সড়ক দুর্ঘটনায় জানুয়ারিতে সারা দেশে নিহত ৪৮৬ জন
সড়ক দুর্ঘটনায় গত এক মাসে জানুয়ারিতে সারা দেশে ৪৮৬ জন নিহত হয়েছেন। এ সময়ে এক হাজার ৫৪ জন আহত হয়েছেন। দেশের গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনের ভিত্তিতে ৫২১টি সড়ক দুর্ঘটনার তথ্য বিশ্লেষণ করে জানিয়েছে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি।
আজ রোববার (২৫ ফেব্রুয়ারি) এক বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।
বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির দুর্ঘটনা মনিটরিং সেলের পর্যবেক্ষণে উঠে এসেছে, জানুয়ারিতে জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতালে (পঙ্গু হাসপাতাল) এক হাজার ১৫৩ জন, ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ৪৭২ জন, চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ৭৭১ জন, কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ৫৫৮ জন, নারায়ণগঞ্জে খানপুর হাসপাতালে ৪২০ জনসহ ৩ হাজার ৩৭৪ জন যাত্রী ও পথচারী সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয়ে জরুরি বিভাগে ভর্তি হয়েছে। সেই হিসাবে হাসপাতালের তথ্যসহ আহত রোগীর সংখ্যা ৪ হাজার ৪২৮ জন।
এ ছাড়া রেলপথে ৪৪টি দুর্ঘটনায় ৪২ জন নিহত, ২১ জন আহত হয়েছে। নৌপথে ৭টি দুর্ঘটনায় ৬ জন নিহত, ১৩ জন আহত ও ৩ জন নিখোঁজ রয়েছে। সড়ক, রেল ও নৌপথে সর্বমোট ৫৭২টি দুর্ঘটনায় ৫৩৪ জন নিহত এবং ৪ হাজার ৪৬২ জন আহত হয়েছে।
এই সময়ে ১৬৪টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ১৭০ জন নিহত ও ১৭৩ জন আহত হয়েছে। যা মোট দুর্ঘটনার ৩১ দশমিক ৪৭ শতাংশ। নিহত ৩৪ দশমিক ৯০ শতাংশ ও আহত ১৬ দশমিক ৪১ শতাংশ। ওই মাসে সবচেয়ে বেশি সড়ক দুর্ঘটনা সংঘটিত হয়েছে ঢাকা বিভাগে। এ জেলায় ১২৩টি সড়ক দুর্ঘটনায় ১১৭ জন নিহত ও ২৭০ জন আহত হয়েছে। সবচেয়ে কম সড়ক দুর্ঘটনা সংঘটিত হয়েছে বরিশাল বিভাগে। এ জেলায় ৩৩টি সড়ক দুর্ঘটনায় ২৩ জন নিহত ও ১২৫ জন আহত হয়েছে।
সড়ক দুর্ঘটনায় আক্রান্ত ব্যক্তির মধ্যে ১৪ জন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য, ১৩৩ জন চালক, ৭৪ জন পথচারী, ২৪ জন পরিবহণশ্রমিক, ৬৯ জন শিক্ষার্থী, ৬ জন শিক্ষক, ৭৫ জন নারী, ৫১ জন শিশু, তিনজন সাংবাদিক, একজন চিকিৎসক, একজন আইনজীবী, একজন প্রকৌশলী, তিনজন মুক্তিযোদ্ধা, ১৩ জন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীর পরিচয় মিলেছে।
তাদের মধ্যে নিহত হয়েছে তিনজন পুলিশ সদস্য, সেনাবাহিনীর একজন, বিমানবাহিনী একজন, একজন চিকিৎসক, একজন আইনজীবী, তিনজন মুক্তিযোদ্ধা, একজন প্রকৌশলী, ৯৬ জন বিভিন্ন পরিবহণের চালক, ৬৯ জন পথচারী, ৪৭ জন নারী, ৩৮ জন শিশু, ২৯ জন শিক্ষার্থী, ১২ জন পরিবহণ শ্রমিক, ৬ জন শিক্ষক ও ৯ জন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী।
এই সময় সড়ক দুর্ঘটনায় সংঘটিত ৭২৭টি যানবাহনের পরিচয় মিলেছে। এতে দেখা যায়, ২৫ দশমিক ১৭ শতাংশ মোটরসাইকেল, ২৫ দশমিক ৯৯ শতাংশ ট্রাক-পিকাপ-কাভার্ডভ্যান ও লরি, ১১ দশমিক ৫৫ শতাংশ বাস, ১৫ দশমিক ৮১ শতাংশ ব্যাটারিচালিত রিকশা ও ইজিবাইক, ৪ দশমিক ৮১ শতাংশ সিএনজিচালিত অটোরিকশা, ১০ দশমিক ৫৯ শতাংশ নছিমন-করিমন-মাহিন্দ্রা-ট্রাক্টর ও লেগুনা, ৬ দশমিক শূন্য ৫ শতাংশ কার-জিপ-মাইক্রোবাস সড়কে দুর্ঘটনার কবলে পড়েছে।
সংঘটিত মোট দুর্ঘটনার ৫১ দশমিক ৬৩ শতাংশ গাড়িচাপা দেওয়ার ঘটনা, ২২ দশমিক ৪৫ শতাংশ মুখোমুখি সংঘর্ষ, ১৪ দশমিক ৫৮ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ে, ১০ দশমিক ৩৬ শতাংশ বিবিধ কারণে, চাকায় ওড়না পেঁচিয়ে শূন্য দশমিক ৫৭ শতাংশ এবং শূন্য দশমিক ৩৪ ট্রোন-যানবাহনের সংঘর্ষে ঘটে।
দুর্ঘটনার ধরন বিশ্লেষণে দেখা যায়, এ মাসে সংঘটিত মোট দুর্ঘটনার ৩৩ দশমিক ৯৭ শতাংশ জাতীয় মহাসড়কে, ১৭ দশমিক শূন্য ৮ শতাংশ আঞ্চলিক মহাসড়কে, ৪১ দশমিক ৪৮ শতাংশ ফিডার রোডে সংঘটিত হয়েছে। এ ছাড়া সারা দেশে সংঘটিত মোট দুর্ঘটনার ৫ দশমিক ৭৫ শতাংশ ঢাকা মহানগরীতে, শূন্য দশমিক ৯৫ শতাংশ চট্টগ্রাম মহানগরীতে ও শূন্য দশমিক ৩৪ শতাংশ রেলক্রসিংয়ে সংঘটিত হয়েছে।