সহিংসতার আন্তর্জাতিক তদন্ত চেয়ে বিভিন্ন দূতাবাসে বিএনপির চিঠি
ঢাকায় গত ২৮ অক্টোবর মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে সহিংস ঘটনা থেকে শুরু করে চলমান হরতাল-অবরোধে অগ্নিসংযোগ, ভাঙচুর, বিস্ফোরণ ও গুপ্তহত্যার বিবরণ তুলে ধরে বাংলাদেশে অবস্থানরত বিভিন্ন দেশের দূতাবাসে চিঠি দিয়েছে বিএনপি। চিঠিতে এসব ঘটনার আন্তর্জাতিক তদন্ত চেয়েছে দলটি।
বাংলাদেশে অবস্থিত বিভিন্ন দূতাবাস ও কূটনৈতিক মিশনে পাঠানো এ চিঠিতে বিএনপি চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি, অগ্নিসংযোগ ও সংঘাত নিয়ে ক্ষমতাসীন দলকে দায়ী করে বিস্তারিত বলা হয়েছে। সেই সঙ্গে চলমান গুম, খুন ও সহিংসতার বিষয়ে আন্তর্জাতিক তদন্ত দাবি করেছে দলটি।
এতে আরও বলা হয়েছে, সারা দেশে অগ্নিসন্ত্রাস-নাশকতার ঘটনা ক্ষমতাসীনরাই ঘটাচ্ছে। রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় দেশজুড়ে ভীতির রাজত্ব কায়েমের অশুভ উদ্দেশে প্রতিদিন নৈরাজ্যে লিপ্ত হচ্ছে আওয়ামী লীগের দুষ্কৃতকারীরা। তারা গণপরিবহণে অব্যাহতভাবে অগ্নিসংযোগ করছে আর আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নীরব দর্শকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে। জ্বালাও-পোড়াও করে অপরাধীরা খুব সহজে ঘটনাস্থল থেকে সটকে পড়ছে। অথচ প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে অধিকাংশ ঘটনা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উপস্থিতিতে বা বড় পুলিশ চেকপোস্টের কাছাকাছি ঘটছে।
চিঠিতে আরও বলা হয়, এসব অগ্নিসংযোগের ঘটনা প্রতিরোধে কিংবা প্রকৃত অপরাধীদের গ্রেপ্তারে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ইচ্ছাকৃত নিষ্ক্রিয়তা প্রমাণ করে, দেশজুড়ে চলমান নাশকতায় ক্ষমতাসীন অপশক্তি জড়িত। প্রকৃতপক্ষে আমাদের বিশ্বাস করার যথেষ্ট কারণ রয়েছে যে, আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসী বাহিনী ও তাদের আজ্ঞাবাহী পুলিশ সদস্যরা উদ্দেশ্যমূলকভাবে যানবাহনে আগুন ধরিয়ে দিচ্ছে। সামাজিক মাধ্যমে প্রচারিত বেশ কয়েকটি ভিডিও ফুটেজে চালক বা তাদের সহকারীদের বক্তব্যে স্পষ্ট- কীভাবে পুলিশ বা ছাত্রলীগ-যুবলীগের কর্মীরা তাদের বাসে আগুন দেওয়ার জন্য দায়ী।
উদাহরণ হিসেবে চিঠিতে গত ৬ নভেম্বর চট্টগ্রামের চাতরি চৌমুহনী বাজারে পুলিশ বক্সের কাছে, ৩১ অক্টোবর ঢাকার জাতীয় প্রেসক্লাবের কাছে, বাংলামোটর মোড়ে, ২৮ অক্টোবর কাকরাইলের কাছে বাসে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার ঘটনা এবং ৬ নভেম্বর চট্টগ্রামে একটি ট্রাকে আগুন দেওয়ার ঘটনায় ফেনীর স্থানীয় যুবলীগ নেতা নুরুল উদ্দিন টিপুকে হাতেনাতে গ্রেপ্তার ও ১৪ নভেম্বর নাটোরের তাশরীক জামান রিফাত নামে আওয়ামী লীগের কর্মীকে মুখোশসহ গ্রেপ্তারের পর ছেড়ে দেওয়ার ঘটনা তুলে ধরা হয়।
বিএনপি বলছে, বর্তমান সরকার ও নির্বাচন কমিশনের অধীনে নির্বাচনে যাবে না তারা। বরং রাজপথের আন্দোলন কর্মসূচি জোরদারের পাশাপাশি কূটনৈতিক তৎপরতা অব্যাহত রেখেছে তারা। এছাড়া কূটনীতিকদের সঙ্গে সম্পর্কোন্নয়নেও তারা গুরুত্ব দিচ্ছে।
এদিকে নির্বাচন কমিশনের ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন হতে যাচ্ছে।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান বলেন, ঢাকায় নিযুক্ত বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকদের সঙ্গে বিএনপি নেতৃবৃন্দের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে প্রায়ই বৈঠক হত। রাজনৈতিক বিষয়সহ বিভিন্ন বিষয় তাদের অবহিত করা হত। এরই ধারাবাহিকতায় গতকাল কোনো চিঠি দেওয়া হতে পারে। তবে আমার জানা নেই।