চট্টগ্রাম থেকে পরীক্ষামূলক ট্রেন গেল কক্সবাজারে
চট্টগ্রাম থেকে পরীক্ষামূলক ট্রেন গেল পর্যটননগরী কক্সবাজারে। আজ রোববার (৫ নভেম্বর) সকাল ৯টা ২ মিনিটে আটটি কোচের পরীক্ষামূলক একটি লোকোমোটিভ হুইসেল দিয়ে চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশন ছাড়ে।
আগামী ১১ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন কক্সবাজারের সঙ্গে সারা দেশের ট্রেন চলাচল। তাই আজ চট্টগ্রাম থেকে পরীক্ষামূলক ট্রেন গেল কক্সবাজারে। চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত রেলপথের দূরত্ব হচ্ছে ১৫০ কিলোমিটার। দোহাজারী থেকে সাতকানিয়া, লোহাগাড়া, চকরিয়া, রামু হয়ে পাহাড় ও নদী পাড়ি দিয়ে চলবে এ ট্রেন। এই পথে আছে নয়টি রেলওয়ে স্টেশন, চারটি বড় ও ৪৭টি ছোট সেতু, ১৪৯টি বক্স কালভার্ট এবং ৫২টি রাউন্ড কালভার্ট।
সকাল ১০টায় ট্রেনটি দোহাজারী স্টেশনে পৌঁছায়। এরপর এখান থেকে কক্সবাজারের উদ্দেশে রওনা দেয়। ট্রেনটি বিকেল সাড়ে ৫টায় কক্সবাজার পৌঁছার কথা।
রেলওয়ে সূত্র জানায়, রেলের পরিদর্শন অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা কক্সবাজারে অবস্থান করছেন। আগামীকাল সোমবার (৬ নভেম্বর) তাঁরা কক্সবাজার রেলস্টেশন ইয়ার্ড পরিদর্শন করবেন। ৭ নভেম্বর সকাল ৭টায় তাঁরা চট্টগ্রামের উদ্দেশে রওনা দেবেন।
পরীক্ষামূলক যাত্রার প্রথম এই ট্রেনটি চালাচ্ছেন লোকোমাস্টার মোহাম্মদ মাহফুজুর রহমান এবং সহকারী লোকোমাস্টার রুখন মিয়া। ট্রেনে আছেন গার্ড, রেলওয়ে পুলিশ, রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য (আরএনবি), রেল ট্র্যাক সংক্রান্ত রেলকর্মী, প্রকৌশল, বাণিজ্যিক ও পরিবহণ বিভাগের শীর্ষ কর্মকর্তারা। জিআইবিআর স্পেশাল ট্রেনে করে সরকারি রেল পরিদর্শক (জিআইবিআর) দোহাজারি-কক্সবাজার রেলপথ প্রকল্পের কারিগরি তদারকি করছেন।
রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক নাজমুল ইসলাম বলেন, নিয়ম হলো নতুন রেলপথ নির্মাণ করা হলে তা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা। আজ ট্রেনটির ট্রায়াল রান না হলেও কক্সবাজারে যাওয়া প্রথম ট্রেন। রেলপথ পরিদর্শন অধিদপ্তরের পরিদর্শকের অনুমোদন ছাড়া প্রকল্প উদ্বোধনের কোনো সুযোগ নেই। এর আগে গতকাল শনিবার ৯২ বছরের পুরোনো কালুরঘাট সেতুতে ২২০০, ২৯০০ ও ৩০০০ সিরিজের তিনটি ইঞ্জিনের ট্রায়াল সম্পন্ন করে রেলের প্রকৌশল বিভাগ। চলতি সপ্তাহে আনুষ্ঠানিক ট্রায়াল রান (পরীক্ষামূলক ট্রেন চলাচল) শেষে বহুল প্রতীক্ষিত রেলপথটি উদ্বোধন করা হবে।
দোহাজারী থেকে রামু হয়ে কক্সবাজার পর্যন্ত ১০০ কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণ প্রকল্প ২০১০ সালের ৬ জুলাই একনেকে অনুমোদন পায়। ২০১৮ সালে এই রেলপথ নির্মাণের কাজ শুরু হয়। প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০২২ সালের ৩০ জুন। পরে এক দফা বাড়িয়ে প্রকল্পের মেয়াদ করা হয় ২০২৪ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত। এতে ব্যয় ধরা হয় ১৮ হাজার ৩৪ কোটি ৪৮ লাখ টাকা। প্রকল্পে ঋণ সহায়তা দিচ্ছে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)। তবে প্রকল্পের মেয়াদ বাড়লেও ব্যয় বাড়েনি। এ প্রকল্পের কাজ পুরোদমে চলায় নির্ধারিত সময়ের আগেই তা সমাপ্ত হচ্ছে। ২০১৬ সালের ২৭ এপ্রিল প্রকল্পটি ‘ফাস্ট ট্র্যাক প্রকল্প’ হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হয়। রেলপথটি মিয়ানমার, চীনসহ ট্রান্স এশিয়ান রেলওয়ের করিডোরে যুক্ত করবে বাংলাদেশকে।