বান্দরবানের তুমব্রু সীমান্তে মিয়ানমারের হেলিকপ্টারের মহড়া
বান্দরবানের তুমব্রু সীমান্তের ওপারে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে চলমান সংঘর্ষে গোলাগুলি ও ভারি অস্ত্রের ব্যবহারে কেঁপে উঠছে বাংলাদেশের সীমান্ত অঞ্চল। আজ বৃহস্পতিবার ভোরররাতেও ব্যাপক গোলাগুলি ও মর্টারশেল নিক্ষেপের শব্দ শোনা গেছে সীমান্ত এলাকায়।
এ দিকে ঘুমধুম ইউনিয়নের তুমব্রু সীমান্তের কাছাকাছি মিয়ানমারের হেলিকপ্টার মহড়া দিচ্ছে। এ ঘটনায় নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার তুমব্রু, বাইশফাঁড়ি, ফাত্রাঝিরি, রেজু আমতলি, গর্জবনিয়াসহ আশপাশের সীমান্ত লাগোয়া গ্রামগুলোর মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।
মিয়ানমারের অভ্যন্তরে সশস্ত্র সংগঠনগুলোর সঙ্গে দেশটির সরকারি বাহিনীর চলমান সংঘাত আরও জোরালো হচ্ছে। মাঝেমধ্যেই মিয়ানমার বাহিনীর চলমান সংঘাতের গুলি ও মর্টারশেল এসে পড়ছে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে সীমান্ত এলাকায়।
স্থানীয় বাসিন্দার নূর মোহাম্মদ, আব্দুর রশীদ বলেন, আজ সকাল সাড়ে ১০টার দিকে মিয়ানমারের কয়েকটি হেলিকপ্টার তুমব্রু সীমান্ত এলাকায় মহড়া দিয়েছে। ঘুমধুম ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী তুমব্রু বাজার থেকে হেলিকপ্টার উড়তে দেখা গেছে।
মিয়ানমারের মংডু ও বলিবাজার থেকে পালিয়ে বাংলাদেশের সীমানার কাছাকাছি অবস্থান করছে রোহিঙ্গারা। কিছু রোহিঙ্গা ডিঙি নৌকায় করে নাফ নদে অবস্থান করছে। মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিপ তাদের কোনো বাধা দিচ্ছে না।
গত মঙ্গল ও বুধবার ঘুমধুম বাইশফাঁড়ি বিওপির বিশেষ টহল দল অবৈধ অনুপ্রবেশের চেষ্টাকালে মিয়ানমারের এক নারীসহ তিন নাগরিককে আটক করে বিজিবি। আটকের কয়েক ঘণ্টা পর ঘুমধুম রেজুআমতলী সীমান্ত দিয়ে তাদের মিয়ানমারে পুশব্যাক করা হয়েছে। তাঁরা হলেন উখসওনো চাকমা, স্বামী অংখিও চাকমা এবং মংপ্রুচিং মারমা। তারা মিয়ানমারের মংডু জেলার বাসিন্দা।
ঘুমধুম ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আজিজ বলেন, মিয়ানমারে চলমান সংঘাতে ফের সীমান্তবর্তী এলাকাগুলোতে মানুষ আতঙ্কিত হয়ে পড়ছে। প্রতিদিনই গোলাগুলির শব্দে কেঁপে উঠছে সীমান্তবাসী। ইতোমধ্য সীমান্তের অনেক মানুষ ঘর ছেড়ে আত্মীয়স্বজনদের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছে। শোনেছি কিছু রোহিঙ্গারা সীমান্তের কাছাকাছি অবস্থান করছে। বিষয়টি আমরা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।
বিজিবি ৩৪ ব্যাটালিয়ানের অধিনায়ক জোন কমান্ডার লে. কর্নেল মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ‘রোহিঙ্গাদের সম্ভাব্য অনুপ্রবেশ নিয়ে সতর্ক আছে বিজিবি। সীমান্ত এলাকায় নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। কোনো রোহিঙ্গাকে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না। আমরা সর্বদা সজাগ রয়েছি।’
বিষয়টি নিশ্চিত করে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ জাকারিয়া বলেন, ‘সীমান্তের কাছাকাছি মিয়ানমারের ওপারে গোলাগুলি হচ্ছে। তবে আতঙ্কিত হওয়ার তেমন কিছু নেই। এটি মিয়ানমারের অভ্যন্তরের ঘটনা। রোহিঙ্গাদের সম্ভাব্য অনুপ্রবেশ নিয়ে বিজিবি সতর্ক অবস্থায় রয়েছে। সীমান্ত পরিস্থিতি সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে।’