রমজানের দেড় মাস আগেই অস্থির নিত্যপণ্যের বাজার
বাজারে অধিকাংশ নিত্যপণ্যের দাম বেড়েছে। গত বছর, অর্থাৎ ২০২৩ সালের পুরোটা সময় নিত্যপণ্যের দাম ছিল লাগামছাড়া। ২০২৪ সালের শুরুতেও বাজারজুড়ে ক্রেতাদের কাছে একই অস্বস্তি। দিনদিন বাড়তে থাকা পণ্যের দাম ইঙ্গিত দিচ্ছে নতুন শঙ্কার। সেই শঙ্কা বলছে—রমজান মাসে বেশি প্রয়োজনীয় পণ্যের দাম হতে পারে লাগামহীন। যদিও রোজায় মূল্যের ঊর্ধ্বগতি ঠেকাতে সরকার এরইমধ্যে নিচ্ছে নানা পদক্ষেপ। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের চিঠির প্রেক্ষিতে ভোজ্যতেল, চিনি ও খেজুরের ওপর শুল্ক-কর কমাতে কাজ চলছে বলে জানিয়েছেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম।
খুচরা ব্যবসায়ী ও ক্রেতারা বলছেন, এখনও রোজার বাকি দেড় মাস। কিন্তু, বাজারে খেজুর, ছোলা, ডাল, ভোজ্যতেল ও চিনির দাম বাড়তে শুরু করেছে। আগামীতে দাম আরও বাড়বে বলে ধারণা তাদের। এ পরিস্থিতিতে ক্রেতারা ক্ষোভ প্রকাশ করছেন। যদিও পণ্যের দাম দিনদিন বেড়ে যাওয়াকে অন্যভাবে দেখছেন বিক্রেতারা। রমজানকে লক্ষ্য রেখেই যে ধীরে ধীরে বাড়ছে, তা না—বলে জানিয়েছেন তারা।
বাজার ঘুরে জানা গেছে, সবচেয়ে বেশি ডাল বেড়েছে মসুর ডালের দাম। গত ১০ থেকে ১৫ দিনের ব্যবধানে এ ডালের দাম কেজিপ্রতি ৩০ থেকে ৪০ টাকার মতো বেড়েছে। দেশি বলে যে ডাল বিক্রি হচ্ছে, তার সর্বনিম্ন মূল্য দেখা গেছে কেজিপ্রতি ১৫০ টাকা। বেড়েছে ছোলার দামও। গত এক মাস আগেও প্রতি কেজি ছোলা মানভেদে বিক্রি হয়েছে ৭৫ থেকে ৮০ টাকায়। এখন ওই ছোলার দাম ১০০ থেকে ১১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
একইভাবে বেড়েছে অ্যাঙ্কর ডালের দামও। এ ডাল দিয়ে মূলত বেসন তৈরি করা হয়। রোজার সময় বেসন খুব দরকারি পণ্য হয়ে ওঠে। বর্তমানে এর দাম কেজিপ্রতি ৭৫ টাকা।
বিক্রেতারা জানান, বোতলজাত ভোজ্যতেলের দাম গত সপ্তাহে প্রতি লিটারে তিন থেকে চার টাকা বাড়ানো হয়েছে। এরপর থেকে খোলা সয়াবিন ও পাম তেলের দাম বাড়ছে। প্রতি লিটার খোলা সয়াবিন বিক্রি হচ্ছে ১৫৫ থেকে ১৬০ টাকা এবং পাম তেল ১৩০ থেকে ১৩৫ টাকায়, গত সপ্তাহের তুলনায় যা পাঁচ টাকা বেশি।
এ ছাড়া প্রতি কেজি খোলা চিনি এলাকা ভেদে ১৪৫ থেকে ১৫০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে, যা এ যাবৎকালের সবোর্চ্চ। অন্যদিকে, অধিকাংশ খেজুরের কেজিপ্রতি দাম ১০ টাকা বা তার বেশি বাড়ছে।
কারওয়ান বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বাজারে চালসহ অধিকাংশ সবজি ও অন্যান্য বেশকিছু খাদ্যপণ্যও বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে। সিম ৫০ থেকে ৬০ টাকা, লাউ ৭০ টাকা, বেগুন ৭০ টাকা, টমেটা ৫০ টাকা, ফুলকপি ৫০ টাকা, কাঁচা মরিচ ৬০ ও গাজর ৩০ থেকে ৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে।
আদা ও রসুন প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ২১০ থেকে ২২০ টাকা পর্যন্ত, যা গত সপ্তাহের চেয়ে ১০ থেকে ১০ টাকা বেশি। এ ছাড়া ৮০ টাকা দরে বিক্রি হওয়া পেঁয়াজ এখন ৯০ থেকে ১০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। মুরগির ডিম বিক্রি হচ্ছে ৪৫ টাকা হালি। হাসের ডিম বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকা হালি।
তবে, বাজারে ব্রয়লার মুরগির দাম কেজিতে ১০ টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে ১৯০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া সোনালি ৩০০ টাকা কেজি, দেশি হাঁস ৬০০ টাকা পিস, রাজহাঁস আকার ভেদে ২২০০, ৩০০০ ও ৩৫০০ টাকা পিস বিক্রি হচ্ছে। দেশি মুরগি ৩০০ থেকে ৫৫০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি করতে দেখা গেছে।