আওয়ামী রাজনীতি এখন ব্যবসা, যেখানে লোকসান নেই : রিজভী
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের রাজনীতি ব্যবসায় পরিণত হয়েছে অভিযোগ করে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ‘সাধারণ ব্যবসায়ীদের লোকসান হলেও আওয়ামী রাজনীতিবিদদের কোনো লোকসান নেই। আওয়ামী রাজনীতি এমন একটি ব্যবসা, যেখানে কোনো ঝুঁকি নেই এবং লোকসান হওয়ারও কোনো শঙ্কা নেই। তারা যে ব্যবসা করছে সেখানেই লাভ আর লাভ।’
ভার্চ্যুয়াল সংবাদ সম্মেলনে আজ বুধবার (১৩ ডিসেম্বর) বিকেলে রুহুল কবির রিজভী এসব কথা বলেন।
রিজভী বলেন, ‘একদলীয় পাতানো নির্বাচন উপলক্ষে তাদের মন্ত্রী-এমপি-ডামি-উচ্ছিষ্টভোগী স্বতন্ত্রদের হলফনামা পড়লে মনে হয় যেন আরব্য উপন্যাসের সেই বিখ্যাত আলাউদ্দিন চেরাগ পড়ছি। কারোটা দেখলে মনে হয় সাদ্দামের বেহেস্তে তারা বসবাস করছেন। তাদের বাড়ি-গাড়ি, বিদেশে অভিজাত এলাকায় তাদের অ্যাপার্টমেন্ট, তাদের ডুপ্লেক্স সব কিছু মিলেই মনে হয় যে, তারা সাদ্দামের বেহেস্তে বসবাস করছেন।’
বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব বলেন, ‘নিশিরাতের ভোট ডাকাত সরকারের ৫ বছর থেকে ১৫ বছরের মধ্যে মন্ত্রী-এমপি এবং তাদের নেতারা অর্থসম্পদের পাহাড় গড়ে তুলেছেন। অনেকে প্রায় কপর্দকহীন থেকে আঙুল ফুলে কলাগাছ নয়, বটগাছ হয়েছেন। তাদের স্ত্রী-সন্তান-শাশুড়িরাও টাকার কুমিরে পরিণত হয়েছেন। শেয়ারবাজারে তারা কেউ ক্ষতির মুখোমুখি হননি। কৃষি খামার ও মাছের ব্যবসাতেও বহুগুণ লাভ করেছেন। স্বামীদের ব্যবসা দেখাশোনা করতে গিয়ে স্ত্রীরাও কোটি কোটি টাকার মালিক হয়েছেন।’
রিজভী বলেন, ‘হলফনামা ধরে সংবাদপত্রে প্রার্থীদের সম্পদের যে বিবরণ প্রকাশিত হচ্ছে তা দেখে জনগণের চক্ষু চড়কগাছের অবস্থা। একেকজনের সম্পদ ২০০ গুণ, ৩০০ গুণ, ৪০০ গুণ ৫০০ গুণ; কেউ আবার পাঁচ বছরে ৭০০ গুণ সম্পদের মালিক হয়েছেন। অবস্থা এমন হয়েছে যে টাকার পাহাড়ে ঘুমান মন্ত্রী–এমপি ও নেতারা। যারা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন তাদের প্রায় সকলেরই নগদ অর্থ ও সম্পদ দ্বিগুণ থেকে প্রায় হাজার গুণ স্ফীত হয়েছে।’
আওয়ামী জাদুর কাঠির ছোঁয়ায় কারো হয়েছে সম্পদের পাহাড়… কারো গাড়ির বহর হয়েছে উল্লেখ করে বিএনপির শীর্ষ স্থানীয় এই নেতা বলেন, ‘১০ বছর আগে যে মন্ত্রীর হলফনামায় বার্ষিক আয় ছিল হাজারের ঘরে, তিনিও এখন কোটি কোটি টাকার মালিক। অবৈধ অর্থ, পাচারকৃত অর্থ, সেকেন্ড হোম, বিদেশি গচ্ছিত বেশুমার সম্পদের হিসেব নেই। যারা আওয়ামী লীগ করেন তাদের ব্রতই যেন লুটপাট করে অবৈধ সম্পদের পাহাড় গড়া। লুটেরা রাজ্যের সম্পদের ছিটেফোঁটা হলফনামায় উঠে এসেছে।’
রিজভী আরও বলেন, ‘এসব অর্থ-সম্পদের বিষয়ে দুর্নীতি দমন কমিশন একেবারেই নিরব, অন্ধ। তারা প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে বিরোধীদলের ওপর তরবারি নিয়ে দৌঁড়াতে থাকে। আর আওয়ামী লুটেরা গোষ্ঠীর সস্পর্কে তারা নিবর, নিশ্চুপ। তখন তাদের চোখ অন্ধ কয়ে যায়। দুদককে দলকানা প্রতিষ্ঠানে পরিণত করা হয়েছে।’
রিজভী জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের ৩৪০ জনের অধিক নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আর ৯ মামলায় ৯২৮ জনের অধিক নেতাকর্মীকে আসামি করা হয়েছে।