ডিআইজি মিজানের ১৪ বছরের কারাদণ্ড বহাল
জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের মামলায় বরখাস্ত হওয়া পুলিশের উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি) মিজানুর রহমানের ১৪ বছরের কারাদণ্ড বহাল রেখেছেন হাইকোর্ট। আজ বুধবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) বিচারপতি মো. কামরুল হোসেন মোল্লার হাইকোর্ট বেঞ্চ এ কারাদণ্ডাদেশ বহাল রাখেন।
রায়ে আদালত বলেন, মিজানসহ চারজনের বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়েছে। দণ্ডিত আসামি মিজানের জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত করার আদেশ দেন আদালত। পরে এই রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করেন ডিআইজি মিজান।
আদালতে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট খুরশীদ আলম খান।
গত বছরের ২১ জুন জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের মামলায় বরখাস্ত হওয়া ডিআইজি মিজানুর রহমানকে ১৪ বছরের কারাদণ্ডাদেশ দেন আদালত। এ ছাড়া এই মামলায় মিজানুর রহমানের স্ত্রী, ভাই ও ভাগনেকে সাত বছর করে কারাদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়। ঢাকার বিশেষ জজ আদালত ৬-এর বিচারক মঞ্জুরুল ইমাম এ রায় দেন।
এর আগে গত বছরের ২৩ ফেব্রুয়ারি ঘুষ লেনদেনের অভিযোগে দুদকের করা মামলায় মিজানকে তিন বছর কারাদণ্ড দেন ঢাকার আরেকটি আদালত।
জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে ২০১৯ সালের ২৪ জুন মিজানসহ চারজনের বিরুদ্ধে মামলা করেন দুদকের পরিচালক মঞ্জুর মোর্শেদ। মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে তিন কোটি ২৮ লাখ ৬৮ হাজার টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন এবং তিন কোটি সাত লাখ পাঁচ হাজার টাকার সম্পদের তথ্য গোপনের অভিযোগ আনা হয়। মামলাটি তদন্ত করে ২০২২ সালের ৩০ জানুয়ারি মিজানসহ চারজনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়। দুদকের পক্ষ থেকে ২৭ জন সাক্ষীকে আদালতে হাজির করা হয়।
মামলার বাদী দুদক পরিচালক মঞ্জুর মোর্শেদ আদালতকে বলেছিলেন, দুর্নীতির মাধ্যমে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মিজানের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু হয়। প্রাথমিক অনুসন্ধানে অভিযোগের সত্যতা পাওয়ার পর তাঁকে সম্পদের হিসাব দিতে নোটিশ দেওয়া হয়। পরে ২০১৮ সালের ১ আগস্ট তিনি দুদকে সম্পদের হিসাব জমা দেন। সেখানে তিনি মোট এক কোটি ১০ লাখ ৪২ হাজার ২৬০ টাকার স্থাবর সম্পদ এবং ৪৬ লাখ ২৬ হাজার ৭৫২ টাকার অস্থাবর সম্পদের হিসাব দেখান।
মঞ্জুর মোর্শেদ আদালতকে আরও বলেন, অনুসন্ধানে প্রাপ্ত তথ্য পর্যালোচনা করে দেখা যায়, ডিআইজি মিজান অবৈধ অর্থ দিয়ে নিকটাত্মীয়দের নামে সম্পদ কিনে তা কৌশলে ভোগদখল করেন। মিজান তার ভাগনে মাহমুদুল হাসানের নামে ২০০২ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি ২৪ লাখ ২১ হাজার ২২৫ টাকা দিয়ে গুলশান-১-এর পুলিশ প্লাজা কনকর্ডে একটি দোকান বরাদ্দ নেন। ওই দোকান তার স্ত্রীর নামে ভাড়া নিয়ে নিজের দখলে রাখেন। এ ছাড়া মাহমুদুলের নামে ২০১৩ সালের ২৫ নভেম্বর রাজধানীর কারওয়ান বাজারের একটি বেসরকারি ব্যাংকের শাখায় একটি স্থায়ী আমানত (ফিক্সড ডিপোজিট) হিসাব খোলেন। সেখানে ৩০ লাখ টাকা জমা রাখেন তিনি।