ভুলের চোরাবালিতে আটকে গেছে বিএনপি : ওবায়দুল কাদের
বিএনপি ভুলের চোরাবালিতে আটকে গেছে এমন দাবি করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘সংসদ কেন কার্যকর হবে না। বাধাটা কোথায়? একটা ফ্রি, ফেয়ার নির্বাচন হয়েছে। যেখানে টার্নআউট ফোরটি ওয়ান প্লাস। পৃথিবীর বহু দেশের নির্বাচনে বাংলাদেশের যে টার্নআউট সেটা কম বলা হয়, এটার সুযোগ নেই। এখানে ২৮টি দল অংশ নিয়েছে। একটা অপজিশনও আছে। বিরোধী দলের ভূমিকা জাতীয় পার্টি অলরেডি তাদের কার্যক্রম সংসদে শুরু করেছে।’
আজ রোববার (১৮ ফেব্রুয়ারি) বিকেল ৩টায় আগারগাঁওস্থ নির্বাচন ভবনে রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে নারী আসনের মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া শেষে ‘যেহেতু সব দল নাই, সংসদ কতটা কার্যকরী হবে’ সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের এসব কথা বলেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বিরোধী দল আছে, এমনকি স্বতন্ত্রদের বলা হয়েছে তারা যখন আমাদের নেত্রীর সঙ্গে সাক্ষাত করেন, তখন বলা হয়েছে প্রয়োজনে তারা মনে করলে সরকারের সমালোচনাও তারা করতে পারে। সমালোচনার জন্য স্বতন্ত্ররা আছেন, বিরোধী তো আছেই। তাই সংসদ কার্যকর হওয়ার পথে কোনো অন্তরায় বা বাধা আছে বলে আমরা মনে করি না।’
কিন্তু, বিএনপি তো বলছে সংসদে কেবল সরকারপন্থিদের আওয়াজ, এ কথার জবাবে ওবায়দুল কাদের, ‘তাদের আওয়াজ কোথায় থেমে গেছে! আওয়াজ তো তাদেরও ছিল। সে আওয়াজ এখন কোথায়? সে আওয়াজ তো পালিয়েছে। তারা সরকারকে পালাতে বলেছে, এখন নিজেরাই পালিয়েছে। বাস্তবতা হচ্ছে তাদের আওয়াজ তো কাজে দেয়নি। আমরা যা বলেছি, ইলেকশন করব ফ্রি অ্যান্ড ফেয়ার, জনগণ অংশ নেবে, প্রতিহত করার দুঃসাহস কারও নেই, আমরা শেষ পর্যন্ত সতর্ক পাহারায় আছি। এখনও আমরা সতর্ক পাহারায় আছি, যদি কেউ এই নির্বাচন নিয়ে কোনও প্রকার ষড়ডন্ত্রমূলক সন্ত্রাসমূলক কোনও তৎপরতায় আসে, সেটা আমরা অবশ্যই প্রতিরোধ করব। দেশের জনগণকে নিয়ে সেটা প্রতিহত করব।’
বিএনপি আন্দোলনে ডাকের বিষয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বিএনপির কোমর ভেঙে গেছে আজীবনের জন্য। বাস্তবটাতো তাই। এখন তাদের বিএনপির পক্ষ থেকে নির্বাচনের পরে যে তর্জন গর্জন করেছে এটা তো বাস্তবে আষাঢ়ের তর্জন গর্জন, অন্তঃসারশূন্য। আমরা তো কিছুই দেখছি না। আন্দোলন কাকে বলে, আন্দোলনে পাবলিক থাকতে হবে। নেতা-কর্মী দিয়ে আন্দোলন হবে না। তাদের নেতা-কর্মীরা আন্দোলন করতে পারেনি। বেশিদূর যেতে পারেনি। কারণ আন্দোলনের বস্তুগত পরিস্থিতি দেশে বিরাজমান ছিল না। এখনো নেই। তাদেরও সাবজেকটিভ প্রিপারেশন ছিল না। সুসংগঠিত যে প্রস্তুতি সে প্রস্তুতিতে তারা নেতিবাচক রাজনীতির দ্বারা তারা ভুল করেছে। ভুলের চোরাবালিতে আটকে গেছে।’
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘জাফরুল্লাহ চৌধুরী এই কথাটা প্রকাশ্যে বলে গেছেন যে বিএনপি হচ্ছে কোমর ভাঙা, হাঁটুভাঙ্গা দল। আমি জাস্ট তাকে কোট করেছি। কোমর ভাঙ্গার কথা আমি বলিনি, জাফরউল্লাহ বলেছেন।’
জাতীয় পার্টি কী পারবে- এমন প্রশ্নে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘সংসদ চলুক। যখন বাক-বিতণ্ডা হবে, পয়েন্ট অব অর্ডারে কথা হবে তখন বুঝতে পারবেন।’
কিন্তু, বিএনপি তো অভিযোগ করে, তাদের নির্বাচনে আসতে দেওয়া হয়নি, এমন প্রশ্নে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘তারা আসেনি কেন? আমরা আসতে দেইনি, এটা হাস্যকর। বিএনপিকে নিয়ে আমাদের মাথাব্যথা নেই। কারণ তারা যা মুখে বলছে তা দেখাতে পারেনি। দেশের মানুষকে তারা আন্দোলনে সম্পৃক্ত করতে পারেনি। মানুষ সম্পৃক্ত হলে আন্দোলন সফল হয়।
যুবলীগ থেকে বিএনপির নিবন্ধন বাতিলের বিষয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, তারা আমাদের একটা স্বতন্ত্র সংগঠন। তারা সেটা করতে পারে। তবে আমাদের দল থেকে এটা করা হয়নি। এখন ছাত্রলীগ যদি বলে বিএনপিতে নিষিদ্ধ করা হোক, আমরা কী সেটার সঙ্গে লাফাব? যুবলীগ তাদের চিন্তা থেকে বলছে। যুবলীগ চাইলে তো আর একটা জাতীয় দল নিষিদ্ধ হয়ে যাবে না। নিষিদ্ধ হওয়ার বিষয়টাতো আমাদের মূল দলের কোনো নেতা-কর্মী এযাবৎ বোধহয় বলেনি।