প্রথম বিয়েতে নিবন্ধন কর ১০০ টাকা, চতুর্থ বিয়েতে ৫০ হাজার
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) তার আওতাধীন এলাকায় বিবাহ নিবন্ধন কার্যক্রম শৃঙ্খলায় আনার উদ্যোগ নিয়েছে। এরই অংশ হিসেবে একজনের চারটি বিয়ে পর্যন্ত নিবন্ধন কর নির্ধারণ করে দিয়েছে সংস্থাটি। সেই হিসাবে একজনকে প্রথম বিয়েতে ১০০ টাকা এবং সর্বোচ্চ চতুর্থ বিয়েতে ৫০ হাজার টাকা ‘বিবাহ নিবন্ধন কর’ দিতে হবে। গতকাল মঙ্গলবার (৬ ফেব্রুয়ারি) ডিএসসিসির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এই পদক্ষেপের ফলে বিয়ে নিবন্ধন সংক্রান্ত বিষয়াবলি সুশৃঙ্খল ও তথ্য সমৃদ্ধ হবে। ভবিষ্যতের ভিত্তি হিসেবে ব্যবহারের ক্ষেত্রে, বিশেষ করে বিবাহ বিচ্ছেদের ক্ষেত্রে অন্যান্য সংস্থাকে সংশ্লিষ্ট তথ্যাদি সরবরাহ ও সিদ্ধান্ত গ্রহণেও সহায়ক হবে। একইসঙ্গে করপোরেশনের রাজস্ব আদায় বাড়বে।
ডিএসসিসির বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, স্থানীয় সরকার (সিটি কর্পোরেশন) আইন, ২০০৯ এর ৮২ নম্বর ধারার ৪র্থ তফসিলের ৮ নম্বর ক্রমিকে অর্পিত ক্ষমতাবলে এবং আদর্শ কর তফসিল ২০১৬ এর ১০(৪) এর ১৫২ নম্বর ক্রমিকে উল্লিখিত হারে এই কর আদায় করা হবে।
আদর্শ কর তফসিল, ২০১৬ এর ১০(৪) এর ১৫২ নম্বর ক্রমিক অনুযায়ী, (ক) প্রথম বিবাহ বা স্ত্রীর মৃত্যুর পর প্রথম বিবাহের ক্ষেত্রে ১০০ টাকা, (খ) প্রথম স্ত্রীর জীবদ্দশায় যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমতিক্রমে দ্বিতীয় বিবাহের ক্ষেত্রে ৫ হাজার টাকা, (গ) প্রথম দুই স্ত্রীর জীবদ্দশায় যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমতিক্রমে তৃতীয় বিবাহের ক্ষেত্রে ২০ হাজার টাকা, (ঘ) প্রথম তিন স্ত্রীর জীবদ্দশায় যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমতিক্রমে চতুর্থ বিবাহের ক্ষেত্রে ৫০ হাজার টাকা। (ঙ) প্রথম স্ত্রী যদি মানসিক ভারসাম্যহীন অথবা বন্ধ্যা হয়, (সেক্ষেত্রে ক, খ, গ ও ঘ এ বর্ণিত কর প্রযোজ্য হবে না) তাহলে পরবর্তী বিয়ের ক্ষেত্রে ২০০ টাকা বিবাহ কর করপোরেশনের রাজস্ব হিসেবে জমা দিতে হবে।
এ প্রসঙ্গে করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান বলেন, ‘বিবাহ বিচ্ছেদ সবার কাছে অপ্রত্যাশিত একটি বিষয়। কিন্তু তারপরও বাস্তবতার নিরিখে বিবাহ বিচ্ছেদ হয়ে থাকে। বিবাহ বিচ্ছেদ সংক্রান্ত তথ্যাদি করপোরেশনে এলেও বিবাহ নিবন্ধন সংক্রান্ত কোনো তথ্য আমাদের কাছে থাকে না। কিন্তু স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান হিসেবে সিটি করপোরেশন আইন অনুযায়ী এটা বাধ্যতামূলক। এ ছাড়াও বিবাহ সংক্রান্ত তথ্য থাকলে বিবাহ বিচ্ছেদের ক্ষেত্রে অনেক সময় তা সিদ্ধান্ত গ্রহণে সহায়ক ভূমিকা পালন করে থাকে। পাশাপাশি অনেক সময় বিজ্ঞ আদালত ও বিভিন্ন সংস্থা হতে এ সংক্রান্ত তথ্য চাওয়া হয়। ফলে, আমাদের এই কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে সামষ্টিকভাবে বিবাহ নিবন্ধন কার্যক্রম একটি সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার আওতায় আসবে।’
শৃঙ্খলা আনয়নে এই কার্যক্রমের প্রয়োজনীয়তা উল্লেখ করে ডিএসসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘অনেক সময় কোনো ব্যক্তির মৃত্যুর পর তার ওয়ারিশান নির্ধারণে জটিলতা দেখা দেয়। তা ছাড়া বিদেশগামী যাত্রীদের ও বিদেশে বসবাসকারী বাংলাদেশিদের ক্ষেত্রে অনেক সময় বিবাহ নিবন্ধন সংক্রান্ত তথ্যের সত্যতা যাচাইয়ের প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়। এ রকম বিশেষ বিশেষ ক্ষেত্রে বিবাহ নিবন্ধন সংক্রান্ত তথ্যাদির গুরুত্ব অপরিসীম। এ ছাড়াও অনেক সময় বিদেশি দূতাবাসগুলোর বিবাহ সংক্রান্ত তথ্যাদির প্রয়োজন হয়। তাই, বিবাহ নিবন্ধন কার্যক্রম লিপিবদ্ধ থাকলে তারাও সিটি করপোরেশনের কাছ হতে এ তথ্য পেতে পারে। সুতরাং, শৃঙ্খলা আনয়নে এ ধরনের কর্মকাণ্ড অনেক ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে।’