আমরা নাকি আওয়ামী লীগের দালাল : সংসদে জাপা মহাসচিব
জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু বলেছেন, ‘যে সমস্ত বুদ্ধিজীবী বলেন জাতীয় পার্টি নির্বাচনে এসেছে আওয়ামী লীগের দালাল হিসেবে, বাজে ভাষায় বলেন তারা। বিএনপির একজন নেতা বলেছেন, আমরা নাকি আওয়ামী লীগের দালাল।’
গতকাল বৃহস্পতিবার (২৯ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় সংসদে রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর আনা ধন্যবাদ প্রস্তাবের আলোচনায় অংশ নিয়ে জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু এই দাবি করেন।
মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, ‘আমার প্রশ্ন হলো, বিএনপিও তো নির্বাচনের আগে সর্বোচ্চ মহল থেকে আমাকে, আমার দলের নেতাকে সুপারিশ করেছে নির্বাচনে না যাওয়ার জন্য। নির্বাচনে না আসলে বিএনপি বলে ভালো। আসলে বলে খারাপ।’
জাতীয় পার্টি নির্বাচনে অংশ নেবে কি না, তা নিয়ে সংশয়ে ছিল উল্লেখ করে মুজিবুল হক সংসদে বলেন, ‘নির্বাচনে আসলাম, কী হলো, নাই-বা বললাম। অভিজ্ঞতা তো হলো। জাতীয় পার্টির মহাসচিব হিসেবে একটা কথা বলতে পারি, জাতীয় পার্টি নির্বাচনে আসার কারণে সাংবিধানিক ধারাকে আমরা অক্ষুণ্ন রাখতে পেরেছি।’
নির্বাচন নিয়ে অনেক কথা আছে, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে সারা দেশে মানুষের মধ্যে অনেক প্রশ্ন রয়েছে বলে মন্তব্য করেন বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ মুজিবুল হক। তিনি বলেন, ‘এই নির্বাচন নিয়ে অনেক প্রশ্ন, বিশেষ করে বিএনপিসহ অনেকগুলো দল নির্বাচনে আসেনি। আবার অনেক দল নির্বাচনে এসেছিল। নির্বাচন নিয়ে দেশের মানুষের মধ্যে অনেক কথা আছে।’
মুজিবুল হক বলেন, ‘রাষ্ট্রপতির ভাষণে সরকারের প্রশংসাসূচক বিষয়গুলো এসেছে। গরিব সাধারণ মানুষ যে মূল্যবৃদ্ধির কারণে অসহনীয় জীবন যাপন করছেন, দুর্নীতি রোধ, টাকা পাচার বন্ধ, অর্থনৈতিক সংকট উত্তরণ, সুশাসন কায়েম, নির্বাচনকে বিতর্কের ঊর্ধ্বে রাখতে কী করা যায়, এসব বিষয়ে ভাষণে কিছু দেখা যায়নি।’
বড় বড় প্রকল্পে বিদেশি ঋণ নেওয়ার কথা তুলে ধরে মুজিবুল হক বলেন, ‘ঋণের টাকায় অতিরিক্ত বিদ্যুৎকেন্দ্র করা হয়েছে। বিদ্যুৎকেন্দ্র বসিয়ে রেখে হাজার হাজার কোটি টাকা দেওয়া হচ্ছে। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে ডলারের সংকট, রেমিট্যান্স (প্রবাসী আয়) কমা, টাকা পাচার, দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি। এসব কারণে দেশ অর্থনৈতিক সংকটে আছে।’
মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, ‘দুর্নীতির বিরুদ্ধে আপসহীন হওয়া, টাকা পাচার, ভুয়া ঋণ বন্ধ করা, সুশাসন চালু করা হলে এবং শুধু রাজনৈতিক স্টান্টবাজির জন্য বড় বড় প্রকল্প নেওয়া না হলে সংকট থেকে বেরিয়ে আসা সম্ভব হবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘ ব্যাংক না চাইলে টাকা পাচার সম্ভব নয়। খেলাপি ঋণের বড় অংশই কুঋণে পরিণত হয়েছে। পি কে হালদারসহ অনেক ব্যক্তি হাজার হাজার কোটি টাকা পাচার করে নিয়েছেন ব্যাংক থেকে। কেউ দেখার নেই।’