ভৈরবে দুই মামলায় বিএনপির ৭৮৬ নেতাকর্মী আসামি
কিশোরগঞ্জের ভৈরবে অবরোধের প্রথম দিন পুলিশ ও আওয়ামী লীগের সঙ্গে বিএনপির নেতাকর্মীদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সেই ঘটনায় আজ বৃহস্পতিবার (২ নভেম্বর) ভৈরব থানায় দুটি মামলা করেছে পুলিশ।
পুলিশের করা এই দুই মামলায় বিএনপি, অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের ৭৮৬ নেতাকর্মী আসামি। আর এই দুই মামলারই প্রধান আসামি ভৈরব উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো. আরিফুল ইসলাম।
পুলিশ জানায়, অবরোধের প্রথম দিন বিএনপি, অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা ভৈরব-কিশোরগঞ্জ-ময়মনসিংহ আঞ্চলিক সড়কের কমলপুর পুরান লোকাল বাসস্ট্যান্ড ও মুসলিম মোড় এলাকায় পিকেটিং করে। এ সময় তারা গাড়ি ভাঙচুরসহ নাশকতা চালানোর চেষ্টা করে। পরে আওয়ামী লীগের সঙ্গে বিএনপির সংঘর্ষ হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। তখন বিএনপির সমর্থকরা পুলিশের ওপর হামলা চালায় এবং ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে তখন পুলিশ কয়েকটি কাঁদানে গ্যাসের শেল নিক্ষেপ করে।
পুলিশ আরও জানায়, এ ঘটনায় একটি মামলা হয় সন্ত্রাস দমন আইনে। অপরটি হয় বিস্ফোরকদ্রব্য আইনে। দুই মামলারই বাদী উপপরিদর্শক (এসআই) শহীদুর রহমান। উভয় মামলার এজহারভুক্ত আসামি ৯৩ জন করে। দুই মামলায় অজ্ঞাত পরিচয় ৩০০ জন করে আসামি করা হয়। অর্থাৎ দুই মামলার মোট আসামি ৭৮৬ জন।
দুই মামলার উল্লেখযোগ্য আসামিরা হলেন পৌর বিএনপির সভাপতি হাজি শাহিন মিয়া, সহসভাপতি ফয়জুল্লাহ মিয়া, উপজেলা বিএনপির সিনিয়র সহসভাপতি আবুল বাসার, সাবেক সিনিয়র সহসভাপতি হাজি তোফাজ্জুল হক, সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাজি জিল্লুর রহমান, উপজেলা যুবদলের সভাপতি দেলোয়ার হোসেন সুজন, সাধারণ সম্পাদক আল মামুন, পৌর যুবদলের সদস্যসচিব যোবায়ের আল মাহমুদ আফজাল, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি নিয়াজ মোর্শেদ, পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি আলম সরকার, উপজেলা ছাত্রদলের সভাপতি রেজুয়ান উল্লাহ, পৌর ছাত্রদলের আহ্বায়ক হিসাম আহমেদ, সদস্য সচিব মুকিত আবদুল্লাহ ফারুকী প্রমুখ।
বিস্ফোরকদ্রব্য আইনে করা মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উপপরিদর্শক (এসআই) আ. রহমান বলেন, ‘তদন্তে অবরোধের প্রথম দিন বিএনপির সমর্থকরা মহাসড়কে বিস্ফোরণ ঘটিয়েছেন বলে প্রমাণ পাওয়া গেছে। অভিযুক্ত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।’
অভিযোগের বিষয়ে উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো. আরিফুল ইসলাম বলেন, ‘রাজনৈতিক কর্মসূচি পালন আমাদের সাংবিধানিক অধিকার। অথচ অধিকার প্রয়োগের চেষ্টা করলেই পুলিশি আগ্রাসন শুরু হয়ে যায়। রাজপথে পুলিশের হামলার শিকার হতে হয়। পরে করা হয় মামলা। শত বাধার মধ্যেও আমরা রাজপথ ছাড়ব না।’
মামলার বিষয়টি স্বীকার করে ভৈরব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাকছুদুল আলম জানান, অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত আছে।