নওগাঁয় চাকরি স্থায়ীকরণের দাবিতে আন্দোলনে পিচরেট কর্মচারীরা
চাকরি স্থায়ী করার দাবিতে রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের ১৬ জেলায় আন্দোলন করছেন নর্দান ইলেক্ট্রিসিটি সাপ্লাই কোম্পানির (নেসকো) পিচরেট কর্মচারীরা। গতকাল সোমবার (২৯ জানুয়ারি) নওগাঁর আরজি এলাকায় নেসকোর প্রধান বিক্রয় ও বিতরণ কেন্দ্রের সামনে অবস্থান কর্মসূচিতে যোগ দেন পার্শ্ববর্তী বগুড়া, জয়পুরহাট ও নাটোরসহ কর্মচারীদের কেন্দ্রীয় নেতারা।
এ সময় নওগাঁ উত্তর অফিসে কর্মরত মিটার রিডার মতলুবুর রহমান জানান, প্রায় ২২ বছর বিদ্যুতের মিটার রিডার ও বিল বিতরণের কাজ করছেন। শুরুতে পিডিবি এবং পরে বেসরকারি প্রতিষ্ঠান নেসকোতে শ্রম দিচ্ছেন। উচ্চ মহল থেকে চাকরি স্থায়ী করার একাধিক প্রতিশ্রুতি দিলেও কর্তৃপক্ষ তাকে নিয়োগ দেয়নি।
মিটার রিডার মতলুবুর রহমান বলেন, ‘পিচরেট কর্মচারীরা কাজের বিনিময়ে মজুরি পান। গ্রাহকের রিডিং সংগ্রহের জন্য জেলা পর্যায়ে প্রতি মিটারের জন্য পাঁচ টাকা ৭০ পয়সা এবং বিলের কাগজ বিতরণের জন্য সাড়ে তিন টাকা হারে দেওয়া হয়। উপজেলা পর্যায়ে মিটারপ্রতি ছয় টাকা ৫০ পয়সা এবং বিল কাগজ বিতরণের জন্য চার টাকা দেওয়া হয়।’
পিচরেট কর্মচারী ঐক্য পরিষদ নওগাঁ শাখার সভাপতি আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘বহুবার প্রতিশ্রুতি দিয়েও কর্মকর্তারা তা বাস্তবায়ন করেনি। ইতোপূর্বে নেসকো তালিকা অনুযায়ী পিচরেট কর্মচারীদের মৌখিক পরীক্ষা নিয়েছে। কিন্তু, নিয়োগ দেওয়া হয়নি। পরবর্তীতে আন্দোলনের মুখে নেসকোর ব্যবস্থাপনা পরিচালক জাকিউল ইসলাম আবারও তাদের চাকরি স্থায়ী করার আশ্বাস দিয়েছিলেন।’
পিচরেট কর্মচারী ঐক্য পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি আবুল হোসেন বলেন, ‘বগুড়াসহ বেশ কয়েকটি জেলায় নেসকো প্রায় ৩০০ পিচরেট কর্মীকে চাকরিচ্যুত করেছে।’
মাঠ পর্যায়ে বিল প্রস্তুত করার বিষয়ে নেসকোর নওগাঁ দক্ষিণ বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মিলন মাহমুদ এবং নওগাঁ উত্তর বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী তানজিমুল হক বলেন, ‘প্রতি মাসের ২০ থেকে ২৪ তারিখের মধ্যে রিডাররা তথ্য সরবরাহ করে থাকেন। সে অনুযায়ী বিল প্রস্তুত করা হয়। কিন্তু রিডাররা কর্মবিরতিতে থাকায় চলতি মাসে সেই কার্যক্রম ব্যহত হচ্ছে। কর্তৃপক্ষের দেওয়া নির্দেশনা অনুযায়ী, আগামী মাসের বিল প্রস্তুত ও বিতরণের বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যাবে।’
গতকাল সোমবার দুপুরে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে নেসকোর ব্যবস্থাপনা পরিচালক জাকিউল ইসলাম বলেন, ‘আন্দোলনকারীরা আমাদের (নেসকোর) কর্মচারী না। তারা মিটার দেখে বিল করে দেয়। এজন্য তারা টাকা পায়। এক্ষেত্রে তাদের চাকরি দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। এটা আমার ক্ষমতার বাইরে। গত ৩০ বছর ধরে এভাবেইে চলে আসছে। আমার বোর্ডও তাদের চাকরি দেওয়ার বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারে না।’
এ মাসে মিটার রিডিং না হলে ভৌতিক বিলের আশঙ্কা আছে কি না প্রশ্নের জবাবে নেসকোর ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, ‘সবাই তো আর আন্দোলন করছে না। বাকিরা মিটার দেখছে। এ ছাড়া আমরা আমাদের নিজস্ব তত্ত্বাবধানে মিটার রিডিং করার চেষ্ঠা করছি। এক্ষেত্রে ভৌতিক বিলের কোনো আশঙ্কা নেই।’