জলাবদ্ধতা নিরসনে আরসিসি ড্রেন নির্মাণে অনিয়মের অভিযোগ
বান্দরবান পৌরবাসীর জলাবদ্ধতা নিরসনে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের অর্থায়নে রিইনফোর্সড সিমেন্ট কংক্রিট (আরসিসি) ড্রেন নির্মাণে অনিয়ম-দুর্নীতি, অব্যবস্থাপনার অভিযোগ উঠেছে। দায়িত্বপ্রাপ্ত ইঞ্জিনিয়ারের অনুপস্থিতিতেই রাতের আঁধারে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করে আবর্জনাযুক্ত পানির মধ্যে আরসিসি ঢালাই দিয়ে ড্রেন নির্মাণ হচ্ছে খোদ বান্দরবান বাজারের মসজিদ কমপ্লেক্সের সামনের এলাকায়।
গতকাল রোববার (২৪ ডিসেম্বর) রাতে অনিয়মের অভিযোগ পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে অনিয়মের সত্যতা পান পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের নির্মাণকাজের তত্ত্বাবধানে দায়িত্বশীল উপসহকারী প্রকৌশলী সোমনাথ চৌধুরী।
পরিদর্শনকালে দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রকৌশলী অনুমতি ছাড়া রাতের আঁধারে করা ঢালাইকাজ ভেঙে ফেলা হবে বলে তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্ত দেন। কিন্তু নির্মাণকাজের ঠিকাদার ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতা হওয়ায় পরে আর কোনো ব্যবস্থা নেয়নি অভিযোগ স্থানীয়দের। উল্টো সোমবারও ড্রেন নির্মাণের কাজ চলমান রয়েছে।
বাজারের ব্যবসায়ী মো. সোলাইমান, কাঞ্চন দাসসহ অনেকে অভিযোগ করে বলেন, জলাবদ্ধতা নিরসনে পুরোনো ড্রেন ভেঙে আরসিসি নতুন ড্রেন নির্মাণের কাজ করা হচ্ছে। তবে কাজের গুণগতমান খুবই খারাপ হচ্ছে। ড্রেনের ময়লা পানি অপসারণ না করেই দায়সারা ঢালাই দেওয়া হচ্ছে। সিমেন্টের পরিমাণও খুবই কম। ড্রেন নির্মাণের কাজগুলো টেঁকসই হচ্ছে না, নেতারা ঠিকাদার হওয়ায় নির্মাণকাজের সময় ইঞ্জিনিয়ারও সাইটে উপস্থিত থাকেন না। দায়িত্বশীল ইঞ্জিনিয়ারের যোগসাজশেই অনিয়মগুলো হচ্ছে। তাই অভিযোগ করেও কোনো সুফল মিলছে না।
প্রকৌশল বিভাগের তথ্যমতে, পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের অর্থায়নে কোটি টাকা ব্যয়ে বান্দরবান বাজারসহ পৌরসভা এলাকার নয়টি ওয়ার্ডে সহস্রাধিক মিটার আরসিসি পাকা ড্রেন নির্মাণের কাজ চলমান রয়েছে। বর্ষা মৌসুমে অল্পবৃষ্টিতে পৌরবাসীর জলাবদ্ধতা নিরসনে পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিংয়ের আন্তরিকতায় অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নয়ন কাজগুলো বাস্তবায়িত হচ্ছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের নির্মাণকাজের তত্ত্বাবধানে দায়িত্বশীল উপসহকারী প্রকৌশলী সোমনাথ চৌধুরী বলেন, আমাকে না জানিয়েই আমার অনুপস্থিতিতেই ড্রেন ঢালাইয়ের কাজগুলো করা হয়েছে। ময়লা পানির মধ্যে ঢালাই করা কাজগুলো ভেঙে ফেলা হবে। বিষয়টি নির্বাহী প্রকৌশলীকে অবগত করা হয়েছে। স্যারের নির্দেশনা পেলেই ভেঙে ফেলা হবে।
বান্দরবান পৌরসভার মেয়র মো. সামসুল ইসলাম বলেন, পৌরবাসীর দুর্ভোগ কমাতে ড্রেনগুলো নির্মাণ করা হচ্ছে। কাজগুলো বাস্তবায়ন করা হচ্ছে মূলত পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের তত্ত্বাবধানে। কিন্তু অনিয়মের কোনো সুযোগ নেই। ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য এক্সিয়ানকে বলা হয়েছে। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ব্যবস্থা নিবেন বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের নির্বাহী প্রকৌশলী।