মাতারবাড়ী তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রের উদ্বোধন শনিবার
মাতারবাড়ী কয়লাভিত্তিক তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রের উদ্বোধন আগামী শনিবার (১১ নভেম্বর)। এটি উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজ মঙ্গলবার বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মকর্তারা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের প্রয়োজনীয় সব প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে জানিয়েছেন তিনি।
সরকারি সূত্রে জানা গেছে, জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সির (জাইকা) অর্থায়নে ১২০০ মেগাওয়াট আল্ট্রা সুপার ক্রিটিক্যাল প্রযুক্তিভিত্তিক অন্যতম বৃহৎ বিদ্যুৎ প্রকল্পের প্রথম ইউনিট (৬০০ মেগাওয়াট) চলতি বছরের ২৯ জুলাই জাতীয় গ্রিডের সঙ্গে সংযুক্ত করা হয়েছে।
বিদ্যুৎ বিভাগের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, ‘এখন প্রকল্পের দ্বিতীয় ইউনিটটি সংযুক্ত করা হচ্ছে।’
কক্সবাজার জেলার মহেশখালী উপজেলার মাতারবাড়ী ও ধলঘাটা ইউনিয়নে এক হাজার ৪১৪ একর জমির ওপর রাষ্ট্রায়ত্ত্ব বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) অঙ্গপ্রতিষ্ঠান কোল পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি বাংলাদেশ লিমিটেড (সিপিজিসিএল) দুটি ইউনিট বিশিষ্ট এত হাজার ২০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্রটি স্থাপন করেছে।
জাইকা এই প্রকল্পে অর্থায়ন করছে। এই প্রকল্পের আওতায় জাহাজ থেকে কয়লা খালাসের সুবিধার্থে একটি গভীর সমুদ্র বন্দরও নির্মাণ করা হচ্ছে। বিদ্যুৎকেন্দ্রের সঙ্গে কয়লা খালাসের জন্য জেটির কাজ প্রায় শেষ। জেটিতে জাহাজও চলাচল শুরু করেছে।
সূত্র জানায়, প্রধানমন্ত্রী বিদ্যুৎ কেন্দ্রের পাশাপাশি গভীর সমুদ্র বন্দরও উদ্বোধন করবেন।
পূর্ণ সক্ষমতার বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য প্রতিদিন ১৩ হাজার ১০৪ টন কয়লার প্রয়োজন হবে। এর জন্য কয়লা সরবরাহ জেটি এবং সাইলো (বিশাল সিলিন্ডার) নির্মাণ করা হয়েছে।
৬০ দিনের জন্য প্রয়োজনীয় কয়লা বিশাল সাইলোতে রাখা হয়েছে। ৮০ হাজার টন ধারণক্ষমতাসম্পন্ন জাহাজ সরাসরি কয়লা জেটিতে প্রবেশ করতে পারে। আর জাহাজ থেকে কয়লা খালাস করতে সময় লাগবে দেড় থেকে দুদিন।
বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ২৫ বছর আজীবন ছাই সংরক্ষণের জন্য দুটি পৃথক অ্যাশপন্ড রাখা হয়। একটির আয়তন ৯০ একর, অন্যটির আয়তন ৬০০ একর। কয়লা সংরক্ষণের জন্য ৮০ একর জমিতে কয়লা ইয়ার্ড প্রস্তুত করা হয়েছে।
২০১৪ সালের ১৬ জুন বাংলাদেশ সরকার ও জাইকার মধ্যে এ প্রকল্পের জন্য একটি ঋণ চুক্তি সই হয়। প্রকল্পটির ব্যয় ধরা হয়েছিল ৫১ হাজার ৮০০ কোটি টাকা। এর মধ্যে জাইকার সহায়তা রয়েছে ৪৩ হাজার ৯২১ কোটি টাকা।
প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে, ইতোমধ্যে জেটি নির্মাণ ও ভৌত অবকাঠামোর কাজ শেষ হয়েছে।
সিপিজিসিএলের কর্মকর্তারা জানান, পরিবেশ দূষণ রোধে প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নিশ্চিত করে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হয়েছে।
মাতারবাড়ী বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য ৬৪ হাজার ৩০০ টন কয়লা নিয়ে ইন্দোনেশিয়া থেকে একটি জাহাজ প্রথম আসে চলতি বছরের ২৩ জুন।