দলের সাইনিং অথরিটি চেয়ারম্যান অথবা মহাসচিব : ইসি
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে জাতীয় পার্টির (জাপা) দলীয় প্রার্থী মনোনয়ন দেওয়া এবং জোটবদ্ধ হয়ে নির্বাচন করার বিষয়ে দলটির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু ও প্রধান পৃষ্ঠপোষক রওশন এরশাদ নির্বাচন কমিশনে আজ শনিবার (১৮ নভেম্বর) আলাদা দুটি চিঠি দিয়েছেন। রওশন এরশাদের চিঠিতে বলা হয়েছে, জোটবদ্ধভাবে নির্বাচনে অংশ নেবে জাতীয় পার্টি। অপরদিকে জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু স্বাক্ষরিত চিঠিতে বলা হয়, পার্টির ক্ষমতাপ্রাপ্ত ব্যক্তি হিসেবে দলের প্রার্থী ও প্রতীক বরাদ্দ করবেন দলের চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের।
নির্বাচন কমিশনে দেওয়া রওশন এরশাদ স্বাক্ষরিত চিঠিতে বলা হয়, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোটের শরিক দল হিসেবে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এটা হবে শুধু নির্বাচনি জোট। জাতীয় পার্টির মনোনীত প্রার্থীরা দলীয় প্রতীক লাঙ্গল কিংবা প্রার্থীর ইচ্ছানুসারে মহাজোটে জোটবদ্ধ হয়ে নির্বাচন করতে পারবেন।
এ দুটি চিঠির বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথের কাছে জানতে চাওয়া হয়। প্রশ্ন করা হয়, জাতীয় পার্টি থেকে দুটি চিঠি এসেছে। জাতীয় পার্টির মহাসচিব স্বাক্ষরিত চিঠিতে বলা হয়েছে, দলের চেয়ারম্যান জিএম কাদেরের স্বাক্ষরে প্রার্থীকে মনোনয়ন দেওয়া হবে। আর রওশন এরশাদ চিঠিতে বলেছেন, তারা মহাজোটের অংশ হিসেবে আওয়ামী লীগের সঙ্গে জোটবদ্ধ হয়ে ভোট করবেন। এমন প্রশ্নের উত্তরে ইসির অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ বলেন, ‘বিষয়টি কমিশন দেখবে। চিঠি দুটি এসেছে। এগুলো কমিশনে উত্থাপন করা হবে। কমিশন যেটা আমলে নেয়।’
সাধারণত দলের সাইনিং অথরিটি কীভাবে হয়? জানতে চাইলে অশোক কুমার বলেন, ‘সাধারণত দলের চেয়ারম্যান অথবা সাধারণ সম্পাদক বা মহাসচিব সাইনিং অথরিটি হয়।’
রওশন এরশাদের চিঠি জমা দেন তার মুখপাত্র দাবি করা কাজী মামুনুর রশীদ। জমা দেওয়ার সময় তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘জাতীয় পার্টি প্রধান উপদেষ্টা ও বিরোধী দলীয় নেতা আজকে নির্বাচন কমিশনের আহ্বানে সাড়া দিয়ে স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছেন, তার দল জাতীয় পার্টি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে।’
অপর এক প্রশ্নের জবাবে কাজী মামুনুর রশীদ বলেন, জাতীয় পার্টির অন্যকোনো অংশ বলতে কিছুই নাই। সংসদের বিরোধী দলীয় নেতা ও প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের স্ত্রী রওশন এরশাদই জাতীয় পার্টি। তিনি যেখানে আছেন সেটাই মূলত জাতীয় পার্টি।
মনোনয়ন কার স্বাক্ষরে হবে, চেয়ারম্যান নাকি বিরোধী দলীয় নেতা? এ প্রশ্নের জবাবে কাজী মামুনুর রশীদ বলেন, বিরোধী দলীয় নেতা জাতীয় পার্টির যিনি প্রধান পৃষ্ঠপোষক এবং সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির যিনি কনভেনার তিনিই স্বাক্ষর করবেন। কারণ আমাদের গঠনতন্ত্রে বলা আছে প্রধান পৃষ্ঠপোষক দলের সর্বময় ক্ষমতা এবং কর্তৃত্ব সম্পন্ন।
কাজী মামুনুর রশীদ বলেন, বিরোধী দলীয় নেতার বাসায় গতকাল রাতে সিদ্ধান্ত হয়েছে যে, জাতীয় পার্টি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে। জিএম কাদেরও এই নির্বাচনে নিশ্চয়ই অংশগ্রহণ করবেন। আর না হলে উনি রাজনীতি থেকে হারিয়ে যাবেন।
উল্লেখ্য, ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে জাতীয় পার্টি থেকে দলটি চেয়ারম্যান ও প্রধান পৃষ্ঠপোষকের পক্ষ থেকে আলাদা আলাদা প্রার্থীকে মনোনয়ন দেওয়া হয়। পরে কমিশন দলটির চেয়ারম্যান জিএম কাদের মনোনীত প্রার্থীকে বৈধ প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা দেয়।