উত্তর ও দক্ষিণখানের আবাসন প্রকল্পের নথি আপিল বিভাগে
রাজধানীর উত্তর ও দক্ষিণখানের সব আবাসন প্রকল্পের নথি আপিল বিভাগে জমা দিয়েছে রাষ্ট্রপক্ষ। আজ মঙ্গলবার (৭ নভেম্বর) প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বাধীন পাঁচ সদস্যের আপিল বেঞ্চে এ তথ্য জমা দেওয়া হয়।
বেঞ্চের অপর সদস্যরা হলেন—বিচারপতি বোরহান উদ্দিন, বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম, বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলাম ও বিচারপতি মো. আবু জাফর সিদ্দিকী।
গত ২ নভেম্বর ঢাকার আশপাশে বেসরকারি সব আবাসিক প্রকল্পগুলো কবে এবং কীভাবে কোন প্রক্রিয়ায় অনুমোদন পেয়েছে, তার বিস্তারিত তথ্য জানতে চান সর্বোচ্চ আদালত। এ সংক্রান্ত নথি জমার দেওয়ার জন্য ৭ নভেম্বর দিন ধার্য করা হয়েছিল।
শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের বিপরীত দিকে হজ ক্যাম্পসংলগ্ন দক্ষিণখান থানার আশকোনা ও কাওলা এলাকার আশিয়ান সিটি আবাসিক প্রকল্প নিয়ে আপিল মামলার শুনানিকালে এ তথ্য চান দেশের সর্বোচ্চ আদালত।
২০১৪ সালের ১৬ জানুয়ারি হাইকোর্টের একটি বৃহত্তর বেঞ্চ সংখ্যাগরিষ্ঠ মতের ভিত্তিতে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের বিপরীত দিকে হজ ক্যাম্পসংলগ্ন দক্ষিণখান থানার আশকোনা ও কাওলা এলাকার আশিয়ান সিটি আবাসিক প্রকল্পকে অবৈধ বলে রায় দেন।
বিচারপতি সৈয়দ এ বি মাহমুদুল হক, বিচারপতি কাজী রেজা-উল হক ও বিচারপতি এ বি এম আলতাফ হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চের দুজন বিচারপতি ওই প্রকল্পকে অবৈধ ঘোষণা করেন। অপর বিচারপতি রিট খারিজ করে প্রকল্পটি বৈধ বলে মত দেন।
এ রায়ের পূর্ণাঙ্গ কপি প্রকাশের পর আশিয়ান সিটি আবাসিক প্রকল্প কর্তৃপক্ষ রায় পুনর্বিবেচনার জন্য রিভিউ আবেদন করে। তবে, বিচারপতি এ বি এম আলতাফ হোসেন হাইকোর্টে স্থায়ী বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ না পাওয়ায় তিনি এখন আর বিচারপতি হিসেবে নেই। এ অবস্থায় ওই রিভিউ আবেদনের ওপর শুনানির জন্য তৎকালীন প্রধান বিচারপতি পৃথক একটি বৃহত্তর বেঞ্চ গঠন করেন।
বিচারপতি সৈয়দ এ বি মাহমুদুল হক, বিচারপতি নাইমা হায়দার ও বিচারপতি কাজী রেজা-উল হকের সমন্বয়ে এই বৃহত্তর বেঞ্চ গঠন করা হয়। এই বেঞ্চে শুনানি শেষে গত ১৬ আগস্ট আদালত রিভিউ আবেদনটি মঞ্জুর করে রায় দেন। নতুন এ রায়ে ২০১৪ সালের ১৬ জানুয়ারি আশিয়ান সিটি আবাসিক প্রকল্পকে অবৈধ বলে দেওয়া রায় বাতিল করা হয়।
আশিয়ান সিটি আবাসিক প্রকল্পকে দেওয়া রাজউকের অনুমোদন এবং পরিবেশ অধিদপ্তরের দেওয়া আশিয়ান সিটির অবস্থানগত ছাড়পত্রের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক), অ্যাসোসিয়েশন ফর ল্যান্ড রিফর্ম অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট, বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা), ব্লাস্ট, বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন, ইনস্টিটিউট অব আর্কিটেক্ট বাংলাদেশ, নিজেরা করি, পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন নামের মানবাধিকার ও পরিবেশবাদী আটটি সংগঠন ২০১২ সালের ২২ ডিসেম্বর হাইকোর্টে একটি রিট করে।
রিট আবেদনে বলা হয়, আশিয়ান সিটি ৪৩ দশমিক ১১ একর জমির জন্য অনুমোদন নিয়েছে। কিন্তু, কাজ করছে ২৩০ দশমিক ৪৬ একর জমিতে। তারা যে জমি ভরাট করেছে, সেটা নিম্ন জলাভূমি। জলাভূমি ভরাটের জন্য তাদের জরিমানাও করা হয়। কিন্তু এই প্রকল্পটি জলাশয় ভরাট করে করা হয়নি বলে জানান অ্যাডভোকেট আহসানুল করিম।