চুরি দেখে ফেলায় গৃহবধূর চোখে-মুখে আঠা লাগিয়ে দেয় চোর : পুলিশ
চুরি করতে দেখে চিৎকার করে ওঠায় খুলনার পাইকগাছার গৃহবধূকে (৪৫) নির্যাতন এবং চোখে ও মুখে আঠা লাগিয়ে দিয়েছিল চোর ইমামুল ওরফে এনামুল। গ্রেপ্তারের পর পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে ইমামুল এই তথ্য জানিয়েছেন বলে দাবি অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুশান্ত সরকারের। আরও বলা হয়েছে, সে এই কাণ্ডের মূল হোতা।
খুলনা জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন আজ শুক্রবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে সুশান্ত সরকার দাবি করেন, ইমামুল সংঘবদ্ধ চোরচক্রের সদস্য ও গৃহবধূকে নির্যাতনের ঘটনার মূল হোতা।
গত সোমবার খুলনার পাইকগাছা উপজেলার রাড়ুলী গ্রাম থেকে চোখ-মুখে সুপার গ্লু বা আঠা লাগানো এবং অচেতন অবস্থায় এক গৃহবধুকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন স্বজনরা। ঘরের মালামাল লুট ও ওই গৃহবধূকে ধর্ষণ করা হয়েছে বলে চিকিৎসকদের জানিয়েছিলেন ওই নারীর স্বামী। এ ঘটনায় গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বাদি হয়ে পাইকগাছা থানায় মামলাও করেন তিনি। যদিও মামলার এজাহারে আসামিদের সবাই অজ্ঞাত।
পরে পুলিশ এ ঘটনায় চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে। তারা হলেন—ইমামুল জোয়াদ্দার ওরফে এনামুল, আবদুস সামাদ, সুমন হালদার ও রাশিদা বেগম।
পুলিশের দাবি, ইমামুল ধর্ষণ ও লুটের সঙ্গে জড়িত। তার মা রাশিদা বেগম লুট করা স্বর্ণ বিক্রি করেছিলেন। সুমন হালদার লুট করা স্বর্ণের ক্রেতা। এই তিনজনকে বৃহস্পতিবার রাতে বিভিন্ন স্থান থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
এ ছাড়া গত বুধবার ভোর রাতে আবদুস সামাদকে সন্দেহভাজন হিসেবে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। পুলিশ তাদের সবাইকে আদালতে হস্তান্তর করেছে।
গ্রেপ্তার ইমামুলের স্বীকারোক্তির বরাত দিয়ে সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুশান্ত সরকার বলেন, গত রোববার সন্ধ্যায় গৃহবধূর বাড়ির পাশের বাগানে ইমামুল নেশা করতে গিয়েছিলেন। সেখানে গৃহবধূকে একা বাড়িতে দেখে ঘরের সানশেড ধরে ছাদের উঠে সিঁড়ি দিয়ে ঘরে প্রবেশ করেন। খাবারে চেতনানাশক ওষুধ মিশিয়ে দিয়ে চলে যান। পরে রাত ২টার দিকে একইভাবে আবার ঘরে ঢুকে মূল্যবান জিনিসপত্র খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। তখন গৃহবধূর ঘুম ভেঙে গেলে তার পকেটে থাকা আঠা বের করে গৃহবধূর চোখে ও মুখে লাগিয়ে দেন। গৃহবধূর সঙ্গে ইমামুলের ধস্তাধস্তির ঘটনা ঘটে। গৃহবধূর গোঙানির শব্দে পাশের বাড়ি থেকে লোকজন সাড়া দিতে শুরু করলে ইমামুল গৃহবধূর কানের দুল ও মোবাইল নিয়ে পালিয়ে যান।