প্রতিবন্ধী জনগোষ্ঠীকে বাদ দিয়ে টেকসই উন্নয়ন সম্ভব নয় : রাষ্ট্রপতি
রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন বলেছেন, ‘প্রতিবন্ধিতা মানব বৈচিত্রেরই একটি রূপ, প্রতিবন্ধীরা আমাদের সমাজের অবিচ্ছেদ্য অংশ। আর এই বৈশিষ্ট্যের অধিকারী জনগোষ্ঠীকে বাদ দিয়ে টেকসই উন্নয়ন সম্ভব নয়।’
আজ রোববার (৩ ডিসেম্বর) আন্তর্জাতিক প্রতিবন্ধী দিবস ও জাতীয় প্রতিবন্ধী দিবস উপলক্ষে গতকাল শনিবার দেওয়া বাণীতে এসব কথা বলেন রাষ্ট্রপতি।
মো. সাহাবুদ্দিন বলেন, ‘সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় কর্তৃক ৩২তম আন্তর্জাতিক প্রতিবন্ধী দিবস ও ২৫তম জাতীয় প্রতিবন্ধী দিবস ২০২৩ উদযাপনের উদ্যোগকে আমি স্বাগত জানাই। দিবসটি উপলক্ষে আমি দেশের সব প্রতিবন্ধী ব্যক্তি, তাদের পরিবার এবং প্রতিবন্ধীদের কল্যাণে কর্মরত সংস্থা ও সংগঠনগুলোকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানাচ্ছি।’
রাষ্ট্রপতি বলেন, “প্রতিবন্ধী ব্যক্তি প্রকৃতিগতভাবেই বিশেষ গুণসম্পন্ন হয়ে থাকেন। তাই তাদের সক্ষমতাগুলোকে চিহ্নিত করে সঠিক পরিচর্যা ও উপযুক্ত প্রশিক্ষণ প্রদানের মাধ্যমে তাদেরকে সমাজ ও রাষ্ট্রের সম্পদে পরিণত করতে হবে। দিবসটির এ বছরের প্রতিপাদ্য ‘প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের সাথে সম্মিলিত অংশগ্রহণ, নিশ্চিত করবে এসডিজি অর্জন’ অত্যন্ত সময়োপযোগী এবং যথার্থ হয়েছে বলে আমি মনে করি।”
সরকার প্রতিবন্ধীদের কল্যাণে অত্যন্ত আন্তরিক উল্লেখ করে রাষ্ট্রপ্রধান বলেন, ‘এই জনগোষ্ঠীকে দক্ষ জনশক্তিতে রূপান্তরিত করতে সরকার সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়সহ মানবসম্পদ উন্নয়নের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর সহযোগিতায় বিভিন্ন উন্নয়ন পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করছে।’
রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘প্রতিবন্ধীদের জীবনমান উন্নয়নে সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচির আওতায় ভাতা, শিক্ষা উপবৃত্তি, সমন্বিত প্রতিবন্ধী শিক্ষা কার্যক্রম, বিশেষ শিক্ষা কার্যক্রম, থেরাপি সেবা সহায়তা প্রদান, ক্রীড়া কমপ্লেক্স নির্মাণসহ বিভিন্ন কর্মসূচি বাস্তবায়িত হচ্ছে। প্রতিবন্ধীদের সমাজের মূল স্রোতধারায় আনয়ন ও দেশের উন্নয়ন কার্যে সম্পৃক্ত করে তাদের জীবনমান উন্নয়ন, সম-অধিকার প্রতিষ্ঠা, স্বার্থ সুরক্ষা এবং তাদের সেবাসহ অন্যান্য কার্যক্রম বাস্তবায়নের লক্ষ্যে জাতীয় প্রতিবন্ধী উন্নয়ন ফাউন্ডেশন আইন, ২০২৩ প্রণয়ন করা হয়েছে।’
মো. সাহাবুদ্দিন বলেন, ‘আমি আশা করি, প্রতিবন্ধীদের কল্যাণে গৃহীত এসব কার্যক্রম বাস্তবায়নের ফলে ২০৩০ সাল নাগাদ জাতিসংঘ ঘোষিত টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনসহ ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে উন্নত ও সমৃদ্ধ দেশে উন্নীত করার পথ সুগম হবে।’
রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘প্রতিবন্ধীদের সুন্দর ও স্বাভাবিক পরিবেশে বেড়ে ওঠার সুযোগ দিতে হবে এবং তাদের মানসিক বিকাশে বিভিন্ন পারিবারিক ও সামাজিক অনুষ্ঠানে তাদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে। আমি প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জীবনমান উন্নয়নে সরকারের পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন, দেশি-বিদেশি সংস্থা ও সুশীল সমাজকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানাচ্ছি।’
৩২তম আন্তর্জাতিক প্রতিবন্ধী দিবস ও ২৫তম জাতীয় প্রতিবন্ধী দিবসের সব কর্মসূচির সাফল্য কামনা করেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন।