গাজীপুরে গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে দগ্ধ আরও চারজনের মৃত্যু
গাজীপুরের কালিয়াকৈরে গ্যাস সিলিন্ডার থেকে ছড়িয়ে পড়া আগুনে দগ্ধ আরও চারজনের মৃত্যু হয়েছে। ফলে, এ ঘটনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ১০ জনে। গতকাল রোববার (১৭ মার্চ) দিবাগত রাত থেকে আজ সোমবার সকাল পর্যন্ত বিভিন্ন সময় শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান চারজন।
আজ সোমবার দুপুর পৌনে ১২টার দিকে বার্ন ইনস্টিটিউটের আবাসিক চিকিৎসক ডা. তরিকুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
নতুন করে মারা যাওয়া ব্যক্তিরা হলেন—জহিরুল ইসলাম, মোতালেব, ৯ বছর বয়সী শিশু সোলায়মান এবং ১৩ বছরের কিশোর রাব্বি। গতকাল রোববার রাত ১২টার দিকে জহিরুল ইসলাম, আড়াইটার দিকে মোতালেব, সোমবার সকাল সাড়ে ৬টার দিকে শিশু সোলায়মান এবং সকাল পৌনে ৭টার দিকে কিশোর রাব্বি মারা যায়।
মৃতদের মধ্যে জহিরুল ইসলাম সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর থানার ভেড়াখোলা গ্রামের আয়নাল ফকিরের ছেলে। মোতালেব টাঙ্গাইলের মধুপুর উপজেলার ইদিলপুর গ্রামের মৃত মোহাম্মদ আলীর ছেলে। শিশু সোলায়মান ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া থানার ভালোকজান গ্রামের শফিকুল ইসলামের ছেলে। শিশুর রাব্বি সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর থানার তারতিয়া গ্রামের মো. শাহ আলমের ছেলে।
ডা. তরিকুল ইসলাম বলেন, ‘৬৫ শতাংশ বার্ন নিয়ে জহিরুল ইসলাম, ৯৫ শতাংশ বার্ন নিয়ে মোতালেব, ৮০ শতাংশ বার্ন নিয়ে শিশু সোলায়মান এবং ৯০ শতাংশ দগ্ধ অবস্থায় রাব্বি হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে মারা গেছেন।’
গত বুধবার (১৩ মার্চ) সন্ধ্যায় কালিয়াকৈর উপজেলার তেলিচালা এলাকায় গ্যাস সিলিন্ডার লিকেজের আগুন থেকে দগ্ধ হয়ে নারী-শিশুসহ ৩৪ জন হাসপাতালে ভর্তি হন।
এলাকাবাসী ও পুলিশ জানায়, তেলিরচালা টপস্টার কারখানার পাশে শফিকুল ইসলাম নামে এক ব্যবসায়ী শ্রমিক কলোনি তৈরি করে ভাড়া দিয়েছেন। তার বাড়িতে থাকা সিলিন্ডারের গ্যাস শেষ হয়ে গেলে পাশের দোকান থেকে তিনি নতুন গ্যাস সিলিন্ডার কিনে আনেন। বাড়িতে সেটি লাগানোর সময় সিলিন্ডারের চাবি খুলে গিয়ে গ্যাস বের হতে থাকে। তখন আতঙ্কে সিলিন্ডার ছুড়ে মারে। সেটি ওই স্থানে একটি মাটির চুলার আগুনে পড়ে। সেখান থেকে গ্যাস সিলিন্ডারে আগুন লেগে যায়। এ সময়ে বিস্ফোরণে আশপাশে থাকা শিশু, নারীসহ ৩৪ জন দগ্ধ হন। পরে দগ্ধদের উদ্ধার করে কোনাবাড়ী এলাকার কয়েকটি হাসপাতালে নিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। এরপর তাদের ঢাকায় শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটে পাঠানো হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল মারা যান নার্গিস আক্তার। এ ছাড়া একইদিন মারা যান আরিফুল ইসলাম ও মইদুল।
গত শুক্রবার (১৫ মার্চ) সকালে সোলাইমান মোল্লা নামে একজনের মৃত্যু হয়। শনিবার সন্ধ্যায় তায়েবা নামে এক শিশু ও ভোরে মনসুর নামে আরও একজন মারা যায়। সবাই শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট চিকিৎসাধীন ছিলেন।