পুলিশি বাধার মধ্যেও বিএনপির বিজয় দিবস পালন
গাজীপুরে পুলিশের বাধায় মাইক ছাড়াই নগরীর রাজবাড়ি রোডে দলীয় কার্যালয়ে বিজয় দিবসের অনুষ্ঠান করেছে বিএনপি। আজ শনিবার (১৬ ডিসেম্বর) বিজয় দিবসের অনুষ্ঠান করতে গিয়ে পুলিশের বাধার মুখে পড়ে তারা।
অনুষ্ঠানের আগে গতকাল রাতে সদর মেট্রো থানা বিএনপির সাবেক সভাপতি গাজীপুর সিটি করপোরেশেনের কাউন্সিলর হাসান আজমল ভুইয়াসহ বিএনপির ৪২ নেতাকর্মীকে আটক করে পুলিশ।
আজ বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা সাবেক সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা হাসান উদ্দিন সরকার বলেন, আমরা পিণ্ডির জিঞ্জির থেকে মুক্ত হয়ে এখন দিল্লির শৃঙ্খলে বন্দি। যে লক্ষ্যে আমরা বিজয় অর্জন করেছিলাম, সেই লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যের সঙ্গে আওয়ামী লীগ বিশ্বাসঘাতকতা করেছে। বহু রক্তের বিনিময়ে পিণ্ডির জিঞ্জির থেকে মুক্ত হলেও বর্তমানে অত্যন্ত সুকৌশলে দিল্লির শৃঙ্খলে আমাদের বন্দি করা হচ্ছে।
হাসান সরকার আরও বলেন, বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রবক্তা সাবেক প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে এনে রাজনীতি করার সুযোগ করে দিয়েছিলেন। শেখ হাসিনা এর প্রতিদান হিসেবে গণতন্ত্রকে হত্যা করেছেন, জিয়াউর রহমানের সহধর্মিণী বেগম খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলায় কারাগারে বন্দি করেছেন। জিয়াউর রহমানের সুযোগ্য সন্তান তারেক রহমানকে দেশান্তর এবং আরাফাত রহমান কোকোকেও দেশান্তর করে মৃত্যু ত্বরান্বিত করেছেন।
হাসান সরকার আরও বলেন, শেখ হাসিনা দেশে ফেরার আগে ভারতে অবস্থানকালে ব্রেন এমনভাবে ওয়াশ করা হয়েছে, যাতে তিনি কখনই দেশকে ভালো না বাসেন। তিনি নিজেও বলেছিলেন, ক্ষমতায় এসেছেন পিতার মৃত্যুর প্রতিশোধ নিতে, রাষ্ট্রক্ষমতার জন্য নয়। শেখ হাসিনা এখন সেই প্রতিশোধ নিতে গিয়ে গোটা দেশকে কারাগারে পরিণত করেছেন। হামলা-মামলা, গ্রেপ্তার, গুম-খুনে মেতে উঠেছেন। দুর্নীতি, দুঃশাস এবং লাগামহীন দ্রব্যমূল্যে মানুষের জীবন না চললেও শেখ হাসিনার কিছু আসে যায় না।
আজ সকালে দলীয় কার্যালয় প্রাঙ্গণে মহানগর বিএনপি আয়োজিত আলোচনা ও দোয়া মাহফিলে সভাপতিত্ব করেন মহানগর বিএনপির সাবেক সহসভাপতি গাজীপুর বারের সবাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট ড. সহিদউজ্জামান।
মহানগর বিএনপির সাবেক প্রকাশনা সম্পাদক আজিজুল হক রাজু মাস্টারের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন গাজীপুর পৌরসভার সাবেক ভারপ্রাপ্ত মেয়র বিএনপিনেতা আব্দুল করিম, বীর মুক্তিযোদ্ধা এস কে জবিউল্লাহ, তাজুল ইসলাম বেপারী, আব্দুস সাত্তার, নবীন হোসেন, মনির হাসেন, আনোয়ার হোসেন সরকার, আতিক উল্লাহ মিন্টু, নাজমুল আলম মিন্টু প্রমুখ।
হাসান সরকার বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে মাইক ব্যবহারের অনুমতি না দেওয়া এবং অনুষ্ঠানের আগের রাতে ৪২ জন দলীয় নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তারের নিন্দা জানিয়ে বলেন, মিথ্যা ও খারাবি দিয়ে রাজনীতি করা যায় না। এমন কিছু করবেন না, যাতে মৃত্যুর পর মানুষ আপনার কবরের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় কবর দেখে থুতু দেয়। বরং কবর দেখে মানুষ যাতে দু হাত তুলে দোয়া করে—এমন কিছু করে যাওয়া উচিত।
হাসান সরকার আর বলেন, ১৫ বছর আগে কার কী ছিল আমরা সবাই জানি। বর্তমানে স্থানীয় সংসদ সদস্যের চাচারও বিদেশে বাড়ি আছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, তারা বিগত দিনে এতই দুর্নীতি করেছে এবং সমাজটাকে এমনভাবে কলুষিত করেছে যার ফলে স্বতন্ত্রপ্রার্থীদের জোয়ার সৃষ্টি হয়েছে।