্দ্ব শুরু হয়। এরই জের ধরে নিজামকান্দি ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান আলহাজ কাজী নওশের আলী প্রতিপক্ষ মোখলেসুল রহমান ওরফে মকু মাস্টার গ্রুপের শফিক মোল্লার দোকানে গতকাল রোববার পুলিশ দিয়ে মাদকের সন্ধানে হয়রানি করানোর অভিযোগ ওঠে। এ ঘটনায় আজ সোমবার সকাল ৮টার দিকে হাজী গ্রুপের এরশাদ মোল্লা ও নিজামকান্দি ইউনিয়নের ৬ নং ওয়ার্ড মেম্বার শাহজাহান মোল্লার সঙ্গে মাস্টার গ্রুপের বিপ্লব মোল্লাসহ অন্যান্যদের কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে উভয় গ্রুপের লোকজন ঢাল, সুড়কিসহ দেশীয় অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। প্রায় ঘণ্টাব্যাপী চলা সংঘর্ষে আনসার চৌধুরী (৫৫), বিপ্লব মোল্লা (৪০) ও এক পথচারী ভাঙারি ব্যবসায়ী ফুল মিয়া (৫০) সহ উভয়পক্ষের অন্তত ২০ জন আহত হয়। দুই পাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে কোপে মারাত্মক আহত আনসার চৌধুরীর সহ অন্যান্যদেরকে সকাল ১০টায় গোপালগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে আসা হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক আনসার চৌধুরীকে মৃত ঘোষণা করেন। তিনি মাস্টার গ্রুপের লোক বলে জানা গেছে।
আহত বিপ্লব মোল্লা, পথচারী ফুল মিয়াসহ ৬ জনকে গোপালগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বাকিদেরকে বিভিন্ন চিকিৎসাকেন্দ্রে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এ পর্যন্ত দুজনকে আটক করা হয়েছে। নিহত আনসার চৌধুরীর মরদেহটি গোপালগঞ্জ সদর হাসপাতাল মর্গে রাখা হয়েছে।
কাশিয়ানী উপজেলার রামদিয়া পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক (ওসি) আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, হাজী গ্রুপ ও মাস্টার গ্রুপের দ্বন্দ্ব স্বাধীনতার পর থেকেই চলমান আছে। এ ঘটনার সাথে জড়িতদের ধরতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।