দেশে ২২ শতাংশ পরিবার খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে : বিবিএস
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) প্রকাশিত প্রথম খাদ্য নিরাপত্তা জরিপ প্রতিবেদন অনুযায়ী ২১ দশমিক ৯১ শতাংশ বাংলাদেশি পরিবার মাঝারি খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে এবং গুরুতর অবস্থায় রয়েছে শূন্য দশমিক ৮৩ শতাংশ। ২০২২ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২৩ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়ের ভিত্তিতে 'খাদ্য নিরাপত্তা পরিসংখ্যান-২০২৩' শীর্ষক এই প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে সংস্থাটি। জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) সহায়তায় আটটি প্রশ্নের ভিত্তিতে বৈশ্বিক মান বজায় রেখে দেশব্যাপী খাদ্য নিরাপত্তা জরিপ প্রতিবেদন তৈরি করেছে তারা।
প্রতিবেদনে দেখা গেছে, সিলেট বিভাগের সর্বোচ্চ এক দশমিক ৪২ শতাংশ পরিবার চরম খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে এবং রংপুর বিভাগের সর্বোচ্চ ২৯ দশমিক ৯৮ শতাংশ পরিবার মাঝারি ধরনের খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে।
বিবিএসের প্রতিবেদনে দেখা গেছে, রাজশাহী বিভাগে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক পরিবার খাদ্য মজুদে নিরাপদ বোধ করে এবং সর্বনিম্ন দশমিক ৫১ শতাংশ পরিবার মারাত্মক খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছে।
ঢাকা বিভাগে সর্বনিম্ন ১৬ দশমিক চার শতাংশ পরিবার মাঝারি খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে এবং এই বিভাগে দশমিক ৬৪ শতাংশ পরিবার মারাত্মক খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে।
গুরুতর নিরাপত্তাহীনতার কারণে গ্রামাঞ্চলে দশমিক ৯৫ টি পরিবার মারাত্মক খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে, যেখানে শহরে এই হার দশমিক ৬৭ শতাংশ এবং সিটি করপোরেশন এলাকায় দশমিক ৪১ শতাংশ।
প্রতিবেদনে বলা হয়, আয়ের প্রধান উৎস কৃষি দশমিক ৯৪ শতাংশ (পরিবার), শিল্প দশমিক ২৭ শতাংশ, সেবা দশমিক ৭৯ শতাংশ, আয় দশমিক ৬১ শতাংশ এবং রেমিট্যান্স এক দশমিক ৩১ শতাংশ চরম খাদ্য নিরাপত্তাহীনতা।
এক প্রশ্নের জবাবে বিবিএসের পরিসংখ্যান ও তথ্য বিভাগের (এসআইডি) সচিব এবং খাদ্য নিরাপত্তা পরিসংখ্যান-২০২৩-এর মূল অনুসন্ধানের প্রচার কর্মসূচির প্রধান ড. শাহনাজ আরেফিন বলেন, খাদ্য নিরাপত্তাহীনতা আয়ের বাইরের কারণের ওপর নির্ভর করে। আয়ের বিবেচনায় ধনী হওয়া সত্ত্বেও লোকেরা কাঙ্ক্ষিত খাদ্যের প্রাপ্যতা বা সরবরাহের ক্ষেত্রে খাদ্য নিরাপত্তাহীনতা অনুভব করতে পারে।
ড. শাহনাজ বলেন, দেশব্যাপী জরিপে ৮টি সুনির্দিষ্ট প্রশ্নের ভিত্তিতে বৈশ্বিক মান বজায় রেখে প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়েছে। এতে ২৯ হাজার ৭৬০টি পরিবার অংশ নিয়েছে। এ ছাড়া বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের মজুদের তথ্য এবং বিভিন্ন খাদ্য সরবরাহ চ্যানেলের তথ্যও ব্যবহার করা হয়েছে।
প্রকল্প পরিচালক আব্দুল হালিম বলেন, প্রতিবেদনে দেখা গেছে, গ্রামীণ পরিবারের মালিকরা তাদের মজুদকৃত খাদ্য থেকে বছরে ৬৩ দিন তাদের খাদ্যের চাহিদা মেটাতে পারেন। তিনি বলেন, ২০১৬ সালে মাথাপিছু দৈনিক ক্যালোরি ছিল ২৪৬১ কিলোক্যালরি, যা ২০২১ সালে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৫১৬ কিলোক্যালরি। এর অর্থ জাতীয় গড় ক্যালোরি খরচ বেড়েছে।
অনুষ্ঠানে পরিকল্পনা কমিশনের অতিরিক্ত সচিব খান মো. নুরুল আমিন, খাদ্য পরিকল্পনা মহাপরিচালক মো. শহিদুল ইসলাম, বিবিএসের মহাপরিচালক মোহাম্মদ মিজানুর রহমান, বিবিএসের কৃষি শাখার পরিচালক আলাউদ্দিন আল আজাদ এবং বিবিএসের উপমহাপরিচালক পরিমল চন্দ্র বোস বক্তব্য দেন।