শান্তিপূর্ণ আন্দোলনকে সহিংস হিসেবে উপস্থাপনের অপচেষ্টা চলছে : নুর
গণ-অধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর বলেছেন, বিরোধী দলগুলোর শান্তিপূর্ণ আন্দোলনকে দেশ-বিদেশে সহিংস হিসেবে উপস্থাপনের অপচেষ্টা চলছে। এ লক্ষ্যে ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মী ও এজেন্সি দিয়ে সহিংসতা করাচ্ছে সরকার। বিরোধী দলগুলোর চতুর্থ দফায় ডাকা ৪৮ ঘণ্টার অবরোধের শেষ দিন আজ সোমবার (১৩ নভেম্বর) বিক্ষোভ মিছিল শেষে এক সমাবেশে তিনি এ কথা বলেন।
গণঅধিকার পরিষদ আজ দুপুরে পুরানা পল্টন আল রাজী কমপ্লেক্সের সামনে থেকে মিছিল শুরু করে। পরে বিজয়নগর মোড়ে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে গিয়ে শেষ হয়।
সংক্ষিপ্ত সমাবেশে আওয়ামী লীগকে উদ্দেশ করে নুর বলেন, ‘আপনারা ১৪ এবং ১৮ সালের মতো পাতানো নির্বাচন করতে পারবেন না। আপনারা গত দুটি নির্বাচনে জনগণের সাথে বেঈমানি করেছেন, প্রতারণা করেছেন। জনগণ আপনাদের বিশ্বাস করে না। অনতিবিলম্বে পদত্যাগ করুন, পদত্যাগ করে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করুন।’
নুর আরও বলেন, ‘সরকারের পদত্যাগ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবিতে বিরোধী দলগুলোর শান্তিপূর্ণ আন্দোলনকে দেশ-বিদেশে সহিংস হিসেবে দেখাতে সরকারি দলের নেতাকর্মী তাদের এজেন্সির লোকদের দিয়ে সরকার সহিংসতা করাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীকে বলতে বলতে চাই, আপনি নয়ছয় করে এবার পার পাবেন না।’
ইসির উদ্দেশে গণ অধিকারনেতা বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনকে বলতে চাই, রাজনৈতিক সমঝোতা ছাড়া তফশিল তফশিল নাটক করলে পরিস্থিতি ভালো হবে না। আপনারা তফসিল ঘোষণা করে বাসায় ফিরতে পারবেন না, আমরা জনগণকে নিয়ে রাজপথে প্রতিহত করব।’
গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খাঁন বলেন, ‘আমরা আওয়ামী লীগের টানা ১৭৩ দিনের হরতালের ইতিহাস ভুলে যায়নি। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে তারা সহিংস আন্দোলন করেছে, বাস- ট্রাক পুড়িয়েছে, রেললাইন তুলে ফেলেছে, অসংখ্য মানুষকে হত্যা করেছে। ২০০৬ সালে তারা লাশের ওপর নৃত্য করেছে, ২০০৪ সালে সেরাটনের সামনে গান পাউডার দিয়ে ১১ জন মানুষ পুড়িয়ে হত্যা করেছে। আর আজকে তারা বলে হরতাল-অবরোধ সহিংস কর্মসূচি। আমরা শান্তিপূর্ণভাবে হরতাল অবরোধের সমর্থনে বিক্ষোভ মিছিল- সমাবেশ করছি, সহিংসতা করছি না। দাবি আদায় না হওয়ার আগ পর্যন্ত শান্তিপূর্ণভাবে আমাদের আন্দোলন চলবে।’
গণ-অধিকার পরিষদের উচ্চতর পরিষদের সদস্য ফাতিমা তাসনিম বলেন, ‘ভোট আমাদের অধিকার, নিরাপদ জীবন আমাদের অধিকার। কিন্তু আওয়ামী লীগ জনগণের ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়েছে, মানুষের জীবনের আজ কোনো নিরাপত্তা নেই। সরকারের বিরুদ্ধে কথা বললেই মামলা, খুন এবং গুম হতে হয়। আজকে মানুষের বাকস্বাধীনতা নেই, অধিকার বঞ্চিত দেশ। আর আমরা জনমানুষের অধিকার ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য আন্দোলন করে যাচ্ছি। যতদিন জনগণ তাদের অধিকার ফিরে না পাবে ততদিন আমরা রাজপথে থাকব।’
এ সময় উপস্থিত ছিলেন গণ-অধিকার পরিষদের উচ্চতর পরিষদের সদস্য আবু হানিফ, শাকিল উজ্জামান,শহিদুল ইসলাম ফাহিম, ফাতিমা তাসনিম, আব্দুজ জাহের, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাসান আল মামুন,রবিউল হাসান, ঢাকা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক তোফাজ্জল হোসেন, কুমিল্লা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মুরাদ হোসেন,সহ দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও সামাজিক নিরাপত্তা সহ সম্পাদক হেলেনা আক্তার, সহস্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক সাইফুল ইসলাম, মহানগর উত্তরের সভাপতি মিজানুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক আব্দুুর রহিম, দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক নুরুল করিম শাকিল,যুব পরিষদের সভাপতি মনজুর মোর্শেদ মামুন, সাধারণ সম্পাদক নাদিম হাসান, সাংগঠনিক সম্পাদক মুনজাজুল ইসলাম, ছাত্র অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক আরিফুল ইসলাম আদীব, শ্রমিক অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সোহেল রানাসহ বিভিন্নস্তরের নেতাকর্মীরা।