জঙ্গি দমনে বিপিএম পদক পেলেন র্যাব-১৪ অধিনায়ক মহিবুল
জঙ্গি দমন, জঙ্গি তৎপরতা নিরসনে অসামান্য ভূমিকা পালন এবং অসীম বীরত্বের স্বীকৃতি হিসেবে পুলিশের সর্বোচ্চ পদক ‘বাংলাদেশ পুলিশ মেডেল (বিপিএম)’ পেয়েছেন ময়মনসিংহ র্যাব-১৪-এর অধিনায়ক অতিরিক্ত ডিআইজি মোহাম্মদ মহিবুল ইসলাম খান। মঙ্গলবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর রাজারবাগ প্যারেড গ্রাউন্ডে কুচকাওয়াজ শেষে তাদের পদক পরিয়ে দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এ বিষয়ে অতিরিক্ত ডিআইজি মহিবুল ইসলাম খান এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘আমার ওপর অর্পিত দায়িত্ব সততার সঙ্গে পালন করে যাচ্ছি। যখন যে দায়িত্ব এসেছে রাষ্ট্রের প্রয়োজনে তা সঠিকভাবে পালন করেছি। কাজের স্বীকৃতি সব সময় আনন্দের। ভবিষ্যতে আরও ভালোভাবে দায়িত্ব পালনে এ অর্জন আমাকে অনুপ্রেরণা যোগাবে।’
এবার র্যাব কর্মকর্তা মহিবুল ইসলাম খানসহ ৩৫ জন বিপিএমে ভূষিত হয়েছেন। মহিবুল ইসলাম খান পুলিশ সুপার থাকাকালীন ঢাকা মহানগর পুলিশের কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিটে দায়িত্ব পালন করেছেন। তখন চালিয়েছেন জঙ্গিবিরোধী বড় অভিযান। ভূমিকা রেখেছিলেন জঙ্গিবাদ দমনে। পদোন্নতির পর দায়িত্ব পান র্যাব-১৪ অধিনায়কের। পুরোনো অভিজ্ঞতায় সেখানেও জঙ্গি দমনে রাখছেন ভূমিকা। কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ তিনি পেলেন বিপিএম।
মহিবুল ‘জঙ্গি দমন ও জঙ্গি তৎপরতা নিরসনে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করে আসছেন’ উল্লেখ করে বলা হয়েছে, ২০০৫ সালের ১৭ আগস্ট সারা দেশে সিরিজ বোমা হামলা চালিয়ে নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন জেএমবির ময়মনসিংহ অঞ্চলের প্রধান সংগঠক মো. আজিজুল হক ওরফে গোলাপ পালিয়ে ছিলেন নির্বিঘ্নে। দীর্ঘ ১৮ বছর পর এই দুর্ধর্ষ জঙ্গিকে গ্রেপ্তারে সফল হন র্যাব অধিনায়ক মহিবুল ইসলাম খান। এ ছাড়া এই কর্মকর্তা দুটি পৃথক জঙ্গি মামলার ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি জেমবি জঙ্গি মো. মোস্তফা ওরফে মোস্ত ওরফে শামীম এবং সাত বছর ধরে পলাতক নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন হিযবুত তাহরীরের সূরা সদস্য মো. আ. কাইয়ুমকে গ্রেপ্তারেও সফলতা দেখান। তাদের মধ্যে মোস্তফা জেএমবির আত্মঘাতী দলের সদস্য ছিলেন।
জঙ্গি দমনে সফলতার পাশাপাশি মানবতাবিরোধী অপরাধে ট্রাইব্যুনালের দণ্ড পাওয়া যুদ্ধাপরাধীদের গ্রেপ্তারেও সফলতা দেখান মহিবুল ইসলাম খান। গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে একাত্তরে গণহত্যা, লুণ্ঠন, অগ্নিসংযোগ, অপহরণ ও ধর্ষণের অভিযোগে মৃত্যুদণ্ড পাওয়া যুদ্ধাপরাধী সুলতান মাহমুদ ফকিরকে গ্রেপ্তার করেন তিনি। ওই বছরের জুনে ওয়ারেন্টভুক্ত পলাতক যুদ্ধাপরাধী মো. মোখলেছুর রহমান ওরফে তারাকে গ্রেপ্তারেও সফলতা দেখান তিনি।
ময়মনসিংহের মুক্তাগাছা থেকে একটি মোবাইলফোন অপারেটর কোম্পানির কর্মকর্তাসহ তিনজনকে র্যাব পরিচয়ে অপহরণ করে মুক্তিপণ দাবি করা হয়। অভিযোগ পেয়েই র্যাব-১৪-এর অধিনায়ক মহিবুল ইসলাম খান ওই ঘটনার রহস্য উদ্ঘাটন করেন এবং র্যাব পরিচয় দেওয়া অপহরণকারীদের গ্রেপ্তার ও অপহৃতদের উদ্ধার করেন। তিনি ২০০৫ সালে সহকারী পুলিশ সুপার হিসেবে পুলিশ বাহিনীতে যোগ দেন। পুলিশের বিভিন্ন ইউনিটে দায়িত্ব পালন করে ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে র্যাব-১৪-তে অধিনায়ক হিসেবে দায়িত্ব পান।