হট্টগোল ও মারধরের পর পুলিশের হেফাজতে ব্যালট
সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির (২০২৪-২৫) নির্বাচনে দুদিন শান্তিপূর্ণভাবে ভোট গ্রহণ হলেও গণনা নিয়ে হট্টগোল ও মারধরের ঘটনা ঘটেছে। এতে একজন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেলসহ বেশ কয়েকজন আইনজীবী আহত হন। পরে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয় ব্যালট। আজ শুক্রবার (৮ মার্চ) শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ব্যালট সিলগালা অবস্থায় পুলিশের তত্ত্বাবধানে রয়েছে।
এবারের নির্বাচনে ভোট গ্রহণ করা হয় গত বুধবার ও গতকাল বৃহস্পতিবার। ভোট গ্রহণ শান্তিপূর্ণ পরিবেশে শেষ হয়। তবে, ভোট গণনাকে কেন্দ্র করে আজ শুক্রবার (৮ মার্চ) ভোরে সমিতি মিলনায়তনে হট্টগোল, বাদানুবাদ ও মারধরের মতো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছেন বেশ কয়েকজন আইনজীবী।
সাধারণ আইনজীবীরা জানান, রাতেই ভোট গণনা করা হবে কি না, এ নিয়ে কয়েকজন প্রার্থীর মধ্যে মতবিরোধের জের ধরে হট্টগোল ও মারধরের ঘটনা ঘটে। এতে কয়েকজন আইনজীবী আহত হন।
নির্বাচন পরিচালনা-সংক্রান্ত উপকমিটির আহ্বায়ক জ্যেষ্ঠ আইনজীবী আবুল খায়েরের বলেন, ‘ভোট গণনা হয়নি। ব্যালট সিলগালা অবস্থায় পুলিশের তত্ত্বাবধানে রয়েছে। পরবর্তী পদক্ষেপ সম্পর্কে গণমাধ্যমকে জানানো হবে।’
তবে সম্পাদক প্রার্থী নাহিদ সুলতানা যুথী আজ সন্ধ্যায় সাংবাদিকদের বলেন, ‘উপকমিটির আহ্বায়ক আবুল খায়ের সকালে সমিতির সম্পাদক হিসেবে আমাকে নির্বাচিত ঘোষণা করেছেন। সংশ্লিষ্ট সকলকে ধন্যবাদ।’
আর সাদা প্যানেল থেকে সম্পাদক পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী জ্যেষ্ঠ আইনজীবী শাহ মঞ্জুরুল হক সাংবাদিকদের বলেন, ‘উদ্ভূত পরিস্থিতির কারণে নির্বাচন পরিচালনা সংক্রান্ত উপকমিটি ভোট গণনা করতে সক্ষম হয়নি। শনিবার ভোট গণনা হতে পারে।’
নীল প্যানেল থেকে সম্পাদক পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী প্রার্থী জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মো. রুহুল কুদ্দুস বলেন, ইতিমধ্যে তো নির্বাচন উপকমিটির প্রধান সম্পাদক পদে ফলাফল ঘোষণা করেছেন। ব্যালট বাক্স বহিরাগতরা সমিতির বাইরে নিয়ে গেছে। এখন হয়তো আবারও নাম ঘোষণা হতে পারে। এ সবই নিজেদের মত নির্বাচনি ফলাফল ঘোষণা করার নাটক মাত্র।
ঘটনাস্থলে থাকা একাধিক আইনজীবীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দুদিন ভোট গ্রহণ শেষে বৃহস্পতিবার রাত ১১টার দিকে ব্যালট বাক্স খোলা হয়। ওই ব্যালট গণনার জন্য বাছাইও করা হয় কয়েক ঘণ্টা ধরে। ওই সময় বিএনপি সমর্থিত প্যানেলের সম্পাদক পদপ্রার্থী ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল ও স্বতন্ত্র সম্পাদক পদপ্রার্থী নাহিদ সুলতানা যুথী, নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সদস্য ও অর্ধশত আইনজীবী উপস্থিত ছিলেন। তবে উপস্থিত ছিলেন না সভাপতি পদ প্রার্থী এমকে রহমান, আবু সাঈদ সাগর, ব্যারিস্টার এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন ও সম্পাদক প্রার্থী শাহ মঞ্জুরুল হক।
বাছাইতে দেখা যায়, সদস্য পদে ভোট গ্রহণের চাইতে কিছু ব্যালট বেশি রয়েছে। বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন তোলেন সম্পাদক প্রার্থী রুহুল কুদ্দুস কাজল ও নাহিদ সুলতানা যুথী। তারা বিষয়টি নিয়ে নির্বাচন পরিচালনা কমিটির কাছে লিখিত অভিযোগ দেন। এতে ১৫০টি ব্যালট বেশি থাকার কথা বলা হয়। পরে তাঁরা ভোট গণনা করতে তাগাদা দেন পরিচালনা কমিটিকে। একপর্যায়ে শুরু হয় গণনা। সে সময় সহসভাপতি প্রার্থী দেওয়ান মো. আবু ওবাঈদ হোসেন সেতু ও রমজান আলী শিকদার এবং সহসম্পাদক প্রার্থী ব্যারিস্টার হুমায়ন কবির পল্লবসহ কয়েকজন ভোট গণনা করতে নিষেধ করেন। এ নিয়ে আইনজীবীদের মধ্যে হট্টগোল এক পর্যায়ে মারামারিতে রূপ নেয়।