৫২৮টি স্বর্ণের বার উদ্ধারের মামলায় খালাস পেলেন ১১ জন
৫২৮টি স্বর্ণের বার উদ্ধারের মামলায় সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের নেতা রিয়াজ উদ্দিনসহ ১১ জনকে খালাস দিয়েছেন আদালত। গতকাল সোমবার (১১ মার্চ) ঢাকার ১৩তম অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ কুদরত এ এলাহী এ রায় ঘোষণা করেন।
আদালতের সরকারি কৌঁসুলি শহিদ উদ্দিন গণমাধ্যমকে এ বিষয়ে জানিয়েছেন। তিনি বলেন, গতকাল ১১ মার্চ স্বর্ণ উদ্ধারের মামলায় এস কে মোহাম্মদ আলী নামের এক আসামিকে দুই বছরের কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড দিয়েছেন আদালত এবং অর্থদণ্ড অনাদায়ে তাকে আরও তিন মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। খালাস পাওয়া অপর আসামিরা হলেন-সিভিল এভিয়েশনের চাকরিচ্যুত কর্মকর্তা নুরুল ইসলাম, হাজী মুজিবর রহমান, সালেহ আহমেদ, আবু আহমেদ, নবী নেওয়াজ খান, ওমর ফারুক, আলী হোসেন, উজ্জ্বল ঘোষ ও পঙ্কজ সাহা।
সরকারি কৌঁসুলি আরও বলেন, 'কোন মামলায় লঘুদণ্ড ও গুরুদণ্ড দেওয়ার এখতিয়ার আদালতের। মামলায় যারা খালাস পেয়েছেন, তাদের সম্পর্কে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা অভিযোগপত্রে বলেছেন, তারা দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের সহযোগী। কিন্তু, সহযোগিতার কোনো ডকুমেন্ট ছিল না। সাক্ষ্য দেওয়ার সময়ও সে সম্পর্কে কোনো তথ্য-উপাত্ত আসেনি। তাই, হয়ত আদালত তাদের খালাস দিয়েছেন। আমরা বিস্তারিত রায় পেলে পর্যালোচনা করে দেখব যে, আপিল করা যায় কি না।’
নথি থেকে জানা গেছে, ২০১৪ সালের ২৫ ডিসেম্বর পুরানা পল্টনের ২৯/১ নম্বর বাসার ছয়তলার ফ্ল্যাটে অভিযান চালায় শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর। মোহাম্মাদ আলীর ওই বাসা থেকে ৬১ কেজি ৫৩৮ গ্রাম ওজনের ৫২৮টি স্বর্ণের বার ও বিপুল পরিমাণ দেশি-বিদেশি মুদ্রা জব্দ করা হয়। বালিশের কাভার ও সোফার কুশনের ভেতর, জাজিম-তোশকের নিচে, আলমারি ও বাসার ফলস (কৃত্রিম) ছাদের ওপর পাওয়া যায় পাঁচ বস্তা দেশি-বিদেশি মুদ্রা ও সোনার বার। এর আনুমানিক মূল্য ৩০ কোটি টাকার বেশি। ব্যাংকে রাখা নিরাপদ মনে না করায় আসামি মোহাম্মদ আলী সাড়ে ৪ কোটি টাকা ও ১৫ লাখ সৌদি মুদ্রা বাসায় রাখেন। এ ঘটনায় শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোস্তাফিজুর রহমান বাদী হয়ে মামলা করেন।
পরবর্তীতে, ২০১৬ সালের ২ নভেম্বর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ঢাকা মহানগর পুলিশের সহকারী পুলিশ কমিশনার (ডিবি) গোলাম সাকলায়েন ১২ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। অভিযোগপত্রে বলা হয়, আসামি এস কে মোহাম্মদ আলীসহ অন্য আসামিরা সংঘবদ্ধ চোরাচালান চক্রের সক্রিয় সদস্য। পরস্পরের যোগসাজশে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ থেকে চোরাচালানের মাধ্যমে সোনার বার এনে বাসায় জমা রাখতেন। পরে আসামি উজ্জ্বল, বাবু ও পঙ্কজদের সহায়তায় সোনা বিক্রি করতেন। এস কে মোহাম্মদ আলী হুন্ডির আড়ালে মুদ্রা ও সোনা চোরাচালান ব্যবসা করতেন।