শহীদ আসাদ মুক্তিকামী মানুষের মাঝে স্মরণীয় হয়ে থাকবেন : প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘১৯৬৯ সালের গণ-অভ্যুত্থানে আত্মত্যাগকারী শহীদ আসাদ এদেশের গণতন্ত্রপ্রেমী, মুক্তিকামী মানুষের মাঝে স্মরণীয় হয়ে থাকবেন। তার আত্মত্যাগ সব সময় আমাদের অধিকার আদায়ের আন্দোলনে প্রেরণা জোগাবে।’
আজ শনিবার (২০ জানুয়ারি) শহীদ আসাদ দিবস উপলক্ষে দেওয়া এক বাণীতে এসব কথা বলেন সরকারপ্রধান।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে যাঁর আত্মাহুতি দিয়েছেন, তাদের অবদান আমরা শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করি। আমি মনে করি, শহীদের আত্মত্যাগ কখনও বৃথা যাবে না।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আজ ২০ জানুয়ারি, শহীদ আসাদ দিবস। বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে এই দিনটি একটি তাৎপর্যপূর্ণ দিন। ১৯৬৯ সালের এই দিনে ঢাকা মেডিকেল কলেজের সামনের রাস্তায় চলমান মিছিলে পুলিশ গুলি চালায়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস্টার্সের ছাত্র মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান পুলিশের গুলিতে নিহত হন। এভাবে আরও অনেক প্রাণ ঝরে যায় এবং আহত হন।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘পাকিস্তানি শাসকদের বৈষম্যমূলক আচরণ, নির্যাতন ও দমন-পীড়নে বাংলার মানুষ যখন দিশেহারা, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ছয় দফা তখন বাঙালির মুক্তির দিশারী হিসেবে আবির্ভূত হয়। ছয় দফা হয়ে ওঠে বাঙালির প্রাণের দাবি।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘ছয় দফার পক্ষে প্রবল জনমতের জোয়ার দেখে আতঙ্কিত সামরিক জান্তা আইয়ুব খান বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের বিরুদ্ধে দেশদ্রোহিতার মামলা দায়ের করে, যা আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা নামে সমধিক পরিচিত। বৈষম্য ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ঘোষিত ছয় দফা আন্দোলনের মাধ্যমে বাঙালি জাতির স্বাধীনতা আন্দোলন নতুন মাত্রা পায়। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব পরিণত হন নিপীড়িত ও নির্যাতিত বাঙালির মুক্তির মূর্ত প্রতীকে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কারাগারে আটক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের মুক্তির দাবিতে গর্জে উঠে সারা বাংলার মানুষ। ১৯৬৯ সালের ২০ জানুয়ারি ঢাকা মেডিকেল কলেজের সামনের রাস্তায় ছাত্র-জনতার চলমান মিছিলে পুলিশ গুলি চালায়। এতে আসাদুজ্জামান শহীদ হন এবং অনেকে আহত হন। শহীদ আসাদের এই আত্মত্যাগ চলমান আন্দোলনে নতুন মাত্রা যোগ করে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘স্বাধিকারের দাবিতে সোচ্চার সব শ্রেণি-পেশার মানুষ জেল-জুলুম উপেক্ষা করে রাজপথে নেমে আসে। পর্যায়ক্রমে আন্দোলন তীব্র থেকে তীব্রতর আকার ধারণ করে। সেদিনের সেই আন্দোলন পরবর্তীতে গণ-অভ্যুত্থানে রূপ নেয়। জনতার কঠিন রুদ্ররোষ ও গণ-আন্দোলনের চাপের মুখে পাকিস্তানি স্বৈরসরকার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বিরুদ্ধে দায়ের করা আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা প্রত্যাহার করতে বাধ্য হয়। এরই ধারাবাহিকতায় পতন হয় স্বৈরশাসক আইয়ুব খানের।’
শহীদ আসাদসহ বাঙালির মুক্তির সংগ্রামে আত্মোৎসর্গকারী সব শহীদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।