পিবিআই প্রধানের মামলায় সাংবাদিক ইলিয়াসের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন
মিতু হত্যা মামলা নিয়ে মিথ্যা, অসত্য তথ্য সরবরাহ ও প্রচারের অভিযোগে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) প্রধান বনজ কুমার মজুমদারের করা মামলায় সাংবাদিক ইলিয়াস হোসাইনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেছেন আদালত। একইসঙ্গে মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য আগামী ২৮ এপ্রিল দিন ধার্য করা হয়।
আজ বৃহস্পতিবার (১৮ জানুয়ারি) ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক এ এম জুলফিকার হায়াত এ অভিযোগ গঠন করেন। এ ছাড়া মামলার অপর আসামি সাবেক পুলিশ সুপার (এসপি) বাবুল আকতারের ভাই মো. হাবিবুর রহমান লাবুকে অব্যাহতির আদেশ দেন বিচারক।
গত বছরের ৯ এপ্রিল সাবেক পুলিশ সুপার বাবুল আকতারসহ চারজনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ধানমণ্ডি মডেল থানার পুলিশ পরিদর্শক (অপারেশন) মো. রবিউল ইসলাম। পরবর্তীতে ২৫ জুলাই মামলার অভিযোগপত্র গ্রহণ করে ইলিয়াস হোসাইনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত। ওইদিন আদালত এ মামলার অভিযোগ থেকে বাবুল আকতার ও তার বাবা মো. আব্দুল ওয়াদুদ মিয়াকে অব্যাহতি দেন। অপরদিকে সাংবাদিক ইলিয়াস হোসেন ও বাবুল আকতারের ভাই মো. হাবিবুর রহমান লাবুর বিরুদ্ধে পুলিশের দেওয়া অভিযোগপত্র গ্রহণ করেন।
২০২২ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর রাজধানীর ধানমণ্ডি থানায় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) প্রধান বনজ কুমার মজুমদার বাদী হয়ে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ও বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা করেন।
মামলার এজাহারে পিবিআই প্রধান অভিযোগ করে বলেন, “আমার নেতৃত্বাধীন তদন্ত সংস্থা পিবিআইয়ের দেশের চাঞ্চল্যকর মিতু হত্যা মামলা তদন্তাধীন থাকাকালে সাবেক পুলিশ সুপার বাবুল আকতার প্রধান আসামি হিসেবে তদন্তে প্রকাশ পায়। তদন্তকালে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। জেল হাজতে থাকা বাবুল আকতার ও বিদেশে অবস্থানরত সাংবাদিক ইলিয়াস হোসাইনসহ বাকি আসামিরা মামলার তদন্ত ভিন্ন খাতে প্রবাহিত এবং পুলিশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার জন্য ষড়যন্ত্রের আশ্রয় গ্রহণ করেন। এরই ধারাবাহিকতায় বাবুল আকতার ও অন্যান্য আসামিদের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ প্ররোচনায় কথিত সাংবাদিক ইলিয়াস হোসাইন ২০২২ সালের ৩ সেপ্টেম্বর তার ফেসবুক আইডির মাধ্যমে ‘স্ত্রী খুন স্বামী জেলে, খুনি পেয়েছে তদন্তের দায়িত্ব’ শিরোনামে একটি ডকুমেন্টারি ভিডিও ক্লিপ আপলোড করেন। এটি সম্পর্কে ৪ সেপ্টেম্বরে আমি অবগত হই।”
মামলায় বনজ কুমার আরও অভিযোগে করে বলেন, ‘ভিডিওতে বিভিন্ন মিথ্যা ও ভিত্তিহীন তথ্যের মাধ্যমে তদন্তাধীন মিতু হত্যা মামলার তদন্তকে বিতর্কিত ও প্রশ্নবিদ্ধসহ তদন্তকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা করা হয়। ভিডিওটি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, ইলিয়াস হোসাইন ভিডিওতে প্রচারিত বক্তব্যে দেশের ভাবমূর্তি এবং দেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করার উসকানি দেওয়া হয়। এ ছাড়া ভিডিওতে পুলিশ এবং পুলিশের বিশেষায়িত তদন্ত সংস্থা পিবিআই ও বিশেষ করে আমার মান-সম্মান ও সুনাম ক্ষুণ্ন করার জন্য মিথ্যা, বানোয়াট, ভিত্তিহীন ও বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রচার করা হয়েছে। যার জন্য দেশের সাধারণ মানুষের মধ্যে এর নেতিবাচক মনোভাব সৃষ্টি করে। এ ছাড়া ভিডিওতে রাষ্ট্রের ভাবমূর্তি এবং বাংলাদেশের সঙ্গে বন্ধুপ্রতিম দেশ ভারতের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ককে ক্ষতিগ্রস্ত করার অপপ্রয়াস করা হয়। রাষ্ট্রের হিন্দু ও মুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্যে শত্রুতা, ঘৃণা, বিদ্বেষ, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট ও অস্থিরতা এবং বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিরও অপপ্রয়াস করা হয়।’