ছাত্রলীগের ৭৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী আজ
বাংলাদেশের বিভিন্ন গণতান্ত্রিক আন্দোলন ও সংগ্রামে বলিষ্ঠ নেতৃত্ব দানকারী ঐতিহ্যবাহী ছাত্রসংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের ৭৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী আজ বৃহস্পতিবার (৪ জানুয়ারি)। ‘স্মার্ট বাংলাদেশ, উন্নয়ন দৃশ্যমান, বাড়বে কর্মসংস্থান’ এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে ৭৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন করবে আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতিম এই সংগঠনটি।
বাংলা, বাঙালির স্বাধিকার অর্জনের লক্ষ্যে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্দেশনায় ১৯৪৮ সালের ৪ জানুয়ারি বাংলাদেশ ছাত্রলীগের জন্ম হয়। উপমহাদেশের সর্ববৃহৎ ও প্রাচীন ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগের গৌরব, ঐতিহ্য, সংগ্রাম ও সাফল্যের ৭৬তম বার্ষিকী উপলক্ষে সবাইকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন সংগঠনের কেন্দ্রীয় নেতারা।
ছাত্রলীগ তার দীর্ঘ রাজনৈতিক পরিক্রমায় ৫২’র ভাষা আন্দোলন, ৫৪’র প্রাদেশিক পরিষদের নির্বাচনে যুক্তফ্রন্টের বিজয়, ৫৮’র আইয়ুব বিরোধী আন্দোলন, ৬২’র শিক্ষা আন্দোলন, ৬৬’র ছয় দফার পক্ষে গণ-অংশগ্রহণের মাধ্যমে মুক্তির সনদ হিসেবে এই দাবিকে প্রতিষ্ঠা করে। এরপর ৬৯’র গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুকে কারাগার থেকে মুক্ত করে আনা, ৭০’র নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নিরঙ্কুশ জয়লাভ এবং ৭১’র মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করে পরাধীন বাংলায় লাল সবুজের পতাকার বিজয় ছিনিয়ে আনতে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে।
১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর মহান স্বাধীনতা অর্জনের পর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশ পুনর্গঠনে অংশ নেয় ছাত্রলীগ। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতা সপরিবারে নিহত হওয়ার পর ছিনতাই হয়ে যায় স্বাধীনতার চেতনা ও গণতান্ত্রিক ধারা।
১৯৮১ সালের ১৭ মে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা (বর্তমান প্রধানমন্ত্রী) দেশে ফিরে স্বাধীনতার চেতনা পুনঃপ্রতিষ্ঠা এবং গণতান্ত্রিক ধারা পুনরুদ্ধারে আন্দোলনের সূচনা করেন। ছাত্রলীগ ’৯০ এর স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে অনন্য ভূমিকা পালন করে।
সংগঠনটির ৭৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী বর্ণাঢ্যভাবে পালন করতে সংগঠনের কেন্দ্রীয় সংসদের পক্ষ থেকে বিস্তারিত কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে।
ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাদ্দাম হোসেন জানান, প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে নিয়মিত কর্মসূচির পাশাপাশি এ বছর বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রার আয়োজন করা হয়েছে। বাংলাদেশের নবরূপায়নের রূপকার, উন্নত-আধুনিক-আত্মমর্যাদাশীল বাংলাদেশের প্রতীক, বৈশ্বিক উন্নয়ন অর্থনীতির রোল মডেল, বাঙালির গণতন্ত্র-মানবাধিকার-মৌলিক অধিকার বাস্তবায়নে বারবার নিজের জীবনকে হুমকির সম্মুখীন করা বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনাকে আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পুনরায় বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত করতে বাংলার মানুষ, ছাত্রসমাজ, তরুণ প্রজন্ম যে দৃঢ় প্রতিজ্ঞায় আবদ্ধ, তার স্মারক হিসেবে এই শোভাযাত্রা আয়োজিত হবে।
ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে দিনব্যাপী কর্মসূচির মধ্য রয়েছে, সকালে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন, ধানমণ্ডির ৩২ নম্বরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা এবং ছাত্রলীগের একটি প্রতিনিধিদল টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধুর সমাধিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদন করবে।
কর্মসূচির মধ্য আরও রয়েছে সকালে ঢাবির কার্জন হলে কেক কেটে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন, সকাল ১০টায় অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর সমাবেশ ও বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা অনুষ্ঠিত হবে।
এ ছাড়া আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপস্থিতিতে ‘সুবিধাজনক’ সময়ে ৭৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে পুনর্মিলনীর আয়োজন করা হবে।
প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে ঘোষিত কর্মসূচি যথাযথ মর্যাদায় পালন করতে ইউনিটের (জেলা, মহানগর, বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ) নেতাকর্মীদের আহ্বান জানিয়েছেন সংগঠনটির কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি সাদ্দাম হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান।