নওগাঁয় এক গুদামে লক্ষাধিক টন খাদ্যপণ্য মজুদ, ব্যবসায়ী আটক
নওগাঁর মান্দা উপজেলার এক গুদামে মিলল ১ লাখ ২৮ হাজার টন খাদ্যপণ্যের অবৈধ মজুদ। অবৈধভাবে গম, আটা, সয়াবিন তেলসহ বেশ কয়েক প্রকার ভোগ্যপণ্য মজুতের দায়ে মাসুদ রানা (৪৫) নামের এক ব্যবসায়ীকে আটক করা হয়েছে। আটক ব্যবসায়ীর গুদাম থেকে অবৈধভাবে মজুত করা ১ লাখ ২৮ হাজার ৬৮ মেট্রিক টন গম, সয়াবিন তেল, আটা, চিনি ও ছোলা জব্দ করা হয়েছে।
আজ বুধবার (২৪ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় মান্দা উপজেলার পরানপুর ইউনিয়নের গোয়ালপাড়া গ্রামে মান্দা উপজেলা প্রশাসনের মজুতবিরোধী অভিযানে গিয়ে বিপুল পরিমাণ ভোগ্যপণ্য মজুতের দায়ে ওই ব্যবসায়ীকে আটক করে ভ্রাম্যমাণ আদালত। আটক ব্যবসায়ী মাসুদ রানা মান্দা উপজেলার পরাণপুর ইউনিয়নের গোয়ালপাড়া গ্রামের মনসুর আলী ছেলে। তিনি মাসুদ এন্টারপ্রাইজ নামে খাদ্যপণ্যের ব্যবসা করতেন। তবে এই নামে তার কোনো ব্যবসায়িক লাইসেন্স নেই।
মান্দা উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) লায়লা আনজুমান্দ বানু জানান, মান্দা উপজেলার পরানপুর ইউনিয়নের গোয়ালপাড়া গ্রামে একটি গুদামে বিপুল পরিমাণ খাদ্যপণ্য অবৈধভাবে মজুত করা হয়েছে আমাদের কাছে এমন গোপন তথ্য ছিল। গোপন তথ্যের ভিত্তিতে আজ সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে মাসুদ রানা নামে ওই ব্যবসায়ীর গুদামে অভিযান চালানো হয়।
লায়লা আনজুমান্দ বানু আরও বলেন, অভিযানে গিয়ে ওই গুদামটিতে ১ লাখ ২৮ হাজার মেট্রিক টন গম, ২০ হাজার ৭২ লিটার সয়াবিন তেল, ৮ মেট্রিক টন আটা, ছোলা-বুট ৩২ মেট্রিক টন ও ৪ মেট্রিক টন চিনির অবৈধ মজুত পাওয়া গেছে। গুদামটিতে প্রায় ১ বছর সময় ধরে গম মজুত করা হয়েছিল। লাইসেন্স ছাড়াই গম, সয়াবিন, চিনি, ছোলা ও আটার ব্যবসা করে আসছিলেন।
ইউএনও আরও বলেন, অবৈধভাবে খাদ্যপণ্য মজুতের দায়ে ওই ব্যবসায়ীকে আটক করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইনে নিয়মিত মামলা হচ্ছে। মান্দা উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মোহাম্মদ আলী বাদী হয়ে এ মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।
মান্দা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোজাম্মেল হক কাজী বলেন, মান্দা উপজেলা প্রশাসন পরিচালিত অভিযানে অবৈধভাবে খাদ্যপণ্য মজুতের দায়ে মাসুদ রানা নামে এক ব্যবসায়ীকে আটক করা হয়েছে। এ ঘটনায় থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।
নওগাঁর জেলা প্রশাসক গোলাম মওলা বলেন, রমজান মাসকে কেন্দ্র করে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী খাদ্যপণ্য মজুত করে দাম বৃদ্ধির পায়তারা করছে। এ ধরনের মজুতদারদের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত থাকবে। এর আগে গত সাত দিনে অবৈধভাবে ধান-চাল মজুতের দায়ে নওগাঁয় ৩৯টি প্রতিষ্ঠানকে ১৮ লাখ ৬০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
আজ বুধবার রাত ৯টা ১০ মিনিটে নওগাঁর জেলা প্রশাসক মো. গোলাম মওলা মুঠোফোন জানান, অভিযান শেষ করে ফেরার পথে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানা যায়, আধা কিলোমিটার দূরে মাসুদ রানার আরও একটি বড় গুদাম রয়েছে। ওই গুদামের তালা খুলে দেখা যায় সেখানে অবৈধ মজুতের পরিমাণ আরও বেশি। নওগাঁ থেকে একজন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (এডিসি) এর নেতৃত্বে অতিরিক্ত পুলিশ ফোর্স ঘটনাস্থলে পাঠানো হচ্ছে। প্রয়োজনে মাসুদ রানার দ্বিতীয় গুদামে সারারাত অভিযান চালানো হবে।