বাসে অগ্নিসংযোগ ঠেকাতে জনগণের সহায়তা চায় র্যাব
অবরোধ ও হরতালকে কেন্দ্র করে রাজধানীসহ সারা দেশে বাসে অগ্নিসংযোগ ঠেকাতে সাধারণ জনতা ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সহায়তা চেয়েছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। আজ মঙ্গলবার (৭ নভেম্বর) দুপুরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ আহ্বান জানান র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।
খন্দকার আল মঈন বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর একার পক্ষে এই দুষ্কৃতকারীদের সার্বক্ষণিক নজরদারিতে রেখে আইনের আওতায় নিয়ে আসা অনেকটা কষ্টসাধ্য। যে সংখ্যক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য রয়েছে সেটা তুলনামূলক অনেক কম। এই ক্ষেত্রে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি জনগণের জনসম্পৃক্ততার মাধ্যমে তাদের আইনের আওতায় আনা সম্ভব। এলাকাভিত্তিক যে জনপ্রতিনিধিরা রয়েছেন বা দেশে যারা সম্মানিত নাগরিক রয়েছেন তারা যদি সবাই সম্মিলিতভাবে কাজ করেন এবং সহযোগিতা করেন, তাহলে আমি মনে করি—এসব দুষ্কৃতকারীকে শনাক্ত করা সহজ হবে।’
খন্দকার আল মঈন আরও বলেন, দুষ্কৃতকারীরা যানবাহনে আগুন দেওয়ার ক্ষেত্রে নির্জন এলাকা বেছে নেয়। এ সময় তারা মোটরসাইকেল ব্যবহার করে অথবা কোনো দ্রুতযান ব্যবহার করে যানবাহনে অগ্নিসংযোগ করে দ্রুততম সময়ের মধ্যে সেখান থেকে পালিয়ে যায়। কিছু কিছু ক্ষেত্রে রাজধানী ঢাকা বা এর আশপাশের এলাকায় বিভিন্ন অলিগলি থেকে দুষ্কৃতকারীরা বের হয়ে যানবাহনে অগ্নিসংযোগ করছে। এসব অগ্নিসংযোগ ও চোরাগোপ্তা হামলা থেকে যানবাহনের নিরাপত্তা দেওয়া বা দেশের মানুষকে নিরাপত্তা দিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সর্বদা সতর্ক অবস্থায় রয়েছে, পাশাপাশি গোয়েন্দারাও কাজ করছে।
যারা যানবাহনে অগ্নিসংযোগ করেছে এই দুষ্কৃতকারীদের সিসি ক্যামেরা বিশ্লেষণ করে ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশিত ভিডিও ফুটেজ থেকে তথ্য নিয়ে শনাক্ত করে আইনের আওতায় নিয়ে আসা হচ্ছে বলেও জানান এই কর্মকর্তা।
খন্দকার আল মঈন বলেন, দুষ্কৃতকারীদের বিরুদ্ধে অভিযানের পরও অজ্ঞাত কিছু দুষ্কৃতকারী অগ্নিসংযোগ করে যাচ্ছে। দেশের জনগণের জানমালের ক্ষতিসাধন করে যাচ্ছে।
পরিবহণ মালিক ও শ্রমিকদের উদ্দেশে খন্দকার আল মঈন বলেন, ‘পরিবহন মালিক, শ্রমিকেরা বা সম্মানিত নাগরিকেরা যাঁরা রয়েছেন তাদেরকে আমরা অনুরোধ করব, আপনাদের গাড়ি যখন মহাসড়কে বা সড়কে চলছে না এই সময়গুলোতে আপনাদের গাড়িগুলো নিরাপদে রাখুন। কোনো নির্জন স্থানে গাড়ি রাখবেন না। বাসস্ট্যান্ড বা জনগণ রয়েছে এমন স্থানে গাড়ি পার্কিং করুন। পাশাপাশি সম্মিলিতভাবে যেখানে নিজেদের সিকিউরিটির লোক রাখতে পারবেন এ রকম স্থানে আপনারা আপনাদের যানবাহন রাখবেন। এ ছাড়া আপনারা কোনো একটি জায়গা নির্বাচন করে বেশ কিছু গাড়ি একসঙ্গে রাখছেন সেটা বাসস্ট্যান্ড বা অন্য কোথাও হতে পারে। সে ক্ষেত্রে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরাও নিরাপত্তা দিতে প্রস্তুত রয়েছে।’
বাসে বা গণপরিবহনে সন্দেহভাজন যাত্রীদের ছবি তুলে রাখার পরামর্শ দিয়ে র্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, ‘মোবাইল ফোনের মাধ্যমে যারা যাত্রীবেশে গাড়িতে ওঠে বা বিভিন্ন সময়ে আপনারা যাদের সন্দেহ করছেন তাদের ছবি তুলে রাখবেন। এ ছাড়া যারা অগ্নিসংযোগ করতে আসে তাদেরকে যদি আপনারা ধরতে নাও পারেন, তাদের ছবি তুলে রাখার চেষ্টা করবেন, যাতে করে পরবর্তীতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দ্রুততম সময়ের মধ্যে আইনের আওতায় নিয়ে আসতে পারে।’