জনসাধারণের ক্রয় ক্ষমতা বাড়ছে : বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী
স্থানীয় পণ্যের মূল্য কিছুটা বৃদ্ধি পেলেও জনসাধারণের ক্রয় ক্ষমতাও বাড়ছে বলে দাবি করেছেন বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু। আজ মঙ্গলবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় সংসদে প্রশ্নোত্তরে বিরোধী দলীয় চিফ হুইপ মুজিবুল হক চুন্নুর প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী এ কথা জানান।
স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদ অধিবেশন শুরু হয়। বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রীর অনুপস্থিতিতে তার পক্ষে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী শফিকুর রহমান চৌধুরী প্রশ্নোত্তর পর্বে সংসদ সদস্যদের প্রশ্নের জবাব দেন।
বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার আওতায় আনার জন্য সরকার বদ্ধ পরিকর। সেই লক্ষ্যে সরকার নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। বাংলাদেশে ব্যবহৃত নিত্যপ্রয়োজনীয় ভোগ্যপণ্যের বড় একটি অংশ দেশে উৎপাদিত হয়ে থাকে। সাধারণত ভোজ্যতেল, চিনি ও মশলা জাতীয় পণ্য আমদানি করা হয়। আমদানিকৃত পণ্যের মূল্য নির্ধারণের সঙ্গে আন্তর্জাতিক বাজার মূল্য, পরিবহণ খরচ ও অন্যান্য আনুষঙ্গিক বিষয় সম্পর্কিত। স্থানীয় পণ্যের মূল্য কিছুটা বাড়লেও জনসাধারণের কেনার ক্ষমতাও বাড়ছে।’
স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য মুহাম্মদ সাইফুল ইসলামের লিখিত প্রশ্নের জবাবে বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘বর্তমানে ভারত, চীন ও পাকিস্তানসহ প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে আমাদের বাণিজ্য ঘাটতি রয়েছে। গত ২০২২-২৩ অর্থবছরে চীনের সঙ্গে সর্বোচ্চ ঘাটতি ছিল ১৫ হাজার ৪৮৮ দশমিক ৮৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। ভারতের সঙ্গে ৭ হাজার ১৬০ দশমিক ৮১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার, পাকিস্তানের সঙ্গে ৪৬৬ দশমিক ৩৩, মিয়ানমারের সঙ্গে ঘাটতি ১১৬ দশমিক ২১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার, ভুটানের সঙ্গে ঘাটতি ১৪ দশমিক ২৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলার এবং আফগানিস্তানের সঙ্গে বাণিজ্য ঘাটতি ১ দশমিক ৪৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। নেপাল, শ্রীলঙ্কা ও মালদ্বীপের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্য ঘাটতি নেই।’
বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী বলেন, পার্শ্ববর্তী ও প্রতিবেশী দেশগুলোর মধ্যে চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্য ঘাটতির পরিমাণ বেশি। আর সার্কভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে ভারতের সঙ্গে ঘাটতি বেশি। ২০২২-২৩ অর্থবছরে ঘাটতির পরিমাণ ১৫ দশমিক ৪৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।
স্বতস্ত্র সংসদ সদস্য মোহাম্মদ হুছামুদ্দীন চৌধুরীর লিখিত প্রশ্নের জবাবে বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘এক সময় দেশে চায়ের অভ্যন্তরীণ চাহিদা উৎপাদনের তুলনায় কম ছিল। তখন বেশি চা উদ্বৃত্ত থাকতো এবং বেশি চা রপ্তানি করা হতো। বর্তমানে দেশে চায়ের অভ্যন্তরীণ চাহিদা প্রায় ১০০ মিলিয়ন কেজি। উৎপাদন ও চাহিদা প্রায় সমান।’
প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, ‘মানুষের ক্রয় ক্ষমতা বৃদ্ধি পাওয়ায় অভ্যন্তরীণ চাহিদা পূরণের জন্য দেশে উৎপাদিত প্রায় সব চা ব্যবহৃত হয়ে থাকে। ফলে রপ্তানির জন্য খুব বেশি চা উদ্বৃত্ত থাকে না। তবে ২০২৩ সালে দেশে ১০২ দশমিক ৯২ মিলিয়ন কেজি চা উৎপাদনের রেকর্ড গড়েছে। তার মধ্যে সাড়ে ১০ লাখ কেজি চা রপ্তানি হয়েছে। পক্ষান্তরে মাত্র ৬ লাখ কেজি চা পুনঃরপ্তানি ও ভ্যালু অ্যাডেড চা তৈরির জন্য আমদানি হয়ে থাকে।’
স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য পংকজ নাথের এক প্রশ্নের জবাবে বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘রমজান মাসে আবশ্যকীয় দ্রব্যাদির মূল্য সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে রাখতে বাজারে নিত্যপণ্যের পর্যাপ্ত সরবরাহ বজায় রাখার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।’