আদালতের রায় নিয়ে যা বলল শিশু জেসমিন মালিকা
জাপানি মা নাকানো এরিকো ও বাংলাদেশি বাবা ইমরান শরীফের তিন মেয়েকে নিয়ে হাইকোর্টের রায়ে হতাশা প্রকাশ করেছে এই দম্পতির বড় মেয়ে জেসমিন মালিকা। তিনি বলেন, ‘অবশ্যই আমি আমার বাবা-মা উভয়কেই ভালোবাসি। বড় মেয়ে হিসেবে অবশ্যই এটা আমার চাওয়া, জাপানে আমার সব বোনদের সঙ্গে একসঙ্গে থাকা। কারণ সেখানেই আমাদের বাড়ি। এটাই বাস্তবতা। সবার উদ্দেশে বলতে চাই, আমাদের বেড়ে ওঠা, পড়াশোনা এবং আমাদের সবকিছু এভাবে ধ্বংস করা উচিত নয়।’
আজ মঙ্গলবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) বিচারপতি মামনুন রহমানের একক হাইকোর্ট বেঞ্চ এ সংক্রান্ত আপিল আবেদন আংশিক মঞ্জুর করে এ রায় দেওয়ার পর সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন জেসমিন।
রায়ে হাইকোর্ট বলেন, জাপানি তিন শিশুকে বাবা মায়ের মধ্যে দুই ভাবে থাকার জন্য রায় দিয়েছেন হাইকোর্ট। রায়ে বলা হয়, জেসমিন মালিকা (বড়) ও তার ছোট বোন সোনিয়া তাদের জাপানি মা নাকানো এরিকোর কাছে থাকবে। মেজ মেয়ে লাইলা লিনা তাদের বাংলাদেশি বাবা ইমরান শরীফের কাছে থাকবে।
আরও পড়ুন : জাপানি তিন শিশুকে বাবা-মায়ের মধ্যে ভাগ করে দিলেন হাইকোর্ট
এ বিষয়ে জেসমিন মালিকা বলেন, ‘আজ আমি সবাইকে বলতে চাই, অবশ্যই আমি আমার বাবা-মা উভয়কেই ভালোবাসি। কিন্তু, বাস্তবতা হলো, আমার বাবা আমাদের বাংলাদেশে নিয়ে এসেছেন, যেখানে আমরা আগে কখনও আসিনি। এমনকি, আমরা তার অবিবেচক কর্মাকাণ্ডে শুরুতে বুঝতে পারছিলাম না, কী হচ্ছে! আমরা এদেশে এসে প্রায় পুরো তিন বছর আটকে আছি। আমি জাপানে থাকা আমার আত্মীয়স্বজনকে দেখতে পারছি না। আমার নানি অসুস্থ। আর এসব কিছু আমার বাবার কারণেই হয়েছে। বড় মেয়ে হিসেবে অবশ্যই এটা আমার চাওয়া, জাপানে আমার সব বোনদের সঙ্গে একসঙ্গে থাকা। কারণ সেখানেই আমাদের বাড়ি। এটাই বাস্তবতা।’
জেসমিন আরও বলেন, ‘একইসঙ্গে আরেকটা বিষয় হলো, আমাদের পড়াশোনা-বেড়ে ওঠা সবকিছুই আমাদের থেকে কেড়ে নেওয়া হয়েছে। এটা হতাশাজনক। আমরা সবার উদ্দেশে বলতে চাই, আমাদের বেড়ে ওঠা, পড়াশোনা এবং আমাদের সবকিছু এভাবে ধ্বংস করা উচিত নয়।’
জেসমিন মালিকা বলেন, ‘আমরা গত মাসগুলোতে সবাই দেখেছি, আদালতে চলমান বিচার প্রক্রিয়া। আমার বাবা আমার বোনদের দেখতে বাধা দিয়েছেন, যা অযৌক্তিক। বাবা আমাদেরকে মা সম্পর্কে সব সময় মিথ্যা বলতেন, কিন্তু এখন আমি বুঝতে পারছি, সেসব কিছুই ছিল মিথ্যা। এখন আমি সত্যটা বুঝতে পারছি। আমি বলতে চাচ্ছি, এটা আমাদের বাড়ি নয়। আমরা বাংলাদেশে আগে কখনও আসিনি। আমাদের বাড়ি জাপানে। আমাদের আত্মীয়স্বজনরাও জাপানে। আমাদের সব বন্ধুরাও জাপানে। সব কিছু পিছনে ফেলে আমাদেরকে এদেশে নিয়ে আসা হয়েছে। কোনো কিছু জানানো ছাড়াই যে, একদিন হঠাৎ সবকিছু হারিয়ে যাবে।’