মামলা, হামলা ও গ্রেপ্তার দিয়ে আন্দোলন থামানো যাবে না : রিজভী
বিএনপির চলমান আন্দোলন থামানো যাবে না জানিয়ে দলটির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ‘আওয়ামী সরকারের পতন অত্যাসন্ন (অতি নিকটে)। গণতন্ত্রের প্রত্যাবর্তন, বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি ও উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে প্রেরণ ও নির্বাচনকালীন নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের দাবিতে চলমান আন্দোলন থামবে না। মামলা, হামলা ও গ্রেপ্তার দিয়ে কখনই আন্দোলন থামানো যাবে না।’
আজ সোমবার (৩০ অক্টোবর) বিকেলে ভার্চুয়ালি এক সংবাদ সম্মেলনে রিজভী এসব কথা বলেন।
রিজভী বলেন, ‘বিএনপির মহাসমাবেশে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কিছু সদস্য ও আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসী বাহিনী যৌথভাবে হামলা ও তাণ্ডব চালিয়েছে। পরিকল্পিতভাবে জানমালের ক্ষতিসাধন করেছে তারা। তাদের এই হামলায় বিএনপি ঘৃণা, ক্ষোভ ও ধিক্কার জানায়।’
বিএনপির এই জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব বলেন, ‘মহাসমাবেশ ও শান্তিপূর্ণ হরতাল কর্মসূচিতে পুলিশ ও আওয়ামী লীগের হামলায় চারজন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছে তিন হাজারেরও বেশি নেতাকর্মী। গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৬৯০ জনকে। ২০টির বেশি মামলা করা হয়েছে। এ ছাড়াও মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে ২৩ অক্টোবর হতে ২৮ অক্টোবর পর্যন্ত পাঁচ দিনে গ্রেপ্তার করা হয়েছে দুই হাজার ৬৪০ জনের অধিক নেতাকর্মীকে। মামলা হয়েছে ৪৫টি।’
রিজভী আরও বলেন, ‘গত ২৮ জুলাই থেকে ২৯ অক্টোবর পর্যন্ত বিএনপি ঘোষিত কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে সারা দেশের প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী, আমাদের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা দেওয়া হয়েছে ৪৪২টি। গ্রেপ্তার করা হয়েছে পাঁচ হাজার ৩১০ জনকে। মামলাগুলোতে আসামি করা হয়েছে ৩১ হাজার ৯৮০ জনকে। হামলা চালিয়ে আহত করা হয়েছে পাঁচ হাজার ১১০ জনের বেশি নেতাকর্মীকে। বিচার বিভাগের রাজনীতিকরণ করে ১৫টি মিথ্যা মামলায় ৯ জনের মৃত্যুদণ্ডাদেশ ও প্রায় ৯০ জনের অধিক নেতাকর্মীকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেওয়া হয়েছে।’
অত্যাচার, নির্যাতন ও খুনের শিকার হয়েও বিএনপিসহ গণতন্ত্রের পক্ষের দলগুলো সহিংসতার পথ বেছে নেয়নি জানিয়ে রিজভী বলেন, ‘আমাদের নেতাকর্মীরা শান্তিপূর্ণ ও অহিংস আন্দোলনে স্বতঃস্ফূর্তভাবে যোগ দিয়েছেন। বিএনপির গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের যৌক্তিক দাবির সঙ্গে একমত পোষণ করে গণতন্ত্রের পক্ষের সব রাজনৈতিক দল। গণতন্ত্রের পক্ষের সব আন্তর্জাতিক সংস্থা ও দেশগুলো একটি সুষ্ঠু এবং অংশীদারত্বমূলক নির্বাচনের জন্য সরকারকে চাপ দিচ্ছেন। দেশের ভেতরের সাধারণ মানুষ ও বাইরের আন্তর্জাতিক শক্তির জোর সমর্থন পাবার ফলে বিএনপির নেতৃত্বে আন্দোলন যখন সফল হতে যাচ্ছে, তখনই আওয়ামী লীগ ভীত হয়ে উঠেছে। এই অন্তিম অবস্থায় আওয়ামী লীগ যৌক্তিক জ্ঞান হারিয়ে সহিংসতার পথ বেছে নিয়েছে।’