আ.লীগের নির্বাচনি ট্রেনে দুর্নীতিবাজ-লুটেরা-দালাল ছাড়া যাত্রী নেই : এবি পার্টি
আওয়ামী লীগের নির্বাচনি ট্রেনে দুর্নীতিবাজ, লুটেরা ও দালাল ছাড়া অন্য যাত্রী নেই বলে মন্তব্য করেছেন আমার বাংলাদেশ পার্টির (এবি পার্টি) নেতারা। তারা বলেছেন, এই ট্রেন খুব শিগগির লাইনচ্যুত হবে। আরও বলেছেন, এই নির্বাচন দেশকে শান্তি ও স্থিতিশীলতার দিকে না নিয়ে বাকশালের অন্ধকার গর্তে নিয়ে ফেলবে।
রাজধানীর বিজয়নগরের দলীয় কার্যালয় থেকে আজ শনিবার (২৩ ডিসেম্বর) বিকেল ৩টায় শুরু হওয়া ‘প্রহসনের নির্বাচন বর্জনে প্রচার ও উদ্বুদ্ধকরণ পদযাত্রা’য় এসব কথা বলেন এবি পার্টির নেতারা।
পদযাত্রা বিজয়নগর, কাকরাইল, পল্টনসহ রাজধানীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে বিজয়-৭১ চত্বরে এসে সমাবেশে মিলিত হয়। এতে বক্তব্য দেন এবি পার্টির যুগ্ম আহ্বায়ক অধ্যাপক ডা. মেজর (অব.) আব্দুল ওহাব মিনার, সদস্যসচিব মজিবুর রহমান মঞ্জু, যুগ্ম সদস্যসচিব ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ, জ্যেষ্ঠ সহকারী সদস্যসচিব আনোয়ার সাদাত টুটুল ও যুবপার্টির আহ্বায়ক এ বি এম খালিদ হাসান প্রমুখ।
মেজর অব. আব্দুল ওহাব মিনার বলেন, ‘বর্তমান সরকার জনগণের ভোটাধিকারকে পদদলিত করে একটি প্রহসনের নির্বাচন করার নীল নকশা বাস্তবায়ন করতে যাচ্ছে। জনগণের সঙ্গে সম্পৃক্তহীন আওয়ামী লীগের একদলীয় নির্বাচনী ট্রেন পুরো দেশকে নিয়ে খুব শিগগিরই লাইনচ্যুত হবে। দুর্নীতিবাজ, লুটেরা ও কতিপয় দালাল ছাড়া এই নির্বাচনি ট্রেনে অন্যকোন যাত্রী নেই, তাই এই নির্বাচন দেশকে শান্তি ও স্থিতিশীলতার দিকে না নিয়ে বাকশালের অন্ধকার গর্তে নিয়ে ফেলবে।’ তিনি বলেন, আমরা জনগণকে আহ্বান জানাই, আপনারা এই নাটকের নির্বাচন বর্জন করুন। কেউ ভোট কেন্দ্রে গিয়ে এই অবৈধ নির্বাচনে অংশ নেবেন না।’
মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেন, ‘বাজারে গিয়ে নিজের পছন্দসই সওদা কিনতে আমরা যাচাই-বাছাই করি এবং পছন্দমতো মাছ, গোস্ত, ডিম ইত্যাদি কিনি। কোনো দোকানদার আমাদেরকে তার পছন্দসই জিনিস কিনতে বাধ্য করে না। যদি সেরকম কেউ করে বা করতে চায়, আমরা সে দোকান থেকে মালপত্র কিনি না। কারণ, সেখানে আমার নিজের পছন্দ করার কোনো অধিকার নেই। এবারের নির্বাচনে স্বৈরাচারী সরকার আমাদের পছন্দমতো ভোট দেওয়ার অধিকার কেড়ে নিয়েছে। শেখ হাসিনা গণভবনে বসে ঠিক করছেন–কে নৌকায়, কে লাঙ্গলে আর কে মশাল আর ঈগল নিয়ে নির্বাচন করবে। নৌকা, লাঙ্গল, মশাল, ঈগল, বাস আর একতারা সবই হাসিনার লোক।’ তিনি এই নির্বাচনকে তামাশার নির্বাচন উল্লেখ করে তা বর্জনের আহ্বান জানান।
ব্যারিস্টার ফুয়াদ বলেন, ‘২০০৪ সালের ৪ জুন শাহবাগের হোটেল শেরাটনের সামনে বিআরটিসির দোতলা বাসে আগুন জ্বালিয়ে দিয়ে ১১ জন যাত্রীকে পুড়িয়ে হত্যা করা হয়। এক-এগারোর সময়ে আওয়ামী লীগের নেতারা স্বীকার করেছেন যে যুবলীগের নানক, মির্জা আজমদের হুকুমে গান পাউডার ঢেলে আগুন দিয়ে পোড়ানো হয় বাসটি, শুধুমাত্র পরের দিনের হরতালের সমর্থনে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীন প্রতিরক্ষামন্ত্রী ডোনাল্ড রামসফিল্ডের ৫ জুন হোটেল শেরাটনে থাকবার কথা ছিল। ঘটনা ঘটিয়ে বিরোধীপক্ষের ওপর দোষ চাপানোর ঐতিহাসিক অভিজ্ঞতা শুধুমাত্র আওয়ামী লীগেরই আছে। ২৮ অক্টোবরের হত্যাকাণ্ড আর ট্রেনে আগুন লাগিয়ে নিরপরাধ মানুষকে খুনের ঘটনা তাই আওয়ামী লীগ ছাড়া আর কেউ করতে পারে না।’
পদযাত্রা থেকে এবি পার্টির নেতাকর্মীরা কী কী কারণে এই নির্বাচনকে তারা প্রহসন ও খেল-তামাশার নির্বাচন মনে করেন তা উল্লেখ করে জনগণকে নির্বাচন বর্জনের জন্য উদ্বুদ্ধ করেন। রাস্তার দু’পাশে সাধারণ জনগণ তাদের আহ্বান ও উদ্বুদ্ধকরণে সাড়া দিয়ে সমর্থন জানান।
পদযাত্রা কর্মসূচিতে আরও উপস্থিত ছিলেন এবি পার্টির সহকারী সদস্যসচিব শাহ আব্দুর রহমান, ইঞ্জিনিয়ার আলমগীর হোসেন, এম আমজাদ খান, যুবপার্টির সদস্যসচিব শাহাদাতুল্লাহ টুটুল, ঢাকা মহানগর উত্তরের যুগ্ম আহ্বায়ক আব্দুল হালিম খোকন, যুবপার্টির যুগ্ম সদস্যসচিব হাদিউজ্জামান খোকন, মাসুদ জমাদ্দার রানা, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের যুগ্ম সদস্যসচিব কেফায়েত হোসেন তানভীর, সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল হালিম নান্নু, আমিরুল ইসলাম নুর, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য শাহজাহান ব্যাপারী, সেলিম খান, রুনা হোসাইন, ফেরদৌসী আক্তার অপি, আমেনা বেগম, আমানুল্লাহ খান রাসেল, রিপন মাহমুদ, আব্দুর রব জামিল, এনামুল হক, মশিউর রহমান মিলু যুবপার্টি মহানগর উত্তরের সদস্যসচিব শাহিনুর আক্তার শীলা, সহকারী অর্থ সম্পাদক সুমাইয়া শারমিন ফারহানা, পল্টন থানা আহবায়ক আব্দুল কাদের মুন্সি, যাত্রাবাড়ী থানা সমন্বয়ক সি এম আরিফ প্রমুখ।