ধ্বংসাত্মক কাজ করলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা : স্থানীয় সরকারমন্ত্রী
স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম বলেছেন, “নির্বাচনে না এসে কোন দল ধ্বংসাত্মক কাজ করার চেষ্টা করলে, রাষ্ট্রের প্রচলিত আইন অনুযায়ী তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। সংবিধান অনুযায়ী দেশ পরিচালিত হয়, দেশের জনগণের স্বার্থে রাষ্ট্রকে তার লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছে দেওয়ার জন্য নির্বাচন অপরিহার্য। সাংবিধানিক বাধ্য বাধকতা থাকার কারণে নির্বাচন যথা সময়ে অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য সকল রাজনৈতিক দলের স্বাধীনতা আছে। নির্বাচন কমিশন সকল দলকে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার আহ্বান জানিয়েছে। কোন দল যদি অংশগ্রহণ না করে অন্যরকম ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ড করার চেষ্টা করে, তাহলে প্রচলিত আইন অনুযায়ী তাদের বিরদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”
আজ শনিবার (১১ নভেম্বর) সকালে হবিগঞ্জ পৌর মহাশ্মশানঘাট এলাকায় জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর কর্তৃক বাস্তবায়িত পৌর পানি লৌহ দূরীকরণ প্রকল্প-৩ এর উদ্বোধন শেষে উন্নয়ন ও শান্তি সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপি সরকার ক্ষমতায় থাকাকালে দেশ ও বিদ্যুতের উন্নয়ন নিয়ে কোন চিন্তা করেনি। কিন্তু আওয়ামী লীগ সরকার দেশের উন্নয়নের বিপ্লব ঘটিয়েছে। বিদ্যুতের ব্যাপক উন্নয়ন করেছে। শেখ হাসিনা সরকারের নেতৃত্বে দেশে উন্নয়নের জোয়ার বইছে।’
স্থানীয় সরকারমন্ত্রী আরও বলেন, ‘স্বাধীনতা যুদ্ধ থেকে শুরু করে আমরাও বিভিন্ন সময় আন্দোলন করেছি। কিন্তু কখনও পুলিশ হত্যা করিনি। বিএনপি-জামায়াত কি নির্মমভাবে পুলিশকে পিটিয়ে হত্যা করেছে সেটি দেশবাসী দেখেছে। আওয়ামী লীগ শান্তি চায় আর বিএনপি হত্যা ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে ক্ষমতায় যেতে চায়। দেশের জনগণ আওয়ামী লীগকে বিশ্বাস করে ও ভালবাসে।’
উন্নয়ন ও শান্তি সমাবেশের পূর্বে মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম জেলা পরিষদের অর্থায়নে নবনির্মিত জেলা পরিষদ ডাক বাংলোর উদ্বোধন করেন। পরে দুপুরে তিনি হবিগঞ্জ-বানিয়াচং আর এন্ড এইচ রোড থেকে প্রতাপপুর সড়ক ও একই সড়কে নবনির্মিত চেইনেজ ৮৪ মিটার দীর্ঘ পিএসসি গার্ডার ব্রিজের উদ্বোধন ও স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর কর্তৃক নির্মিত বানিয়াচং উপজেলা পরিষদের নবনির্মিত প্রশাসনিক ভবনের উদ্বোধন শেষে জনসভায় যোগদান করেন।
স্থানীয় সরকারমন্ত্রী এ সময় বিএনপি শাসনামলের তুলনামূলক চিত্র তুলে ধরে বলেন, ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার আগে দেশে বিদ্যুৎ উৎপাদন হত মাত্র ১১০০ মেগাওয়াট। মানুষ তখন লোডশেডিংয়ের জ্বালায় অস্থির হয়ে বলতো বিদ্যুৎ যায় না, মাঝে মাঝে আসে। দেশের শিল্প উৎপাদন কৃষি উৎপাদন প্রচন্ডভাবে ব্যাহত হচ্ছিল। কৃষক বিদ্যুৎ ও সারের দাবিতে আন্দোলন করতে গিয়ে গুলি খেয়ে মরেছে। আর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বের ফলে বিগত ১৫ বছরে বাংলাদেশে কোন কৃষক বিদ্যুৎ বা সারের দাবিতে আন্দোলন করার প্রয়োজন পড়েনি। আজকের বাংলাদেশ শতভাগ বিদ্যুতায়নের দেশ যা এক সময় কল্পনাও করা যেত না।
তাজুল ইসলাম এ সময় ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নের সুবিধার কথা উল্লেখ করে বলেন, আজকে গ্রামের কিংবা পাহাড়ি দুর্গম এলাকার একটি ছেলে অথবা মেয়ে প্রযুক্তিগত দক্ষতার মাধ্যমে ঘরে বসে ফ্রিল্যান্সিং এর মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করতে পারছে। এটি সম্ভব হয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বের ফলে। অথচ বিএনপি তাদের শাসনামলে যখন ফ্রি সাবমেরিন কেবল সংযোগের মাধ্যমে দেশকে বহির্বিশ্বের সাথে যুক্ত করার সুযোগ পেয়েছিল; সে সুযোগ গ্রহণ না করায় আমরা প্রযুক্তিগত দক্ষতা অর্জনে পিছিয়ে পড়ি। বিএনপি সব সময় দেশকে পিছনের দিকে টেনে নিতে চায়। আর আওয়ামী লীগ চায় দেশকে সামনের দিকে অগ্রসর করতে। যার প্রমাণ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিগত ১৫ বছর ধরে দিয়ে যাচ্ছেন।
হবিগঞ্জ পৌরসভার মেয়র আতাউর রহমান সেলিমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে প্রধান বক্তা ছিলেন হবিগঞ্জ-৩ আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট মো. আবু জাহির। বিশেষ অতিথি ছিলেন হবিগঞ্জ-২ আসনের সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট আব্দুল মজিদ খান, সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী ও হবিগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মো. আলমগীর চৌধুরী।